সেনা হেফাজতে পাকিস্তানের সাবেক গোয়েন্দাপ্রধান
কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১২ আগস্ট ২০২৪, ১১:১৪ পিএম
পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের সাবেক প্রধান ফয়েজ হামিদ।
পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের সাবেক প্রধান ফয়েজ হামিদকে সামরিক হেফাজতে নিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী। তার বিরুদ্ধে কোর্ট মার্শাল প্রক্রিয়া শুরু করেছে সেনাবাহিনী। সোমবার (১২ আগস্ট) দেশটির সেনাবাহিনীর মিডিয়া শাখা এ তথ্য জানিয়েছে।
গত বছর প্রকাশিত সুপ্রিম কোর্টের নথি অনুসারে, তার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার এবং একটি ডেভেলপার কম্পানিতে অভিযান চালানোর অভিযোগ আনা হয়েছিল। আদালত কম্পানিটিকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ জানানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন।
সেনাবাহিনীর মিডিয়া উইং এক বিবৃতিতে বলেছে, পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্টের আদেশ মেনে পাকিস্তান সেনাবাহিনী একটি বিশদ তদন্ত পরিচালনা করেছে। ফলস্বরূপ লেফটেন্যান্ট জেনারেল ফয়েজ হামিদের (অব.) বিরুদ্ধে যথাযথ শৃঙ্খলাভঙ্গমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, কোর্ট মার্শালের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে এবং হামিদকে সেনা হেফাজতে নেয়া হয়েছে। তার অবসর গ্রহণের পর থেকে পাকিস্তান সেনা আইন লঙ্ঘনের একাধিক ঘটনাও প্রমাণিত হয়েছে।
আরো পড়ুন : ইমরান খানের মুক্তির দাবিতে পাকিস্তান সরকারকে আল্টিমেটাম শিক্ষার্থীদের
পাকিস্তানে উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তারের ঘটনা অস্বাভাবিক। আইএসআই প্রধান সাধারণত পাকিস্তানে সেনাবাহিনীর প্রধানের পর দ্বিতীয় সর্বাধিক শক্তিশালী সামরিক কর্মকর্তা হিসেবে বিবেচিত হন।
এছাড়া দেশটিতে স্বাধীনতার পর ৭৭ বছরের মধ্যে ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সামরিক বাহিনী শাসন করেছে এবং এখনো তাদের প্রভাব ধরে রেখেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, সামরিক বাহিনী পাকিস্তানের সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান এবং এটি প্রতিটি বেসামরিক সরকারের উত্থান ও পতনের পেছনে রয়েছে। ইমরান খানের একজন সক্রিয় সমর্থক ছিলেন হামিদ। ইমরান শীর্ষ সামরিক নেতৃত্বের কিছু অংশের কাছ থেকে আস্থা হারানোর পর অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত হন।
২০১৯ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত আইএসআইয়ের মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন ফয়েজ হামিদ। ২০২১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য পশ্চিমা বাহিনীর আফগানিস্তান থেকে প্রস্থানের পর দেশটির নিয়ন্ত্রণ নেয় তালেবান। দেশটির সশস্ত্র গোষ্ঠীটি আফগানিস্তানের দখল নেয়ার পরপরই কাবুলের একটি হোটেলের লবিতে চা পান করার সময় বিশ্বজুড়ে আলোচনা হয় আইএসআইয়ের সাবেক এই প্রধানকে নিয়ে।
২০০১ সাল থেকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা বাহিনী আফগানিস্তানে অবস্থানকালীন পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই তালেবানকে সহায়তা করছে বলে অভিযোগ করে আসছিল ওয়াশিংটন। পাকিস্তানে সাধারণত সেনাপ্রধানের পর দ্বিতীয় শক্তিশালী সামরিক কর্মকর্তা হিসেবে বিবেচনা করা হয় আইএসআই প্রধানকে।
ওই সময় হামিদকে দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ঘনিষ্ঠ হিসেবেও বিবেচনা করা হতো। ইমরান খান প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন হামিদকে আইএসআইয়ের প্রধান হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন। যদিও ২০২২ সালে অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত হওয়া ইমরান খান দেশটির সামরিক বাহিনীকে তার ক্ষমতাচ্যুতির জন্য দায়ী করেন। তবে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী ইমরান খানের এই অভিযোগ অস্বীকার করে।