×

পুরনো খবর

‘জাতীয় দুর্যোগ’ ঘোষণার দাবি বামজোটের

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৩ এপ্রিল ২০২০, ০৫:২৫ পিএম

করোনাভাইরাস সংক্রমণ মোকাবিলায় ‘সমন্বিত উদ্যোগ’ এবং ‘জাতীয় দুযোর্গ’ ঘোষণা দাবি জানিয়েছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। সোমবার (১৩ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর সেগুন বাগিচার রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয় ভবনে অনুষ্ঠিত জোটের উদ্যোগে ‘সর্বদলীয় পরামর্শ সভা’ থেকে এই দাবি উত্থাপিত হয়। সর্বদলীয় এই পরামর্শক সভায় বিএনপি, সিপিবি, গণফোরাম, জেএসডি, নাগরিক ঐক্যসহ বামজোটসহ বিভিন্ন দলের শীর্ষ নেতারা স্কাইপের মাধ্যমে এই পরামর্শ সভায় অংশগ্রহণ করেন। এদের মধ্যে গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, জেএসডির সভাপতি আসম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বাসদের খালেকুজ্জামান, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের প্রধান টিপু বিশ্বাস প্রমুখ নেতা বক্তব্য রাখেন। সভা সঞ্চালনা করেছেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক বাসদ নেতা বজলুর রশীদ ফিরোজ, তার সঙ্গে ছিলেন, সিপিবি নেতা কাফি রতন, রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাসদ নেতা রাজেকুজ্জামান রতন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা আকবর খান প্রমুখ। সভার সূচনা বক্তব্যে বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক বজলুর রশীদ ফিরোজ করোনাভাইরাস সংক্রামণকে ‘জাতীয় দুযোর্গ’ ঘোষণা করে তা মোকাবিলায় ‘সমন্বিত জাতীয় উদ্যোগ’ গ্রহণের দাবি জানান। তিনি বলেন, আমরা শুরু থেকেই সব রাজনৈতিক দল, ছাত্র-যুবকসহ সামাজিক শক্তি, সাংস্কৃতিক সংগঠন, চিকিৎসক, বিজ্ঞানী, বিশেষজ্ঞদের ঐক্যবদ্ধ করে সমন্বিত উদ্যোগ নেবার জন্য বলে আসছি। সবার আকাঙ্খার অংশ হিসেবেই সমন্বিত উদ্যোগের লক্ষ্যে আজকের এই সভা। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা আজকে এখানে আমাদের সঙ্গে স্কাইপে যুক্ত হয়েছেন। গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেন, আপনাদের বক্তব্য আমি সমর্থন করি। জাতীয় চ্যালেঞ্জ হিসেবে আমাদের এই করোনাভাইরাস সংক্রামণ মোকাবিলা করতে হবে। এককভাবে এটা সম্ভব না। সম্মিলিতভাবে করতে হলে মতবিনিয়ম করা, ঐক্যমত গঠন করা এবং সারা জাতিকে সম্পৃক্ত করা প্রয়োজন। এককভাবে কোনও দল বা কোনও সংগঠন পারবে না। আমাদের সবাইকে সম্মিলিতভাবে সব শক্তি নিয়ে কাজ করতে হবে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রামণের ব্যাপারে অত্যন্ত সজাগ থেকে সচেতনভাবে কাজ করছি। ভেতরের সমস্যাগুলো তুলে ধরেছি। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে সরকার সেগুলোকে কখনও গুরুত্ব দেয়নি। আজকে যে ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে এটা একেবারেই খুবই অপ্রতুল। আমরা জেনেছি যে, ৪০ হাজার লোকের মধ্যে মাত্র ৩০০ লোকের মধ্যে দেন এবং সেটাও দলীয়করণ করা হয়েছে পুরোপুরিভাবে। এগুলো থেকে ঊধের্ব উঠতে না পারলে এই করোনাভাইরাস মোকাবিলা কোনোভাবে সম্ভব না। সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, এই মহাদুর্যোগ একার পক্ষে নয়, ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস দরকার। এটা করতে হবে। আমি এখনও আহ্বান জানাবো, সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করার। সরকারি যন্ত্র ও রাষ্ট্রীয় যন্ত্রসহ সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে নিয়ে কাজ করার। একাত্তরে আমরা যেভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়েছি, করোনাভাইরাসের এই ক্রান্তিকাল মোকাবিলায়ও আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। জেএসডির সভাপতি আসম আবদুর রব বলেন, করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে জাতীয় দুযোর্গ কমিটি গঠন করতে হবে। সবাইকে নিয়ে, সব শ্রেণির মানুষকে নিয়ে, ১৬ কোটি মানুষকে নিয়ে, সব সামাজিক শক্তিসহ সব পেশার মানুষকে নিয়ে এই কমিটি করতে হবে। সরকারের একার পক্ষে এই সংকট মোকাবিলা করা সম্ভব হবে বলে আমি মনে করি না। সভায় গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, ২০১২ সালের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন অনুযায়ী এবং ২০১৮ এর জনস্বাস্থ্য বিষয়ক পরিস্থিতিতে জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করতে হবে। চিকিৎসা, সব শ্রমজীবী ও শ্রমিকের জন্য খাদ্য ও নগৎ অর্থ দিতে হবে। আসন্ন দুর্ভিক্ষ বা খাদ্য সংকট মোকাবিলার জন্য কৃষি খাতে সরাসরি ভর্তুকি দিয়ে আশু দুর্যোগকালীন বাজেট ঘোষণা করতে হবে। বামজোটের সর্বদলীয় সভায় স্কাইপিতে আরও যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন গণফোরামের অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল হাকিম, বাম ঐক্যজোটের আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন আহমেদ নাসু, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন নান্নু, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির মোশরেফা মিশু, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক হামিদুল হক, ওয়ার্কার্স পার্টির (মাকর্সবাদী) সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ, ন্যাপের ভারপ্রাপ্ত সভাপাতি এম এ সবুর প্রমুখ।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App