×

চিত্র বিচিত্র

পিএইচডি করে দুধ বিক্রি, দৈনিক আয় ১৭ লাখ টাকা!

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫ মে ২০২৩, ০৫:০২ পিএম

পিএইচডি করে দুধ বিক্রি, দৈনিক আয় ১৭ লাখ টাকা!

ছবি: সংগৃহীত

আমেরিকার বহুজাতিক সংস্থা ইন্টেলের মোটা বেতনের চাকরি ছেড়ে দেশে ফিরে শুরু করেন ব্যবসা। বেশ কয়েকটি ব্যবসা শুরু করলেও লাভের মুখ দেখেননি কিশোর ইন্দুকুরি। শেষমেশ শুরু করেন দুধ বিক্রি করা। এক দশকের বেশি আগে শুরু করা ওই ব্যবসা থেকেই এখন তার দৈনিক আয় প্রায় ১৭ লাখ টাকা।

কিশোরের জন্ম হায়দরাবাদের এক মধ্যবিত্ত পরিবারে। বাবা বেসরকারি সংস্থার ইঞ্জিনিয়ার। হায়দরাবাদে বেড়ে ওঠা কিশোর খড়্গপুর আইআইটি থেকে রসায়নে ডিগ্রি লাভ করেন। এর পর উচ্চশিক্ষার জন্য আমেরিকা পাড়ি দেন। যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেট্স ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি) থেকে স্নাতকোত্তরের পড়াশোনার পর সেখান থেকেই পিএইচডি করেন কিশোর। রয়েছে আইআইটির শিক্ষাও। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।

এমআইটিতে গবেষণার পর অ্যারিজোনায় ইন্টেল করপোরেশনে ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে যোগ দিয়েছিলেন কিশোর। অ্যারিজোনার শ্যান্ডলার শহরে একটি বাড়িও কিনে ফেলেন। বেশ সুখের দিন কাটছিল। একদিন হঠাৎই তিনি চাকরি ছেড়ে দেন। যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফিরে নিজের ব্যবসা শুরু করেছিলেন কিশোর। বিদেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনার জন্য যেসব পরীক্ষা দিতে হয়, এ দেশের পড়ুয়াদের, তার প্রশিক্ষণ শুরু করেন তিনি। তবে তাতে বিশেষ সুবিধা করতে পারেননি।

কোচিং সেন্টারের ব্যবসায় মার খেয়ে সবজি চাষে মন দেন কিশোর। সবজি বিক্রির সংস্থাও খুলেছিলেন। এসব করতে গিয়ে তত দিনে চাকরি থেকে সঞ্চয়ের এক কোটি টাকা খরচ হয়ে গেছে। ব্যবসায় মার খেলেও হতদ্যোম হননি কিশোর। ২০১২ সালে একসঙ্গে ২০টি গরু কিনে ডেইরির ব্যবসা শুরু করেন। তখন লিটারপ্রতি ১৫ টাকায় দুধ বিক্রি করত তার সংস্থা। তবে ১ লিটার দুধের দাম ১৫ টাকা রাখলেও তা তৈরি করার খরচ ছিল ৩০ টাকা। তবে গোড়ায় লোকসানের মুখ দেখলেও ব্যবসা চালু করতে প্রায় সব কিছুই করেছেন কিশোর।

সংবাদমাধ্যমের দাবি, সংস্থার যাত্রা শুরুর সময় নিজের হাতে যাবতীয় খুঁটিনাটি দেখতেন কিশোরই। তা সে গরুর দুধ দোয়ানো হোক বা দুধের ডেলিভারি। নিজের সংস্থার বাজার ধরতে গোড়ায় মার্কেটিং দল ছিল না কিশোরের। ফলে নিজেই শুরু করেছেন বিপণন। ক্রেতাদের বলতেন, তার সংস্থার দুধে জল মেশানো নেই। নেই ক্ষতিকারক হরমোনের উপস্থিতি। এসব পরিশ্রমের কারণে একসময় হায়দরাবাদের ঘরে ঘরে তার সংস্থার দুধ পৌঁছে গেছিলো। খাঁটি দুধের স্বাদ পেয়ে ধীরে ধীরে শহরের সবচেয়ে বড় বেসরকারি দুধ সরবরাহকারী সংস্থায় পরিণত হয় কিশোরের সংস্থা। ব্যবসা সম্প্রসারিত হওয়ায় এবার স্থানীয় দুধওয়ালাদের কাছ থেকে দুধ সংগ্রহ করতে শুরু করেন কিশোর। দৈনিক ক্রেতার সংখ্যাও হাজারের গণ্ডি ছাড়ানোয় একসময় কিশোরের সংস্থায় গরুর সংখ্যা বেড়ে হয়েছিল ১০০টি।

লাভের মুখ দেখতে শুরু করায় কিশোরের সংস্থায় কর্মী সংখ্যাও বৃদ্ধি পায়। ১ দশমিক ৩ কোটির বেশি টাকা ঋণ নিয়ে শাহবাদ এলাকায় একটি বিশাল ফার্ম কিনে ফেলেন কিশোর। তাতে তার সঞ্চয়ের পুরোটাই ঢেলেছিলেন।

দাবি করা হচ্ছে, ২০২০-২১ অর্থবছরে কিশোরের আয় ছিল ৪৪ কোটি টাকা। পরের বছর অর্থাৎ ২০২১-২২ সালে তা বেড়ে হয় ৬৪ দশমিক ৫ কোটি টাকা। আজকাল কিশোরের দৈনিক আয় ১৭ লাখ টাকা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App