×

চিত্র বিচিত্র

প্রতিশোধ নিতে ২৫০ কুকুরকে হত্যা করল বানরের দল!

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২০ ডিসেম্বর ২০২১, ০৬:১৬ পিএম

প্রতিশোধ নিতে ২৫০ কুকুরকে হত্যা করল বানরের দল!

গত এক মাসে এভাবে প্রায় আড়াইশো কুকুর নৃশংস ভাবে খুন হয়েছে বাঁদরদের হাতে

প্রতিশোধ নেওয়ার কী বিচিত্র পদ্ধতি! কী নৃশংস দৃশ্য! বাঁদরের দল একটা একটা করে কুকুরকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। কখনও গাছের উপর থেকে, কখনও কোনও বাড়ির ছাদ থেকে সেই কুকুরগুলোকে ঠেলে ফেলে দিচ্ছে বাঁদররা। তাদরে মধ্যে অনেক কুকুর শাবকও রয়েছে। যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে মৃত্যু কোলে ঢলে পড়ছে কুকুরগুলো। গত এক মাসে এভাবে প্রায় আড়াইশো কুকুর নৃশংস ভাবে খুন হয়েছে বাঁদরদের হাতে। অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, গ্রামে আর কুকুরের দেখা মিলছে না। কুকুর দেখতে না পেয়ে এখন বাঁদরদের টার্গেট শিশুরা। আতঙ্কে দিন কাটছে মহারাষ্ট্রের বীড় জেলার মাজলগাওঁ গ্রামের বাসিন্দাদের। ঘুম ছুটেছে বাচ্চাদের বাবা-মায়ের। কখন কার বাড়িতে ঢুকে বাচ্চা নিয়ে চলে যাবে বাঁদররা, সেই ভয়ে সিঁটিয়ে রয়েছেন স্থানীয়রা। প্রশাসন ও বন অধিদপ্তর চিন্তিত বাঁদরদের এই ভয়ঙ্কর প্রতিশোধ স্পৃহা দেখে। খবর কলকাতা টিভি অনলাইনের।

স্থানীয় সূত্রের খবর, মাস দুই আগে ওই গ্রামে একটি বাঁদরছানা একদল কুকুরের পাল্লায় পড়ে। বাঁদর ছানাটিকে তিতিবিরক্ত করে তোলে কুকুরেরা। আঁচড়ে কামড়ে তারা ক্ষত বিক্ষত করে তোলে ওই বাচ্চা বাঁদরটিকে। পরে সে মারা যায়। স্থানীয়দের দাবি, তারই প্রতিশোধ নিতে বাঁদরদের এই ভয়ঙ্কর হামলা। গত একমাস ধরে গ্রামের বিভিন্ন মহল্লায় হানা দিচ্ছে বাঁদররা। কুকুর দেখতে পেলেই কখনও কোলে তুলে, কখনও টানতে টানতে তাদের গাছের মগডালে তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কখনও আবার কুকুরদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে কোনও বাড়ির ছাদে। তারপর সেখান থেকে ফেলে দেওয়া হচ্ছে কুকুরগুলোকে। গ্রামের বাসিন্দাদের অভিজ্ঞতা, কুকুরদের ঠেলে ফেলে দেওয়ার পর বাঁদরদের উল্লাসে ফেটে পড়তেও দেখা গিয়েছে। এভাবেই মাজলগাওঁ গ্রামের প্রায় আড়াইশো কুকুর খুন হয়েছে বাঁদরদের তাণ্ডবে।

গ্রামে এখন আর কুকুরের দেখা মিলছে না। যে দু’চারটে কুকুর ছিল, তারা বাঁদরের ভয়ে কোথায় পালিয়েছে, কেউ জানে না। কুকুর নেই তো কী হয়েছে? কুকুরের বদলে এখন বাঁদরদের আক্রমণের নিশানা বাড়ির বাচ্চারা। গ্রামবাসীরা জানান, অনেক বাড়িতেই সটান ঢুকে পড়ে বাঁদররা চড় থাপ্পড় কষাচ্ছে বাচ্চাদের গালে। দু-একটি শিশুকে টেনে নিয়ে যাওয়ারও চেষ্টা করে বাঁদররা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পারেনি। স্কুলে যাওয়ার পথেও শিশুদের উপর হামলা করছে তারা। অনেক অভিভাবক শিশুদের স্কুলে পাঠাতেও ভয় পাচ্ছেন। মাজলগাওঁয়ের বাসিন্দা সীতারাম নাইবাল জানান, এক রাতে তার বাড়ির পোষ্য কুকুরছানাটির চিৎকার শুনে সকলে জেগে ওঠেন। কাছে গিয়ে দেখা যায়, একটি বাঁদর কুকুরছানাটিকে টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। বাধা দিতে গিয়ে বাঁদরের হামলার শিকার হন সীতারাম। হাসপাতালে তার চিকিৎসা করতে হয়।

গত সেপ্টেম্বর মাসে বাঁদরের প্রতিশোধ নেওয়ার একই ধরনের ঘটনা ঘটে কর্ণাটকের চিকমাগালুর জেলার কট্টিগেহারার একটি স্কুলে। কোনও এক কারণে ওই এলাকায় বাঁদরটিকে সম্ভবত হেনস্থার শিকার হতে হয়। প্রায় ২২ কিলোমিটার পথ উজিয়ে বাঁদরটি দু’দফায় হানা দেয় ওই স্কুলে। একবার সে এসেছিল হেঁটে। আর একবার একটি চলন্ত ট্রাকে উঠে পড়ে বাঁদরটি স্কুলের কাছেই নেমে পড়ে। স্থানীয়রা বন অধিদপ্তরের সহযোগিতায় প্রথমবার বাঁদরটিকে ২২ কিলোমিটার দূরে বালুর জঙ্গলে ছেড়ে আসেন। সে ওই জঙ্গলথেকেই চলে এসেছিল গ্রামে। দ্বিতীয়বার বন অধিদপ্তর তাকে ধরে বালুরেই আরও গভীর জঙ্গলে ছেড়ে দেয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App