করোনা মহামারীর মধ্যে হেফাজত নেতাদের গ্রেপ্তার না করতে বিএনপি মহাসচিবের দাবির জবাবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ তাকে প্রশ্ন রেখে বলেছেন, মহামারীর মধ্যে যারা দুষ্কর্ম করে, তাদের কি গ্রেপ্তার করা যাবে না? এই করোনার মধ্যে একটি উগ্রবাদী সন্ত্রাসী গোষ্ঠী দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টির অপচেষ্টা চালিয়েছিল। অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য, তাদের পক্ষে বিবৃতি দিচ্ছেন বিএনপি মহাসচিব। যারা নিরীহ মানুষের ঘরবাড়ি, সহায়-সম্পত্তি, যানবাহন জ্বালিয়ে দেয়, ভূমি অফিসে আগুন দিয়ে সাধারণ মানুষের জমির দলিলপত্র পোড়ায়, ফায়ার-রেল-পুলিশ স্টেশনে হামলা করে, ঐতিহ্য-পুরাকীর্তি বিনষ্ট করে, অন্য ধর্মের উপাসনালয়ে আক্রমণ করে, তাদের কি গ্রেপ্তার করা যাবে না! তাদের বিরুদ্ধে কি দেশের ফৌজদারি আইন অকার্যকর করে দিতে হবে?

সোমবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটির পক্ষ থেকে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সদস্য ও বিভিন্ন গণমাধ্যম সংস্থার প্রতিনিধিদের মাঝে সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপুর সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, বিএফইউজের সাবেক সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল প্রমুখ। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন ডিইউজের সহসভাপতি এম এ কুদ্দুস, সাংগঠনিক সম্পাদক এ. জিহাদুর রহমান জিহাদ, প্রচার সম্পাদক আছাদুজ্জামান প্রমূখ। এ সময় ৭০টি গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের হাতে করোনা সুরক্ষা সামগ্রী তুলে দেওয়া হয়।

[caption id="attachment_280763" align="aligncenter" width="665"] সোমবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটির পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের করোনা সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত। ছবি: ভোরের কাগজ[/caption]

ড. হাছান বলেন, করোনায় অন্য কোনো রাজনৈতিক দল নয়, আওয়ামী লীগই একমাত্র পুরো সময়জুড়ে জনগণের পাশে আছে, সেটা গণমাধ্যমে চোখ রাখলেই দেখা যায়। আমাদের কর্মীরা কৃষকের ধান কেটে বাড়ি পৌঁছে দিচ্ছে।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, এই সময় ব্যবসায় মন্দার অজুহাতে গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানে সাংবাদিকদের চাকরিচ্যুতি অত্যন্ত দুঃখজনক, অনভিপ্রেত ও অগ্রহণযোগ্য। সম্প্রতি যেখানে চাকরিচ্যুতি হয়েছে, সেগুলো নিয়ে আলাপ-আলোচনা চলছে। সাংবাদিক ইউনিয়নগুলো চেষ্টা করছে। আশা করবো, যাদেরকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে কর্তৃপক্ষ তাদের পুণর্বহাল করবে।

শ্যামল দত্ত বলেন, বর্তমানে আমাদের গণমাধ্যম শিল্পে অনেক সমস্যা বিরাজমান রয়েছে। সেগুলো দূর করতে হবে। সংবাদপত্র শিল্পের স্বার্থের বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের অনেক বিল বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে বকেয়া পড়ে রয়েছে। করোনার এই মহামারীকালে সেসব বিল ছাড় দেওয়া না হলে, আমাদেরকে অনেক সমস্যায় পড়তে হবে। তাই এসব বিল দ্রুত ছাড়ের জন্য আমি তথ্যমন্ত্রীর বিশেষ সহযোগিতা কামনা করছি।

কুদ্দুস আফ্রাদ বলেন, করোনা অতিমারীতে মারাত্মক ঝুঁকির মুখেও দায়িত্ব পালন করা সাংবাদিকদের কল্যাণে আমরা রাষ্ট্রকে পাশে চাই। গণমাধ্যম মালিকদের ছাটাই-নির্যাতন বন্ধের দাবি জানাই।

সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু বলেন, যেসব গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান এখনো সাংবাদিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধ করেননি ঈদের আগেই আমরা সেসব প্রতিষ্ঠানের মালিককে বেতন ও বোনাস পরিশোধের দাবি জানাচ্ছি। এছাড়া গণমাধ্যমে ছাঁটাইও বন্ধ করতে হবে।