×

জাতীয়

স্বরণসভায় বক্তারা: সৈয়দ আবুল মকসুদ ছিলেন ব্যতিক্রমী ব্যক্তিত্ব

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৫ এপ্রিল ২০২১, ০৯:০৮ পিএম

প্রয়াত লেখক গবেষক ও কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ একজন ব্যতক্রমী প্রতিবাদী ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তিনি প্রতিবাদ করতেন সাম্রাজ্যবাদ, আধিপত্যবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে।  তার মতাদর্শের সাথে মিল না হওয়ায় তিনি সংবাদসংস্থা-বাসস থেকে পদত্যাগ করেছিলেন, এ রকম প্রতিবাদী ব্যক্তিত্ব খুবই কম দেখা যায়। রবিবার (২৫ এপ্রিল) সুজন-এর উদ্যোগে প্রয়াত লেখক ও গবেষক সৈয়দ আবুল মকসুদ স্মরণে অনলাইনে নাগরিক শোকসভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। এ সময় তারা এই ব্যতিক্রমী ব্যক্তিত্বের আদর্শকে ধারণ করে তরুন সমাজকে এগিয়ে  যাবার আহ্বান জানান।

সুজন-এর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ছিলেন সৈয়দ আবুল মকসুদ।

শোক সভার সভাপতিত্ব করেন সাবেক বিচারপতি ও সুজন কেন্দ্রী নির্বাহী কমিটির সদস্যবিচারপতি এম এ মতিন। শোক সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন সৈয়দ আবুল মকসুদের সন্তান সৈয়দ নাসিফ মকসুদ এবং জামাতা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হাফিজুর রহমানকার্জন, সাবেক মন্ত্রী পরিষদ সচিব জনাব আলী ইমাম মজুমদার, আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক, ড. শাহনাজ হুদা,  আইইডিসিআর-এর উপদেষ্টা  ড. মুশতাক হোসেন, বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ  মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ  শেখ শহীদুল ইসলাম,সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি)-এর সম্মানিত ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য ,বিশিষ্ট  সাংবাদিক  অজয়   দাশগুপ্ত,  বিশিষ্ট  সাংবাদিক  সোহরাব   হাসান, বিগ্রেডিয়ার (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন, সাংবাদিক আবু সাঈদ খান, সুজন কোষাধ্যক্ষ সৈয়দ   আবু   নাসের   বখতিয়ার   আহমেদ,  সুজন   কেন্দ্রীয়   সমন্বয়কারী  দিলীপ   কুমার সরকার প্রমুখ। শোক সভাটি সঞ্চালনা করেন সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মুজমদার। বিচারপতি  এম এ মতিন  বলেন, মতের সাথে মিল না হওয়ায় সৈয়দ আবুল মকসুদ বাংলাদেশ সংবাদসংস্থা-বাসস থেকে পদত্যাগ করেছিলেন, খুব কম লোকই এটা করতে পারেন। তিনি সবসময় সত্য কথা বলেছেন।

সুভাষ সিংহ রায় বলেন, আবুল মকসুদ প্রকৃত অর্থেই একজন ত্যাগী মানুষ ছিলেন। আমরা অনেকে মুখে যা বলি ব্যক্তি জীবনে তা পালন করি না, কিন্তু আবুল মকসুদ যেটা বলতেন, লিখতেন তা বিশ্বাস করতেন এবং পালন করতেন।

সৈয়দ নাসিফ মকসুদ  বলেন, বাবা যে  নীতিগুলো  বিশ্বাস  এবং  মেনে  চলতেন  তার একটি  হচ্ছে সাম্রাজ্যবাদ বিরোধিতা। তিনি আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে সরব ছিলেন। তিনি সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে মানুষকে সচেতন করার কাজ করেছেন আজীবন।

বদিউল   আলম  মজুমদার বলেন,   তিনি  ছিলেন  সাধারণ   মানুষের বুদ্ধিজীবী। কৌতুকের   সাথে   তিনি অনেক গুরুত্বপূর্ণ কথা বলতেন।

আলী ইমাম মজুমদার বলেন, তিনি স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাস করতেন। তাঁর গবেষণা ছিল বহুমাত্রিক। আমরা অনেকেই একচোখা হয়ে গেছি, মকসুদ ভাই এর ব্যতিক্রম ছিলেন।

শাহদীন মালিক বলেন, এরকম মানুষ সমাজে খুবই কম। হারিয়ে যাওয়ায় মানুষ একজন, কিন্তু ক্ষতি অনেক বড় হয়ে গেল। তার রচনাবলি একসাথে করে বের করলে সমাজের অনেক উপকৃত হবে বলে আমি মনে করি।

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, আবুল মকসুদ  ছিলেন একজন পাবলিক ইন্টেলেকচুয়াল। সেক্ষেত্রে আবুল মকসুদ ভাইয়ের জীবনকে আমাদের আদর্শ হিসেবে দেখতে হবে।

শেখ শহিদুল ইসলাম বলেন, আবুল মকসুদ তাঁর দায়িত্ব কেবল বক্তৃতা বিবৃতি দিয়ে শেষ না করে যতটুকু পারতেন অংশগ্রহণ করতেন।

আবু সাঈদ খান বলেন, সাংবিদকতা তাঁর পেশা হলেও নেশা ছিল গবেষণা। আমার মতে তাঁর সবেচেয়ে বড় কাজ হল ভাসানীকে নিয়ে।

বিগ্রেডিয়ার( অব) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, রাজনৈতিক দলে ৩৩ শতাংশ নারী রাখা এবং রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন এই দুই বিষয়ে তিনি আমাকে বারবার তাগাদা দিতেন।

সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, তিনি একজন সংগ্রামী মানুষ ছিলেন, যেটা সাধারণত খুঁজে পাওয়া দুস্কর।

মোশতাক হোসেন বলেন, সৈয়দ আবুল মকসুদ স্বাস্থ্য বিষয়েও একজন এক্টিভিস্ট হিসেবে কাজ করেছেন। ডেঙগু বা চিকনগুনিয়ার সময় নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে অংশগ্রহণ করার জন্য তিনি আইসিডিডিআর আসতেন, নিজের মতামত দিতেন।

সিপিবির রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ফুলাবড়ির রক্তাক্ত আন্দোনের সময় আবুল মকসুদ মঞ্চে বসে ছিলেন, গুলির মুখে থেকেও আন্দোলন থেকে কখনো পিছপা হননি।

সোহরাব হাসান বলেন, তিনি পুরো বাংলাদেশকে ধারণ করতে চেয়েছিলেন। যেখানেই মানুষ নিপীড়িত হয়েছে আবুল মকসুদ সেখানেই ছুটে গেছেন। সঞ্জীব দ্রং বলেন, সৈয়দ আবুল মকসুদের সঙ্গে আধিবাসীদের সম্পর্ক ছিল অনেক গভীর। এছাড়া আধবাসীদের বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামেও তিনি জড়িত ছিলেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App