মাদক নিরাময় কেন্দ্রে যুবকের মৃত্যু, পরিবারের অভিযোগ হত্যা
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২ মার্চ ২০২১, ০৭:৩৯ পিএম
ইয়াসিন মিয়া। ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর মালিবাগ রেলগেট এলাকায় মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রে ইয়াসিন মিয়া (১৯) নামে এক যুবকের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে।
মঙ্গলবার (২ মার্চ) বিকেলে ময়না তদন্তের জন্য মৃতদেহটি ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠিয়েছে হাতিরঝিল থানা পুলিশ।
বরিশাল বাকেরগঞ্জ উপজেলার বড়পাশা গ্রামের মাসুম মিয়ার ছেলে সে। পরিবারের সঙ্গে মেরুল বাড্ডা ডিআইটি প্রজেক্টে থাকতো। ১ ভাই ২ বোনের মধ্যে সবার ছোট সে।
হাতিরঝিল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মহিউদ্দিন ফারুকি জানান, ইয়াসিনের পরিবারের লোকজন ২২ জানুয়ারি তাকে মালিবাগের হলি লাইফ মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রে ভর্তি করায়। এরপর থেকে সেখানেই ছিলো ইয়াসিন। আজ মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে সেখান থেকে ইয়াসিনের বাবাকে ফোন দেয় ও বলে ইয়াসিনকে খিদমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পরে তার বাবা খিদমা হাসপাতালে গিয়ে ইয়াসিনের লাশ দেখতে পায়।
পরিদর্শক (তদন্ত) আরো জানান, ইয়াসিন ট্যাবলেট সেবন করতো। এছাড়া কিছুটা মানসিক সমস্যাও ছিলো। দুপুরে নিরাময় কেন্দ্রটির বাধরুমে গিয়ে গলায় গামছা পেচিয়ে ফাঁস দেয় সে। পরে দেখতে পেরে নিরাময় কেন্দ্রটির লোকজন তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানকার চিকিৎসকরা তাকে দুপুরে মৃত ঘোষণা করেন। পরে খবর পেয়ে তার লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়। ময়না তদন্তের পর মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।
তিনি আরো জানান, বাবার কাছে কিছু চাইলে বাবা যদি না দিতো তাহলেই তোলপার শুরু করতো ইয়াসিন। এরকম জেদ ছিলো তার। এইসব কারণেই পরিবার তাকে মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্র ভর্তি করায় বলে জানতে পেরেছি।
মৃত ইয়াসিনের বাবা মাসুম মিয়া জানান, অনেক আগে একটি স্কুলে পড়ালেখা করতো ইয়াসিন। বর্তমানে কিছুই করতোনা সে। কিছুদিন আগে তাকে একটি মোটরসাইকেল কিনে দেই। এরপর সে আবার আরেকটি ৪-৫ লাখ টাকার দামি মোটরসাইকেল কিনে দিতে বলে। কিনে না দিলে আত্মহত্যা করবে বলে হুশিয়ারি করে। এই ভয়েই তাকে জানুয়ারীর ২২ তারিখ তাকে মালিবাগ রেলগেটের হলি লাইফ মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে ভর্তি করি।
তিনি জানান, তারা ইয়াসিনকে নামাজ কালাম শিক্ষা দেবে ও অভস্ত্য করবে। এজন্য মাসে ৫০ হাজার টাকা চায়। আমরা সর্বশেষ মাসে ২০ হাজার টাকা দিতে রাজি হই। এরপর মাঝে দেখাও করি তার সঙ্গে। বৃহস্পতিবার তাকে দেখতে গেলে রিহ্যাবের বড় হুজুর (রিহ্যাব প্রধান) নেই বলে ইয়াসিনের সঙ্গে দেখা করতে দেয়নি তারা। পরে ফোনে যোগাযোগ করে অনুমতি নিয়ে তারপর রিহ্যাবে যেতে বলা হয়। এরপর আজ মঙ্গলবার বেলা ১২টার পরে তারা আমাকে ফোন দেয়, বলে সেখানে যেতে। এরপর সেখানে গিয়ে সিড়ি দিয়ে ইয়াসিনকে নিচে নামাতে দেখি। তখনই আমার সন্দেহ হয় সে আর নেই। তারা জানায় ইয়াসিনের অবস্থা ভালো না, তাকে আইসিইউতে রাখতে হবে।
বাবার অভিযোগ, তারা অত্যাচার করেছে ইয়াসিনকে, বা তারা ইয়াসিনকে মেরে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রেখেছিলো।