×

জাতীয়

আজ ও আগামীর জন্য চট্টগ্রামকে প্রস্তুত করতে হবে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮ নভেম্বর ২০২০, ০৮:৫৯ পিএম

আজ ও আগামীর জন্য চট্টগ্রামকে প্রস্তুত করতে হবে

চসিক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন

আজ ও আগামীর জন্য চট্টগ্রামকে প্রস্তুত করতে হবে
সমস্যায় জর্জরিত চট্টগ্রাম নগরকে বদলে দিতে চান চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন। গত ৫ আগস্ট থেকে ৬ মাসের জন্য দায়িত্ব পাওয়ার পর সমস্যা চিহ্নিত করে অগ্রাধিকার ভিক্তিতে কাজ শুরু করেছেন তিনি। মেয়াদের অর্ধেক সময়কালে অনেক সমস্যা সমাধানের পথও খুজে পেয়েছেন তিনি। রবিবার সন্ধ্যায় ভোরের কাগজ কার্যালয়ে এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আড্ডা আলাপচারিতায় তিনি তার লক্ষ্য পরিকল্পনা ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে কথা বলেন। খোলামেলা আলাপচারিতায় তিনি বলেন, চট্টগ্রামকে আজ এবং আগামীর জন্য প্রস্তুত করতে হবে। বৃত্তের নয় চিত্তের শহরে পরিণত করতে হবে নদী-সাগরের মোহনার এই শহরকে। ১৮০ দিনের জন্য নিয়োগ পাওয়া এই প্রশাসক বলেন, দিনের হিসাব দিনে করতে হয়। কোনো কাজ পরদিনের জন্য ফেলে রাখলে তা ঝুলে যায়। চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সুজন বলেন, প্রশাসকের দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি নগর ভবনে বিশৃঙ্খলা, অনিয়ম ও দুর্নীতি দেখতে পান। পান হাজার কোটি টাকা দেনা। এরমধ্যে ঠিকাদারদের পাওনা ও অবসরে যাওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পাওনার জন্য দীর্ঘশ্বাস দেখতে পটান তিনি। স্টাফদের মাসিক বেতন-ভাতা ১৭ কেটি টাকা ও উৎসব বোনাসের টাকার ঘাটতি দেখা যায়। সমস্যা চিহ্নিত করে এরপর সবকিছুকে একটি সিষ্টেমে আনার লক্ষ্যে কাজ শুরু করা এই রাজনৈতিক নেতা বলেন, ট্যাক্স, সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব মার্কেটের দোকান ভাড়া ও ইজারা এবং ট্রেড লাইসেন্স থেকে আসা অর্থ থেকে খরচ চালানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। নগরে কাজ করা ৩০টি সংস্থার মধ্যে সমন্বয়হীনতার কারণে অনেক সমস্যা আটকে আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, নগর ভবন একটি শৃঙ্খলা মধ্যে আনতে সকাল নয়টার মধ্যে সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীর হাজিরা নিশ্চিত করতে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এরপর কেউ অফিসে গেলে তাকে অনুপস্থিত ধরা হয়। একইভাবে বিকাল পাচটার পর অফিস বন্ধ করে দেয়া হয়। প্রতি বুধবার মোটরসাইকেল নিয়ে নগরজুড়ে ঘুরে বেড়ানো এই প্রশাসক বলেন, তার সঙ্গে পরিচ্ছন্নকর্মী, স্যানিটারী, বিদ্যুৎ বিভাগের লোকসহ সেবাদানকারী সব সংস্থার সদস্যরা থাকেন। সেখানে যখন যে সমস্যা দেখা বা পাওয়া যাচ্ছে তাৎক্ষনিক তা সমাধানের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি। পশুপাখির জন্য নির্দিষ্ট অভয়ারণ্য তৈরির পাশাপাশি মানবিক শহর গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করে যাওয়া সুজন বলেন, শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগে ৫ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহন করা হয়েছে। সেনাবাহিনী এজন্য কাজ করছে দুইবছরের মধ্যে এই সমস্যা কাটিয়ে উঠা অনেকটাই সম্ভব মনে করে তিনি বলেন, চট্টগ্রামের ছোট-বড় সব খাল ও নদী দখলদারদের নিয়ন্ত্রণে। বৃষ্টি ও স্যুয়ারেজের পানি বের হওয়ার জায়গা আটকে ভবন ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান করা হয়েছে। সেসব চিহ্নিত করে উচ্ছেদ কার্যক্রম চলছে। গাইডওয়াল ও ওয়াকওয়ে নির্মাণের কাজ চলছে। এসবকিছু সম্পন্ন হলে জলাবদ্ধতা থাকবে না দাবি করে তিনি বলেন, আগ্রবাদ ও চাকতাইয়ে এর কাজ চলছে। তিনি বলেন, ফুটপাত দখলকারী হকারদের উচ্ছেদ না করে বিকাল তিনটা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত তাদেরকে একপাশে বসতে বলা হয়েছে। তারা উঠে যাওয়ার পর ফুটপাত পরিস্কার করে জনগনের চলাচলের উপযোগী করে দেয়া হয়। ওয়াসার খামখেয়ালীতে ভাল রাস্তা নষ্ট হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সিটি কর্পোশেনকে না জানিয়ে রাস্তা খুড়াখুড়ির জন্য ওয়াসা কর্মকর্তাদের সতর্ক করা হয়েছে। কয়েকজন ঠিকাদারের বিরুদ্ধে মামলাও করা হয়েছে। সুজন জানান, রিয়াজউদ্দিন বাজারে সব ব্যবসায়ীকে প্লাস্টিকের ব্যাগ দেয়া হচ্ছে ময়লা আবর্জনা ভরে রাখার জন্য। সেখানে ৪০-৪৫ কেজি ময়লা রাখা যায়। পরে সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্ন কর্মীরা তা নিয়ে যায়। পর্যায়ক্রমে পলিথিন বিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে কাজীর দেউরী বাজারে ক্রেতাদের হাতে চটের তৈরী ব্যাগ দেয়া হবে বলেও জানান তিনি। বিশিষ্টজনদের নিয়ে পরামর্শক কমিটি করে তাদের মতামতের প্রেক্ষিতে কাজ চলছে উল্লেখ করে সুজন বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের ২০-২৫ হাজার ট্রাক লরি চলাচলের কারণে রাস্তা নষ্ট হচ্ছে। কিন্তু বন্দর কর্তপক্ষ ও কাষ্টমস কর্তৃপক্ষ নগর কর্তৃপক্ষকে কিছু দিচ্ছে না। চট্টগ্রাম ইপিজেডের ৭-৮’শ কারখানার মধ্যে মাত্র ১৩টির ট্রেড লাইসেন্স রয়েছে, যা দুঃখজনক। যা থেকে বড় অঙ্কের টাকা আয় হওয়ার কথা। দখলদার উচ্ছেদ, ময়লা আবর্জনা নির্দিষ্ট স্থানে ফেলতে ডাষ্টবিন স্থাপন ও যত্রতত্র আবর্জনা ফেলার স্থান বন্ধ করতে গিয়ে অনেক সময় প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হলেও তা আমলে নিচ্ছেন না তিনি। সমস্যা উৎরে আগামীর চট্টগ্রাম দৃষ্টিনন্দন করতে তিনি সকলের সহযোগিতা চেয়েছেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App