×

জাতীয়

সাবেক ডিবিপ্রধান হারুনের বিরুদ্ধে ৩০০ কোটি টাকার সম্পদ দখলের অভিযোগ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৯ আগস্ট ২০২৪, ১১:২৪ পিএম

সাবেক ডিবিপ্রধান হারুনের বিরুদ্ধে ৩০০ কোটি টাকার সম্পদ দখলের অভিযোগ

ছবি: সংগৃহীত

‘সাবেক ডিবিপ্রধান হারুন আমাদের ৩০০ কোটি টাকার জমি দখল নিতে চেয়েছিল। তাদের উদ্দেশ্য ছিল পুরো জমি দখল নেয়া। ক্ষমতার অপব্যবহার করে আমাদের বৈধ জমি অবৈধ করার চেষ্টা করেছে। আমাদের জিম্মি করে সাদা দলিলে সাক্ষর করিয়ে নিয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) ঢাকার ওয়ারীর নিজ বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ঢাকা আইনজীবী সমিতির আজীবন সদস্য সৈয়দ আজহারুল কবির ও স্ত্রী মেহেরুন্নেসা।

সংবাদ সম্মেলনে মেহেরুন্নেসা বলেন, ডিবি হারুন নিজে আমার সাথে কথা বলেছে ডিবি অফিসে। সে আমার স্বামী সন্তানকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। আমাকে বলেছে, আপনি জমি চান না আপনার স্বামীকে চান? আপনার ছেলের সুন্দর ভবিষ্যৎ সামনে, তার ক্ষতি হোক আপনি চান?

সাবেক ডিবি প্রধান হারুন অর রশিদের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ওই আইনজীবী ও তার পুত্র ব্যারিস্টার সৈয়দ এজাজ কবিরকে মিথ্যা মামলা সাজিয়ে গ্রেপ্তার করে নিয়ে শারীরিক নির্যাতন করে বলে জানান ভুক্তভোগীরা।

ভুক্তভোগী সৈয়দ আজহারুল কবির বলেন, ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে এমন ঘটনা ঘটলেও গুম ও হয়রানির ভয়ে মুখ খোলেননি। ঢাকা আইনজীবী সমিতির আজীবন সদস্য হওয়া সত্ত্বেও কোথাও কোনো সাহায্য পাননি। 

তিনি বলেন, শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর আবারও ওই বাসভবন দখল করতে চায় তারা। গত ৭ আগস্ট ওই বাসভবনে হামলা ও ভাঙচুর করে প্রায় ২০ লাখ নগদ টাকাসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র লুট করেছে দুর্বৃত্তরা।

সৈয়দ আজহারুল কবির বলেন, আবদুল্লাহর নেতৃত্বে আল-মুসলিম গ্রুপ জমি থেকে জোরপূর্বক আমাদের বিরুদ্ধে বানোয়াট মামলা করেছে। এই শক্তিশালী জোট আমার পরিবারকে মিথ্যা মামলা, অর্থনৈতিক চাপ এবং শারীরিক ভয় দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা মূল্যের আমাদের ন্যায্য জমি দখল করতে চায়। এর আগেও ২০১১ সাল থেকে আবদুল্লাহ বিভিন্ন জেলা থেকে আজ অবধি আমার ও আমার ছেলের বিরুদ্ধে একাধিক ফৌজদারি মামলা করেছে। এরপরও সফল না হওয়ায় ডিবি হারুনের সঙ্গে হাত মেলান তিনি।

ভুক্তভোগী বলেন, বিগত সরকারের সময় আমাদের বলা হয়, আবদুল্লাহ (স্থানীয় বিএনপি নেতা), শেখ ফজলে নূর তাপস এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এসবের সঙ্গে জড়িত।২০২৩ সালের ৮ ডিসেম্বর ডিবির একাধিক কর্মকর্তা এসে আমাকে ও আমার ছেলেকে ১ লাখ টাকা চুরির মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করে। ওই সময় আমাদের ওপর প্রচণ্ড নির্যাতন করা হয়েছিল এবং আমাদের সম্পত্তি হস্তান্তর করার জন্য বিভিন্ন ধরনের হুমকি দেয়া হয়। আমাকে হুমকি দেয়া হয়েছিল, আমি তাদের কথা না শুনলে তারা আমার ছেলেকে গুম করে দেবে। 

তিনি আরো বলেন, আমার উভয় কন্যার সম্পর্কে জঘন্য কথা এবং তাদের নিখোঁজ বা আরো খারাপ করার অভিপ্রায় দিয়ে আমাকে হুমকি দেন।  তাদের নির্দেশ না শুনায় ডিবি হারুন আমার সামনে একজনকে ডেকে আমার মেয়ে, জামাই ও পুত্রবধূর বিরুদ্ধে সাইবার ক্রাইম মামলা করতে বলে। ডিবি হারুন কাগজের বাক্স নিয়ে আসে, আমি বাধ্য হয়ে স্বাক্ষর করি। আমাদের কঠোরভাবে সবকিছু সম্পর্কে চুপ থাকতে বলা হয়েছিল, নাহলে সে আমার এবং আমার পরিবারের জন্য আরো খারাপ করে দেবে।

সৈয়দ আজহারুল কবির অভিযোগ করেন, সেদিন ডিবি অফিসাররা অস্ত্রধারী এক হাজার লোক নিয়ে আসেন। ডিবি অফিসাররা বিনা কারণে আমার ১৭ জন কর্মচারীকে আটক করে ডিবি অফিসে নিয়ে চলে যায় এবং এই দুর্বৃত্তদের আমার সম্পত্তিতে ঢুকতে দেয়। সব সিসিটিভি ক্যামেরা ভেঙে ফুটেজ সম্বলিত হার্ডডিস্ক নিয়ে যায়।  তারা প্রবেশ করার পর থেকে, আমার পরিবার ৯৯৯ নম্বরে সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৩টা পর্যন্ত কল করছিল। কিন্তু পুলিশের কাছ থেকে কোনো সাহায্য পায়নি। আমাদের নিজের বাড়িতে জিম্মি করে কোনো খাবার বা পানি ছাড়াই দ্বিতীয় তলায় একটি রুমে তালাবদ্ধ করে রাখা হয়। 

তিনি বলেন, আমি আমার পরিবারকে সমর্থন করার জন্য উপস্থিত ছিলাম না। কারণ আমার বড় ছেলে এবং আমাকে মিথ্যাভাবে হেফাজতে নেয়া হয়েছিল। এই হামলার সময় আমার পরিবারের ৫ জন মহিলা সদস্য এবং বাড়িতে মাত্র ১ জন পুরুষ ছিল। পুলিশের কাছ থেকে কোনো সাহায্য না পেয়ে, আমার বড় মেয়ে ফেসবুকে লাইভে গিয়ে তাদের জীবনের ভয়ে পরিস্থিতি বর্ণনা করে। কারণ তারা আমাদের দরজা ভেঙে দিচ্ছিল। পরে অবশ্য থামে এবং পরের দিন সকাল ১০টায় পুলিশ আসে।

সরকার পতনের পরও নৃশংস হামলার অভিযোগ করে ভুক্তভোগী বলেন, গত ৭ আগস্ট বিকালে প্রায় ২০০ জন অজ্ঞাত ব্যক্তি আমাদের পারিবারিক বাসভবন সহিংসভাবে আক্রমণ করে। হামলাকারীরা আমাদের প্রধান দরজা ভেঙে, ভাংচুর করে আমাদের বাড়িতে থাকা নগদ ২০ লাখ টাকাসহ  জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে যায়। এসময় তারা হুমকি দেয়, বাড়াবাড়ি করলে কেরোসিন ও রাসায়নিক দ্রব্য ঢেলে বাড়ির সবাইকে পুড়িয়ে মেরে ফেলা হবে। 

সৈয়দ আজহারুল কবির বলেন, এই হামলার মূল উদ্দেশ্য ছিল আমার সম্পত্তি বেআইনিভাবে দখল করা। এক পর্যায়ে ঘটনার খবর পেয়ে সেনাবাহিনী এলে আক্রমণকারীরা পালিয়ে যায়। আমরা জানতে পেরেছি, এই ব্যক্তিরা আবার সংগঠিত হচ্ছে, আমাদের বাড়ি এবং পরিবারের ওপর আরও আক্রমণের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।

তিনি বলেন, আমি যখন তাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করতে যাই, আবদুল্লাহর ভাড়াটিয়ারা ৭ আগস্ট আমাদেরকে হামলাকারী বলে মিথ্যা অভিযোগ করে ফৌজদারি মামলা করে। অথচ বাস্তবে সেদিন হামলার শিকার হয়েছিল আমার বাসভবন ও পরিবার। পুলিশ মামলাটি গ্রহণ করেনি এবং আমাদের বলেছে, তারা আবদুল্লাহর কর্মচারীদের বিরুদ্ধে আমাদের কোনো মামলা গ্রহণ করবে না। ঘণ্টার পর ঘণ্টা তাদের সঙ্গে কথা বলার পর তারা মামলার খসড়া নিয়ে ফিরে যেতে বলেন। খসড়া জমা দেয়ার পরে আমাদের মামলা এখনো প্রক্রিয়া হয়নি। যখন তারা এগিয়ে গিয়ে আবদুল্লাহর মিথ্যা মামলাটি প্রক্রিয়া করেছিল।

তিনি আরো বলেন, সন্ত্রাস ও ভীতি প্রদর্শনের এই চলমান অভিযান আমাদের পরিবারকে প্রচণ্ড মানসিক ও শারীরিক চাপের মধ্যে ফেলেছে। আমরা সরকার ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সর্বোচ্চ পর্যায়কে অবিলম্বে এবং সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা আমাদের পরিবারের জন্য সুরক্ষা, আমাদের সম্পত্তির অধিকার সংরক্ষণ এবং এই জঘন্য কাজের জন্য দায়ীদের বিচার দাবি করছি।

টাইমলাইন: অন্তর্বর্তীকালীন সরকার

আরো পড়ুন

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

১৫ সেপ্টেম্বর: সারাদিন যা যা ঘটলো

১৫ সেপ্টেম্বর: সারাদিন যা যা ঘটলো

সাবেক সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর গ্রেপ্তার

সাবেক সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর গ্রেপ্তার

ভারতে পাচারের সময় ৮৫০ কেজি ইলিশ জব্দ

ভারতে পাচারের সময় ৮৫০ কেজি ইলিশ জব্দ

মেট্রোরেল মেরামতে ব্যয় কমলো যেভাবে

মেট্রোরেল মেরামতে ব্যয় কমলো যেভাবে

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App