পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতের পর যে মন্তব্য করলেন জাপানের রাষ্ট্রদূত
কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১৫ আগস্ট ২০২৪, ১০:১৩ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
ঢাকায় নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি মন্তব্য করে বলেছেন, বাংলাদেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় যেই থাকুক না কেন জাপান সবসময়ই বন্ধু হিসেবে কাজ করে গেছে। বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) সচিবালয়ে পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের পর সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
ইওয়ামা কিমিনোরি বলেন, কে সরকারে ছিল বা না ছিল সেটা বিষয় নয়। জাপান বাংলাদেশের সব সময় উন্নয়ন সহযোগী ছিল এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। জাপান সবসময়ই বন্ধু হিসেবে কাজ করে গেছে। এবং জাপান বাংলাদেশের অগ্রাধিকারের বিষয়ে কাজ করতে চায়।
এসময় সচিবালয়ে পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন ঢাকায় নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার ভি মান্টিটস্কি।
বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মাধ্যমে বাংলাদেশে ‘আরব বসন্তের’ সম্ভাবনার কথা বলেছিল মস্কো। তবে সেই অবস্থান থেকে সরে এসে আলেকজান্ডার ভি মান্টিটস্কি বলেন, আমার কাছে এ ধরনের কোনো তথ্য নেই। এছাড়াও রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প বাস্তবায়নে কিছুটা দেরি হতে পারে, তবে তা আশঙ্কাজনক কিছু নয়।
বৈঠক শেষে তিনি বলেন, রাশিয়া বাংলাদেশের বিশ্বস্ত বন্ধু। রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প বাস্তবায়নে কিছুটা দেরি হতে পারে, তবে তা আশঙ্কাজনক কিছু নয়। আমি বুঝতে পারছি, চলমান পরিস্থিতিতে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রক্রিয়া অল্প দেরি হতে পারে। তবে এটা খুব বেশি সময় বিলম্ব হবে না।
আরো পড়ুন: পররাষ্ট্র উপদেষ্টাকে টেলিগ্রাম বার্তায় যা বললেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী
রুশ রাষ্ট্রদূত আরো বলেন, গত বছর রাশিয়া বাংলাদেশের কাছে ২.২৭ মিলিয়ন গম রপ্তানি করেছিল। এ বছরের প্রথম ৬ মাসে ১.৯ মিলিয়ন গম রপ্তানি হয়েছে। এছাড়া কৃষিখাতের জন্য সরকারি ও বেসরকারিভাবে সার রপ্তানির সহযোগিতাও অব্যাহত থাকবে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর গত ডিসেম্বরে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে ‘আরব বসন্তের মতো’ পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারে বলে মন্তব্য করেছিল রাশিয়া। সম্প্রতি ছাত্র-জনতার আন্দোলন কী সেই বাংলা বসন্ত? এমন প্রশ্নের উত্তরে দেশটির রাষ্ট্রদূত বলেন, আমার কাছে এ ধরনের কোনো তথ্য নেই। আপনাদের কাছে থাকলে, সেটা আমাদের সঙ্গে শেয়ার করতে পারেন।
গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর ‘বাংলাদেশ’ বিষয়ে এক বিবৃতিতে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেছিল, বাংলাদেশে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ফলাফল যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সন্তোষজনক মনে না হলে ‘আরব বসন্তে’র মতো করে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা হতে পারে। এমন আশঙ্কার গুরুতর ভিত্তি রয়েছে যে, আগামী সপ্তাহগুলোতে পশ্চিমা শক্তিগুলোর পক্ষে বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকমের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হতে পারে।
বিবৃতিতে বাংলাদেশে চলমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সঙ্গে ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের (সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত) উসকানিমূলক কর্মকাণ্ডের সরাসরি সম্পর্কের কথা উল্লেখ করা হয়।
রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেছিলেন, বাংলাদেশের শিল্প খাতের গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলোর ওপর আঘাত আসতে পারে। সেই সঙ্গে কিছু সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় সংসদ নির্বাচনে নাগরিকদের গণতান্ত্রিক রায় প্রদানে বাধাদানের তথ্যপ্রমাণহীন অভিযোগ তুলে পদক্ষেপ নেয়া হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা থেকে বিরত হবে এমন সম্ভাবনাও কম বলে রাশিয়া মনে করছে বলে জানিয়েছিলেন মারিয়া জাখারোভা।