×

জাতীয়

স্বস্তি ফিরেছে সবজি বাজারে, কমেনি চাল-ডাল-পেঁয়াজের দাম

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯ আগস্ট ২০২৪, ০৮:৩৯ পিএম

স্বস্তি ফিরেছে সবজি বাজারে, কমেনি চাল-ডাল-পেঁয়াজের দাম

ছবি: সংগৃহীত

সাম্প্রতিক কোটা আন্দোলকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট অস্থিরতায় পণ্য সরবরাহে বিঘ্ন ঘটায় চাল-ডাল, পেঁয়াজের দাম এখনো কমেনি। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কারণে সরবরাহে কিছুটা ব্যাঘাত ঘটলেও কিছুটা স্বস্তি ফিরে এসেছে সবজির বাজারে। 

এদিকে চাঁদাবাজি বন্ধ, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস ঠেকাতে ইতোমধ্যে ‘বাজার মনিটরিং’ করেছেন শিক্ষার্থীরা। বাজারে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীদের মিছিল ও মাইকিং করতে দেখা গেছে। শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি জাতীয় ভোক্তা অধিদপ্তরও বাজার তদারকি করছে। 

প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান শুক্রবার ঢাকার শ্যামবাজার তদারকি শেষে সাংবাদিকদের বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য পরিবহনসংশ্লিষ্ট বিবিধ ব্যয় কমেছে এবং পণ্যের মজুত স্বাভাবিক রয়েছে। এরফলে পণ্যের মূল্য যৌক্তিক পর্যায়ে নেমে আসবে। তিনি শিক্ষার্থীদের সচেতনতামূলক বাজার মনিটরিং কার্যক্রমকে সাধুবাদ জানান। 

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির পেছনে প্রধানত ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট দায়ী। এখন সেটা ভেঙে পড়ায় আগের চেয়ে দাম অনেকটা কমে আসতে শুরু করেছে বলে মনে করেন তারা। 

অন্তর্বর্তীকালীন নতুন সরকারের গঠনের প্রথম দিন শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজারে বাজারে কেনাকাটা করতে আসা ক্রেতাদের মধ্যেও সবজি নিয়ে কিছুটা স্বস্তিভাব দেখা গেছে। বাজারগুলো ঘুরে দেখা যায়, সবজি, ডিম, মুরগির দাম কিছুটা কমতে শুরু করেছে। তবে চাল, ডাল, পেঁয়াজ, তেলের মতো কয়েকটি পণ্যের দর আগের জায়গায় স্থিতিশীল রয়েছে। 

ব্যবসায়ীরা বলেন, পণ্য সরবরাহ এখনো আগের মতো স্বাভাবিক হয়নি। এজন্য চাল-ডালের মতো নিত্যপ্রয়েজনীয় পণ্যগুলোর দাম এখনো আগের যায়গায় রয়েছে। খুব অল্প সময়ের মধ্যে এসব পণ্যের দামও কমতে পারে বলে মনে করছেন তারা। 

অপরদিকে সবজির বাজারে কিছুটা স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে। কৃষি অর্থনীতিবিদ ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির পেছনে প্রধানত ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট দায়ী ছিল। এখন সেটা ভেঙে পড়ায় আগের চেয়ে দাম অনেকটা কমে আসতে শুরু করেছে।

তিনি মনে করেন, নতুন প্রশাসনের অধীনে হয়তো এতটা প্রকট সিন্ডিকেট বজায় রাখতে পারবে না। তাই দাম কমে আসবে। তবে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে। আগে যারা চাঁদাবাজি করত তারা সিনে নেই। নতুন কেউ যেন আবার পরিবহন থেকে চাঁদাবাজি শুরু করতে না পারে সেটা খেয়াল রাখতে হবে বলে মনে করেন তিনি। 

বাজারে দেখা গেছে, পরিবহন সংকটের কারণে মোটা ও সরু চালের দাম কেজিপ্রতি ২-১ টাকা বেড়েছিল। এখনো সেই দামে বিক্রি হচ্ছে। এজন্য পরিবহনের পাশাপাশি সরবরাহ সংকট ও মিলারদের দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা। শুক্রবার কারওয়ান বাজারে মোটা চাল বিআর ২৮ বিক্রি হয়েছে ৫৩ টাকা কেজি দরে, যা একদিন আগেও ছিল ৫২ টাকা। চিকন বা সরু চাল বিক্রি হয় ৬৬-৬৭ টাকা কেজি দরে, যা ছিল ৬৩-৬৪ টাকা কেজি। পেঁয়াজ ও রসুনের দাম অবশ্য কিছুটা বেড়েছে। গতকাল দেশী পেঁয়াজ ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়, যা কয়েক দিন আগে ছিল ১১০ টাকা। 

পেঁয়াজের দাম প্রসঙ্গে কমলাপুর কাচা বাজারের বিক্রেতা জামাল হোসেন বলেন, আগের কেনা পেঁয়াজ এখনো শেষ হয়নি। তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। নতুন পেঁয়াজ কিনে আনলেই কম দামে বিক্রি করতে পারবো। আর রসুনের দাম কেজিতে বেড়েছে ২০ টাকা। এ পণ্যটি গতকাল বিক্রি হয় ২২০ টাকা কেজি দরে। কয়েক দিন আগেও এর দাম ছিল ২০০ টাকা কেজি। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী তারিকুল হাসান বলেন, এখনো পেঁয়াজ-রসুনের সরবরাহ কম। তাই দাম বাড়তি। তবে কয়েক দিনের মধ্যে দাম কমে আসবে। এদিন প্রতি কেজি আলু ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। 

সবজির বাজারে দেখা গেছে, প্রতি কেজি পটল বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ থেকে ৫০ টাকা, মিস্টি কুমড়া প্রতি কেজি ৪০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, কচুর মুখি কেজি ৮০ টাকা, মুলা ৪০-৫০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৭০ থেকে ৮০ টাকা, লাল বেগুন ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০-৫০ টাকা, কচুর লতি ৬০ টাকা। টমেটো প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা। গত এক সপ্তাহ আগেও এসব সবজির দাম ১০০ টাকার উপরে ছিলো। 

রাজধানীর খিলগাও কাঁচাবাজারে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বাজার করতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী রুমিনা বেগম বলেন, বাজারে সবজির দাম আগের তুলনায় কিছুটা কমেছে। তবে কিছু কিছু সবজির দাম বাড়তি রয়ে গেছে। মাঝখানে কিছুদিন সবজির দাম অতিরিক্ত দামে বিক্রি হয়েছে, ৮০ টাকার নিচে বাজারে কোনো সবজিই পাওয়া যায়নি। 

সবজির দামের বিষয়ে রাজধানীর কমলাপুর এজিবি কলোনী বাজারে সবজি বিক্রেতা সাইফুর রহমান বলেন, আগের চেয়ে সবজির দাম কমেছে। তিনি বলেন, একটি বড় কারণ হলো আগে রাস্তায় রাস্তায় চাঁদাবাজি হতো, দোকান বসলে টাকা দিতে হতো, পিকআপে করে সবজি আনার সময় ট্রাফিকসহ বিভিন্ন জায়গায় খরচ হতো। বর্তমানে সেই খরচটি নেই সে কারণে আগের চেয়ে তুলনামূলক কম দামে আমরা সবজি বিক্রি করতে পারছি। 

এদিকে সরবরাহ বাড়লেও মাছের দামে হেরফের নেই। গত সপ্তাহের দামেই বিক্রি হচ্ছে বেশিরভাগ মাছ। তবে ইলিশের দাম কিছুটা বাড়তি। গত সপ্তাহের তুলনায় ২০০-৩০০ টাকা বেড়েছে ইলিশের দাম। খুচরা বাজারে এক কেজি ওজনের ইলিশ ১৭০০ থেকে ১৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ছোট ইলিশ (৫০০ থেকে ৬০০ গ্রাম) বিক্রি হচ্ছে ১২ থেকে ১৪০০ টাকায়। এছাড়া প্রতি কেজিতে পাঙাশ ১৮০ থেকে ২০০ টাকায়, তেলাপিয়া ২৪০-২৬০ টাকায়, শিং ৫০০-৬০০ টাকায়, রুই (দেড়-দুই কেজি) ৩৫০ থেকে ৩৬০ টাকায়, আর পাবদা ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 

 এছাড়া মাংসের বাজারে দেখা গেছে, মুরগির দাম কিছুটা কমলেও বেড়েছে গরুর মাংসের দাম। আন্দোলনের মধ্যে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ২০০ টাকায়। ছোট বাজারগুলোতে ২১০ টাকায়ও বিক্রি হয়েছে। তবে বর্তমানে ব্রয়লার মুরগির দাম কিছুটা কমে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সোনালী মুরগী ২৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে এবং খাসির মাংস ১১০০ টাকা ও গরু ৭৫০ টাকা বাজার দরে বিক্রি হচ্ছে। এদিকে গরুর মাংস দাম বেড়ে ৮০০-৮৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। স্থিতিশীল রয়েছে খাশির মাংসের দাম।  

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

ধর্মই এদেশের একটি মহলের প্রধান শত্রু : শায়খ আহমাদুল্লাহ

ধর্মই এদেশের একটি মহলের প্রধান শত্রু : শায়খ আহমাদুল্লাহ

test

test

যে কারণে হঠাৎ বিসিবিতে তামিম ইকবাল

যে কারণে হঠাৎ বিসিবিতে তামিম ইকবাল

গোলাপ শাহ মাজারে উত্তপ্ত পরিস্থিতি, অতঃপর সেনাবাহিনীর আগমন

গোলাপ শাহ মাজারে উত্তপ্ত পরিস্থিতি, অতঃপর সেনাবাহিনীর আগমন

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App