ছুটির দিনেও ট্রাফিকের দায়িত্বে শিক্ষার্থীরা
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯ আগস্ট ২০২৪, ০৭:৪১ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর সব সড়কে ছুটির দিনেও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার নিয়ন্ত্রণে দায়িত্ব পালন করেছে শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার ( ৯ আগস্ট) সাপ্তাহিক ছুটির দিন হলেও শিক্ষার্থীদের এই গুরুত্বপূর্ণ কাজে দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়। এদের পাশাপাশি স্বল্প সংখ্যক আনসার সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবক কর্মীরাও শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা করতে দেখা যায়। গাড়ি চালক ও সাধারণ যাত্রীরাও শিক্ষার্থীদের এ ধরনের কর্মকাণ্ডের প্রশংসা করছেন।
শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর ট্রাফিক পুলিশ ঢাকার সব সড়ক থেকে উঠে যায়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর সব অফিস খুলে যায়। যানবাহন চলাচল পুরোদমে শুরু হলে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। সড়ক পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে প্রধান প্রধান ও জনবহুল সড়কগুলোতে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে।
গত কয়েকদিনের ধারাবাহিকতায় শুক্রবার ছুটির দিনেও শিক্ষার্থীদের ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে কাজ করতে দেখা যায়। শুক্রবার ছুটির দিন হলেও সব সড়কে মানুষের বেশ চাপ ছিলো। রাস্তায় প্রচুর গণপরিবহন ও ব্যক্তিগত গাড়ির পাশাপাশি সিএনজি অটোরিকশা, রিকশা ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল করেছে।
সরজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সব সিগন্যাল নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি ফুটওভারব্রীজ হয়ে পারাপার হওয়া, ফুটপাথ ব্যবহার করে হাঁটা, যেখানে সেখানে যাত্রী ওঠানামা করতে বাস না থামানো, লাইন ও লেন ব্যবহার করে গাড়ী চালানোসহ নানান ধরনের কার্যক্রমের মাধ্যমে সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছে। ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন যানবাহনের চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষা করছে। হেলমেট বিহীন মোটরসাইকেল চালকদের ভৎসনা পর্যন্ত করা হচ্ছে।
রাজধানীর সাইন্সল্যাব মোড়ে দায়িত্বরত শিক্ষার্থী রুবেল হাসান বলেন, ট্রাফিক পুলিশ না থাকায় সড়কের শৃঙ্খলা ও যানজট নিয়ন্ত্রনে শিক্ষার্থীরা কাজ করছে। দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীরা সম্পূর্ণ স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে দেশের জন্য কাজ করছে। আমাদের সঙ্গে কিছু আনসার সদস্য রয়েছেন। আমরা ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি পথচারীদের নিয়ম-শৃঙ্খলা শেখাচ্ছি। এতে লোকজন আমাদেরকে সহযোগিতা করছে, প্রশংসা করছে। আমরা দেখতে পাচ্ছি চালকরা লাইন লেন অনুযায়ী গাড়ি চালায় না। আমরা বাস, সিএনজি, প্রাইভেটকার লাইন ও লেন অনুযায়ী চলাচলের নির্দেশনা দিচ্ছি।
মালঞ্চ পরিবহনের চালক আব্দুস সালাম বলেন, শিক্ষার্থীরা যে কাজ করছে তা অবশ্যই প্রশংসনীয়। আমরা এখন তাদের নির্দেশনা মতো গাড়ি চালাচ্ছি। ছুটির দিনে যাত্রী কম থাকলেও ইচ্ছে হলেও বেশিক্ষণ গাড়ি থামিয়ে রাখতে পারি না। ট্রাফিক পুলিশের চেয়েও রাস্তায় অনেক বেশি পরিমাণ ছাত্ররা উপস্থিত থাকায় সবাই সচেতন হয়েই গাড়ি চালাচ্ছে।
এদিকে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে শিক্ষার্থীদের ভূমিকা নিয়েও কিছু অভিযোগ জানিয়েছেন চালকরা। প্রাইভেটকার চালক রফিক বলেন, ছাত্ররা কাগজপত্র চেক করে। তারা কিছুই বোঝে না। প্রত্যেকে আলাদা আলাদা নির্দেশ দেয়। এক জায়গায় চারবার গাড়ি চেক করেছে। কিছু না বোঝার পরও নানান প্রশ্ন করে। কিছু বলাও যাচ্ছে না। অনেক গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে বাড়াবাড়ি করে। রবিবার সড়কে যানবাহনের চাপ বাড়বে। তখন তারা কিভাবে সামাল দেবে বুঝতে পারি না।