সরকার দেশে একটা ‘ত্রাসের রাজত্ব’ সৃষ্টি করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, খুব স্পষ্ট কণ্ঠে বলতে চাই, এই আন্দোলনের সঙ্গে শিক্ষার্থীরা সরাসরি জড়িত। আমরা এর সঙ্গে কখনই জড়ায়নি। তাদেরকে নৈতিক সমর্থন দিয়েছি। সেটা আমরা দিয়ে যাবো। কারণ শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন যুক্তিসঙ্গত।

বুধবার (১৭ জুলাই) দুপুরে বাদ জোহর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম মসজিদে গায়েবানা জানাজার পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব এই অভিযোগ করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার গত কয়েকদিন ধরে ঢাকাসহ সর্বত্র ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করেছে। আপনারা দেখেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ মহানগরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ঢাকার বাইরে চট্টগ্রাম, বগুড়া, রংপুর, বরিশালসহ বিভিন্ন জেলায় সরকারি সন্ত্রাসী বাহিনী গুলি-সন্ত্রাস-নির্যাতন করে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন (কোটাবিরোধী ) বন্ধ করার প্রচেষ্টা চালিয়েছে।

তিনি বলেন, এরপর ৭টি তাজা প্রাণ শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। আপনারা দেখেছেন, শিক্ষার্থী আবু সাঈদকে রংপুরে কিভাবে সরাসরি গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এরকম ভয়াবহ ঘটনা আমাদের জীবনে কখনো দেখিনি। আজকে অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, এ ধরনের দমননীতি, নির্যাতন, হত্যা-গুম করে সরকার আজকে জোর করে ক্ষমতায় টিকে আছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি এটা সরকার আলাপ আলোচনার মাধ্যমেই শেষ করতে পারতো। শুধু জেদের কারণে আজকে তারা এই ধরনের হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডের নিন্দা ও ক্ষোভ আমরা জানিয়েছি।

মির্জা ফখরুল বলেন, আজকেও আমরা গায়েবানা জানাজা পড়তে এসেছিলাম। আপনারা দেখেছেন এই মসজিদেও কিভাবে তারা প্রবেশপথ বন্ধ করে দিয়ে আমাদেরকে বাধা প্রদান করা হয়েছে। আমরা এহেন ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।

বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের পুলিশি অভিযানের নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন,  সম্পূর্ণ আগের মতো নাটক সাজিয়ে বিএনপি অফিসে কতগুলো ককটেল, বোমা, লাঠিসোঁটা রেখে সেখানে তারা আজকে ছবি তুলে আবার বিএনপিকে দোষারোপ করার চেষ্টা চলছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আপনারা দেখেছেন, পাকিস্তান আমলে পাকিস্তান শাসকগোষ্ঠি এভাবে আন্দোলন দমন করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু সেই আন্দোলন তারা দমন করতে পারেনি। একইভাবে আজকে তারা (সরকার) যেভাবে চেষ্টা করছে, তার সঙ্গে কোনো মতেই একমত নই। একমত শুধু নই, আমি  এই সিদ্ধান্তের নিন্দা জানাচ্ছি, ঘৃণা জানাচ্ছি, প্রতিবাদ করছি।

তিনি বলেন, আমরা মনে করি যে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব হল ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে তা সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। এটা সরকার ইচ্ছা থাকলে করতে পারতো। কিন্তু তাদের সেই ইচ্ছাটাই নাই।