কোটা সংস্কার আন্দোলনে ৬ শিক্ষার্থীর মৃত্যুতে গভীর ক্ষোভ-শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন বিরোধীদলীয় নেতা এবং জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জি এম) কাদের। বুধবার (১৭ জুলাই) এক শোকবার্তায় নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন। পাশাপাশি শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। একইসঙ্গে প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠনের দাবিও জানান তিনি। 

জি এম কাদের বলেন, ছাত্রদের কোটা সংস্কার আন্দোলনের দাবি যৌক্তিক। এটা মেনে নিতে হবে। রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) ইংরেজী বিভাগের ছাত্র আবু সাঈদ শান্তিপূর্ণভাবে অহিংস প্রতিবাদ চালিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন ঠান্ডা মাথায় একের পর এক গুলি করে তাকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে পুলিশ। এই নির্মম হত্যাযজ্ঞের ভিডিও বিশ্ববাসী দেখেছেন। 

তিনি বলেন, কোটা পদ্ধতিতে নিয়োগ পাওয়া, সরকারি দলের আনুগত্যে অন্ধ ও অনুপযুক্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য এবং সশ্রস্ত্র ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নির্বিচারে হামলা করেছে আন্দোলনরত নিরীহ ছাত্রদের ওপর। গণমাধ্যমের একাধিক রিপোর্টে প্রকাশ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সামনে আগ্নেয়াস্ত্র বের করে সরকারি দলের অঙ্গসংগঠনের অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা ছাত্রদের ওপর গুলি করেছে। কিন্তু অবৈধ অস্ত্রধারীদের বাধা দেয়া বা গ্রেফতার করা হয়নি। রাতের আঁধারে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে নিরীহ ছাত্রীরাও রেহাই পায়নি এসব নরপশুদের নির্যাতন থেকে। 

বিবৃতিতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, প্রতিবেশী দেশ শ্রীলংকায় কিছু দিন আগে ব্যাপক আন্দোলন হয়েছে। সেই আন্দোলনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দরকারের বেশি শক্তি প্রয়োগ করেনি। শ্রীলংকায় এত বড় আন্দোলন হলো কিন্তু কোনো মায়ের কোল খালি হয়েছে বলে শুনিনি। 

জি এম কাদের বলেন, আইনের শাসন ও ন্যায়বিচারভিত্তিক সমাজ গঠনের জন্য সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। দুঃখজনক হলেও সত্য, দেশে অন্যায়, অবিচার ও অত্যাচারভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা চালু হয়েছে। চলছে দুষ্টের পালন আর সৃষ্টের দমন। এক শ্রেণির মানুষ এখন আইনের ঊর্ধ্বে অবস্থান করছেন। শাসক শ্রেণি আইনের প্রয়োগ ও বাস্তবায়ন নিয়ন্ত্রণ করছে। 

শোকবার্তায় বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। একইসঙ্গে নিহতদের পরিবারকে যৌক্তিক ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। আহত ছাত্রদের যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিতের দাবিও জানান তিনি।