প্রশ্নফাঁস
আরো ঊর্ধ্বতনের নাম জানালেন আবেদ আলী
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৪ জুলাই ২০২৪, ০৮:০৩ পিএম
পিএসসির আরো ঊর্ধ্বতনের নাম জানালেন আবেদ আলী। ছবি: সংগৃহীত
পিএসসির সাবেক গাড়িচালক আবেদ আলী গ্রেপ্তার হওয়ার পর প্রতিষ্ঠানটির ঊর্ধ্বতন অনেক কর্মকর্তার নামেই গুঞ্জন শোনা গেছে। এবার সিআইডির জিজ্ঞাসাবাদে আবেদ আলী প্রশ্নফাঁসে সংশ্লিষ্ট পিএসসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নাম বলেছেন। আবেদ আলী পিএসসির সাবেক সদস্য মাহফুজুর রহমানের গাড়িচালক ছিলেন।
মাহফুজুর রহমান সদস্য থাকাকালীন রাজধানীর গুলশানের একটি ভবন এবং নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলায় ‘ভিন্ন জগৎ’ নামের একটি রিসোর্ট ছিলো তার। ওই দুই জায়গায় অর্থের বিনিময়ে পরীক্ষার্থীদের রেখে পরীক্ষার এক দিন আগে প্রশ্নপত্র দেয়া হতো। ওই সময়ের দলীয় নেতাদের তালিকা অনুযায়ী মাহফুজুর রহমান প্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা নিতেন এবং নেতাদের ভাগ দিতেন। এ অভিযোগে মাহফুজুর রহমানের বিরুদ্ধে এর আগেই মামলা হয়।
মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার আগেই দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান মাহফুজুর। তবে এর আগেই কামিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা।
আরো পড়ুন: এবার আবেদ আলীর আরেক বড় কুকর্ম ফাঁস
আরো পড়ুন: আবেদ আলীর প্রশ্নফাঁসে বিসিএস ক্যাডার হয়েছেন যারা
সিআইডি সূত্র বলেছে, মাহফুজুর রহমানের সঙ্গে বিএনপি-জামায়াত জোটের একটি রাজনৈতিক সিন্ডিকেট ছিল বলে নিশ্চিত করেছেন আবেদ আলী। তাঁদের কিছু ক্ষমতাধর নেতা প্রশ্ন ফাঁসের এই টাকার ভাগ পেতেন। ওই সময় বিএনপি-জামায়াত-শিবিরসহ চারদলীয় জোটের নেতাকর্মীরাই বেশি ঢুকেছেন বিসিএস ক্যাডার হয়ে।
জিজ্ঞাসাবাদে আবেদ আলী আরো জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরেই তিনি বিসিএস প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তবে ২৪, ২৫ ও ২৭তম ব্যাচে প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটে। এর সঙ্গে আরো অনেকেই জড়িত।
আবেদ আলী বলেন, বিভিন্ন সময় পিএসসির শীর্ষ কর্মকর্তাদের অনেকেরই গাড়ি চালিয়েছেন তিনি। তাদের মধ্যে থেকে অনেকে প্রশ্ন ফাঁসের কোটি কোটি টাকা নিয়েছেন। পিএসসির শীর্ষ কর্মকর্তাসহ শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রশ্ন ফাঁসে জড়িত। ২৪তম বিসিএস পরীক্ষা থেকে শুরু করে সর্বশেষ ৪৫তম বিসিএস পরীক্ষার প্রশ্নপত্র, পিএসসির অধীনে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের নন-ক্যাডার পদে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্রও তারা ফাঁস করেছেন। আবেদ আলীর সহযোগীদের মধ্যে অনেকেই ইতোমধ্যে ধরা পড়েছেন, কেউবা আবার আড়ালে রয়ে গেছেন।
আবেদ আলী সিআইডির প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানান, তিনি শতকোটি টাকার সম্পদের মালিক। ঢাকায় তার একটি ৬ তলা বাড়ি, ৩টি ফ্লাট এবং ১টি গাড়ি রয়েছে। গ্রামে রয়েছে একটি ডুপ্লেক্স বাড়ি।
কিন্তু সিআইড মনে করছে অধিকতর অনুসন্ধানে আবেদ আলীর আরো সম্পদ বেড়িয়ে আসবে। ধারনা করা কচ্ছে তার অনুসারীরাও কোটি টাকার মালিক।
এর আগে গোয়েন্দারা আবেদ আলীর সঙ্গে প্রশ্নফাঁস কাণ্ডে জড়িত পিএসসির আরো এক চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করেছে। এসময় তার কাছে থেকে ১০ কোটি টাকার চেক উদ্ধার করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী। গ্রেপ্তার ওই চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে সিআইডি।