বেনজীরের চেয়েও কয়েকগুণ বেশি সম্পদ মতিউরের! (ভিডিও)
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৪ জুন ২০২৪, ০৩:৫৯ পিএম
সাবেক আইজিপি বেনজির এবং রাজস্ব কর্মকর্তা মতিউর রহমান। ছবি: সংগৃহীত
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাস্টমস, এক্সাইজ অ্যান্ড ভ্যাট আপিলেট ট্রাইব্যুনাল, ঢাকা’র প্রেসিডেন্ট ড. মো. মতিউর রহমান। অবৈধ সম্পদ গড়ার ব্যাপারে সিদ্ধহস্ত তিনি। এজন্য যেকোনো সময় রাজনৈতিক দল পাল্টানোর অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ইতোমধ্যে চাউর হয়েছে, এক সময় তিনি করতেন শিবির।
মতিউরের উত্থানটা শুরু বিএনপির আমলে। সাবেক দুই অর্থমন্ত্রীর সঙ্গেও তার সখ্যতা ছিল। তবে সব সরকারের আমলেই সুযোগ পেয়েই ধনকুবের হয়েছেন তিনি। স্বর্ণ চোরাচালান কারবারেও সিদ্ধহস্ত ছিল। বিপুল অর্থ সম্পদের মালিক মতিউরের বিরুদ্ধে কানাডা, মালয়েশিয়া, দুবাইসহ বিভিন্ন দেশে তিন হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ উঠেছে।
কোরবানির জন্য ১৫ লাখ টাকার ছাগল কিনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনায় আসা মুশফিকুর রহমান ইফাত হলেন মতিউরের ছেলে। মতিউর এনবিআর সদস্যর পাশাপাশি সোনালী ব্যাংকেরও পরিচালক। ব্যাংক সেক্টরের একজন শক্তিশালী সচিব কয়েকশ’ কোটি টাকার বিনিময়ে তাকে পরিচালক বানিয়েছেন। বিষয়টি ব্যাংকপাড়ার সবার মুখে আলোচনায়। দুর্নীতিবাজ কিভাবে হলো পরিচালক।
ব্যবসায়ীরা বলেন, মতিউর দুর্নীতি করতে আন্ডারগ্রাউন্ডের গণমাধ্যমকে বেছে নিতেন। তাদের দিয়ে বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে রিপোর্ট করাতেন। এরকমভাবে স্টাইলে কয়েকশ’ ব্যবসায়ীর কাছ থেকে শত শত কোটি টাকা নিয়েছেন তিনি।
ঢাকা এয়ারপোর্ট, যশোর এয়ারপোর্ট, বেনাপল স্থলবন্দর ও চট্টগ্রাম এয়ারপোর্টে দায়িত্ব পালন করেছেন। এয়ারপোর্ট থেকে স্বর্ণ চোরাচালানে তার সম্পৃক্ততা ছিল। এয়ারপোর্টে ক্লিয়ারিং ও ফরওয়ার্ডিং এজেন্টদের নিয়েও তার ব্যবসা ছিল।
আরো পড়ুন: মতিউরের ৩০০ বিঘা জমির হদিস! আর বাকি কত? (ভিডিও)
আরো পড়ুন: ছেলে-স্ত্রীসহ মতিউরের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা
শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারিরও মূলহোতা মতিউর। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা বলেন, এয়ারপোর্টে দায়িত্ব পালনকালে তিনি কমপক্ষে ৩ হাজার কোটি টাকা নিয়েছেন। সাবেক পুলিশ পরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি হবে তার টাকা। মতিউর হলেন এই যুগের টাকার কুমির।
এরই মধ্যে আমাদের নরসিংদী সংবাদদাতা নিবারণ রায় এক অনুসন্ধানে সেখানে মতিউরের স্ত্রীর পাহাড় সমান অর্থের তথ্য পেয়েছেন। এয়ারপোর্টে ১৮টি সংস্থা কাজ করে। তবুও স্বর্ণ পাচার করে এসেছেন মতিউর। অর্থাৎ নিজে হাজার হাজার কোটি টাকা কামিয়েছেন। অন্যদিকে অন্যান্য সংস্থার এক শ্রেণির কর্মকর্তাদের কোটিপতি বানিয়েছেন।
মতিউর হলেন কোটি টাকা বানানোর কারিগর। টাকা কামানোর সব রাস্তা তার জানা। দুর্নীতি করে নিখুঁতভাবে। সব সরকারের আমলেই একটি শক্তিশালী গ্রুপ তার পেছনে থাকতো। এক শ্রেণির এমপি, আমলা- এমনকি কতিপয় মন্ত্রীদের কোটি কোটি টাকা বানিয়ে দিয়েছেন। তার ভয়ে সবাই তটস্থ থাকতেন।
আওয়ামী লীগের এক শ্রেণির নেতারাও মতিউরের কাছ থেকে অর্থ পেতেন। তার বিরুদ্ধে পূর্বের চার দফা অনুসন্ধানের যাবতীয় ফাইল তলব করেছে দুদক। একই সঙ্গে ২০০৪, ২০০৮, ২০১৩ ও ২০২১ সালে পরিসমাপ্তকৃত ৪টি অনুসন্ধান প্রতিবেদনে কোনো অসংগতি আছে কি না, থাকলে দুদকের কোন কোন কর্মকর্তা জড়িত সেটা তদন্ত করতে বলা হয়েছে।
মতিউরের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান নথি খুঁজে না পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলার দায়ে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে।