×

জাতীয়

ভেরিফিকেশন ফাঁদ

পাসপোর্ট অফিস থেকেই ফাঁস হচ্ছে আবেদনকারীদের তথ্য

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৬ মে ২০২৪, ১০:৫২ পিএম

পাসপোর্ট অফিস থেকেই ফাঁস হচ্ছে আবেদনকারীদের তথ্য

ছবি: ভোরের কাগজ

নিয়ম অনুযায়ী ব্যক্তিগত সব তথ্য দিয়ে অনলাইন ফর্ম পুরোন করে সেটির কপি নিয়ে অন্যান্য সব কাগজপত্রসহ পাসপোর্ট অফিসে জমা দেন আবেদনকারীরা। এদের অনেকেই পাসপোর্ট অফিসের আশপাশের কম্পিউটারের দোকান থেকে ফর্ম পুরোন করেন। আবার অনেকে নিজে বা তার নিজনিজ এলাকা থেকে ফর্ম পুরোন করে আনলেও পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে কর্মকর্তা, কর্মচারী, আনসার পিয়ন দালালসহ বিভিন্ন লোকজনের সহযোগিতা নেন। পাসপোর্ট আবেদনের পরে সবার কাছেই পুলিশ ভেরিফিকেশনের ফোন যায়। অনেককেই পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চে (এসবি) ডাকা হয় পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার জন্য। আর এই ভেরিফিকেশনের নামে ফাঁদ পেতে দীর্ঘদিন ধরে টাকা হাতিয়ে নিতো একটি চক্র। 

এই চক্রের ৯ সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর ডিবি বলছে, আবেদনকারীদের তথ্য চক্রের সদস্যরা পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তা, কর্মচারী, আনসার এমনকি কম্পিউটারের দোকান থেকেও নিতো। পরে নিজেদের এসবির কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে ভেরিফিকেশনের নামে টাকা আত্মসাৎ করতো। উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে- পাসপোর্ট অফিস থেকেই ফাঁস হচ্ছে আবেদনকারীদের তথ্য। যদিও পাসপোর্ট অফিসের কোন কোন কর্মকর্তা কর্মচারী এই চক্রের সঙ্গে জড়িত সে বিষয়ে জানায়নি ডিবি পুলিশ। 

গ্রেপ্তাররা হলেন- কাজী মো. বেলাল হোসেন, মো. জসিম উদ্দিন, মো. আল-আমিন গাজী, হাসান আহম্মেদ, সোহাগ আলম, হোসাইন মোল্লা, নুরুজ্জামান মিয়া, মামুনুর রহমান ও রাসেল ইসলাম। এসবির পাসপোর্ট ভেরিফিকেশন শাখা থেকে সবুজবাগ থানায় দায়ের করা একটি মামলার সূত্র ধরে এই চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তার করা হয়।

আরো পড়ুন: মিল্টনের আশ্রমে থাকা ব্যক্তিদের দায়িত্বে শামসুল হক ফাউন্ডেশন

সোমবার (৬ মে) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ এসব তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এই প্রতারক চক্র পাসপোর্ট অফিসে কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা, কর্মচারীর, পিয়ন ও আনসার সদস্যের যোগসাজসে পাসপোর্ট অফিস থেকে তথ্য নিতো। পরে পাসপোর্ট আবেদনকারীদের ডেলিভারী স্লিপে এবং আবেদন ফরমে দেয়া মোবাইল নাম্বারে ফোন করে নিজেদের এসবি অফিসার পরিচয় দিয়ে প্রথমে আবেদনকারীকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র (এনআইডি, বিদ্যুৎ বিলের কপি) হোয়াটসঅ্যাপে পাঠাতে বলে। পরে কৌশলে বিভিন্ন আবেদনকারীর তথ্যে সমস্যা আছে জানিয়ে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেয়।

অভিযানের নেতৃত্ব দেয়া ডিবি সাইবার এন্ড স্পেশাল ক্রাইম (দণি) বিভাগের অতিরিক্ত উপ- কমিশনার (এডিসি) মো. সাইফুর রহমান আজাদ বলেন, গ্রেপ্তারকৃত বেলাল, জসিম, হাসান, আল-আমিন ভেরিফিকেশনের নামে মিথ্যা পুলিশ পরিচয়ে প্রতারণা চক্রের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। তারা চক্রের মুল এজেন্ট হিসেবে কাজ করে। অধিক লাভের আশায় বিভিন্ন কম্পিউটার দোকানের কর্মচারী, পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তা, কর্মচারী, আনসার সদস্য, পিয়নসহ নানান লোকজন এই চক্রের সঙ্গে জড়িত। 

ডিবি কর্মকর্তা আরো বলেন, প্রতারণার এই কাজে অন্যের নামে রেজিস্ট্রেশন করা সিম ব্যবহার করতো চক্রটি। সিমগুলোতে মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্টও থাকতো। কেউ মোবাইলে ট্রুকলারের মতো অ্যাপস ব্যবহার করলেও এসবির বিভিন্ন কর্মকর্তার নাম ভেসে উঠতো। এতে আবেদনকারীরা বিনা সন্দেহে টাকা পাঠিয়ে দিতেন। এই চক্রের সঙ্গে আর কারা জড়িত সেটি তদন্তে উঠে আসবে বলেও জানান মো. সাইফুর রহমান আজাদ।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App