×

জাতীয়

এবার মানবপাচার মামলায় ৪ দিনের রিমান্ডে মিল্টন সমাদ্দার

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫ মে ২০২৪, ০৪:২৪ পিএম

এবার মানবপাচার মামলায় ৪ দিনের রিমান্ডে মিল্টন সমাদ্দার

ছবি: সংগৃহীত

এবার মানবপাচার আইনে করা মামলায় ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার’র চেয়ারম্যান মিল্টন সমাদ্দারের ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। রবিবার (৫ মে) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেগম শান্তা আক্তার শুনানি শেষে এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এদিন আশ্রমের মৃত ব্যক্তিদের জাল মৃত্যু সনদ দেয়ার অভিযোগে করা মামলায় ৩ দিনের রিমান্ড শেষে তাকে হাজির করে পুলিশ। 

এরপর তার বিরুদ্ধে মানবপাচার আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ৭ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করে পুলিশ। আদালত শুনানি শেষে তাকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এছাড়া জাল সনদের মামলায় তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এর আগে গত ১ মে রাতে মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে মিরপুর মডেল থানায় মামলাটি করেন ধানমন্ডির বাসিন্দা এম রাকিব (৩৫)।

মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, ২০২০ সালের ৬ সেপ্টেম্বর তিনি শেরে বাংলানগর থানার ধানমন্ডি বয়েজ স্কুলের সামনে দুই বছরের এক শিশুকে পড়ে থাকতে দেখেন। এরপর তিনি থানায় ফোন করেন। কিন্তু থানা পুলিশ কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় তিনি ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার’-এ ফোন করলে মিল্টন সমাদ্দার ওই শিশুকে নিয়ে যান। তখন বাদী নিজেও তাদের সঙ্গে যান। মিল্টন সমাদ্দার তাকে (বাদী) অজ্ঞাতনামা শিশুর অভিভাবক হিসেবে গ্রহণ করেন। পরে মিল্টন সমাদ্দারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে শিশুটিকে ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ারে’ ভর্তি করা হয়। 

এরপর মিল্টন সমাদ্দার জানান, আদালতের মাধ্যমে শিশুটিকে দত্তক নেয়া যাবে। এভাবে কিছুদিন অতিবাহিত হওয়ার পর হঠাৎ একদিন ফোন করে মিল্টন সমাদ্দার আমাকে গালিগালাজ করেন এবং বলেন আমি যেন তার প্রতিষ্ঠানে আর না যাই, শিশুটির খোঁজ-খবর না নেই। এরপর আরো বেশ কয়েকজন ফোন করে আমাকে হুমকি দেন ও ভয়ভীতি দেখান। প্রাণভয়ে আমি আর সেখানে যাইনি। সম্প্রতি একটি খবর চোখে আসার পর গত ২৪ এপ্রিল প্রতিষ্ঠানে গিয়ে শিশুটিকে পাওয়া যায়নি। শিশুটি কোথায় আছে, সে ব্যাপারেও সদুত্তর মেলেনি। বাদীর অভিযোগ, শিশুটিকে পাচার করা হয়েছে।

এদিকে গত ১ মে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ডিবি পুলিশের একটি দল ঢাকার মিরপুর থেকে মিল্টন সমাদ্দারকে গ্রেপ্তার করে। এরপর প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে জালজালিয়াতি মাধ্যমে ডেথ সার্টিফিকেট তৈরি খাটি হিসেবে ব্যবহার করার অভিযোগে মিরপুর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন পুলিশ উপ-পরিদর্শক মো. কামাল পাশা। মামলায় দণ্ডবিধির ৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১ ধারায় অভিযোগ দায়ের করা হয়।

এর আগে গত ২৫ এপ্রিল ‘মানবিক মুখোশের আড়ালে ভয়ংকর মিল্টন সমাদ্দার’ এবং ‘জীবনের ধাপে ধাপে প্রতারণা’ শিরোনামে দুটি সংবাদ প্রকাশ করে দৈনিক একটি পত্রিকা। এরপরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাকে নিয়ে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। মুখ খুলতে শুরু করেন ভুক্তভোগীরা। এরপর মাঠে নামেন ডজন ডজন সাংবাদিক। উঠে আসে তার একের পর এক ভয়ংকর প্রতারণার আর অপকর্মের তথ্য।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, তার আশ্রমে চিকিৎসার খরচ বাবদ প্রতিমাসে ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকা খরচ হয়; যা অস্বাভাবিক। আবার আশ্রমে চিকিৎসা না দেয়ার দাবি করলেও তিনি ডাক্তারদের জন্য ৬০ লাখ টাকার বিলাসবহুল গাড়ি কিনেছেন বলেও অভিযোগ আছে। ‌মিল্টন সমাদ্দা‌রের বিরু‌দ্ধে প্রতারণা, মানব পাচার, নির্যাতনের অভিযোগে একাধিক মামলা দা‌য়ের হ‌য়ে‌ছে মিরপুর ম‌ডেল থানায়। 

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App