×

জাতীয়

সুপ্রিম কোর্টে মারামারির ঘটনায় ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯ মার্চ ২০২৪, ০৮:৪৬ এএম

সুপ্রিম কোর্টে মারামারির ঘটনায় ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা

ছবি: ভোরের কাগজ

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০২৪-২৫ সালের নির্বাচনে ভোট গণনাকে কেন্দ্র করে হট্টগোল, হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনায় শাহবাগ থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় স্বতন্ত্র সম্পাদক প্রার্থী অ্যাডভোাকেট নাহিদ সুলতানা যুথি, বিএনপি প্যানেলের সম্পাদক প্রার্থী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলসহ ২০ জনকে আসামি করা হয়েছে। অ্যাডভোকেট নাহিদ সুলতানা যুথি যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশের স্ত্রী।

শুক্রবার রাতে সহকারি অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুর রহমান চৌধুরী সাইফ তাকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর রাতেই বিএনপির ব্যারিস্টার ওসমান চৌধুরীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অন্য আসামিরা হলেন-অ্যাড. মো. জাকির হোসেন ওরফে মাসুদ (৫৫), অ্যাডভোকেট  শাকিলা রৌশন, অ্যাডভোকেট কাজী বশির আহম্মেদ , ব্যারিস্টার উসমান, অ্যাড. আরিফ, অ্যাডভোকেট সুমন, অ্যাডভোকেট তুষার, রবিউল, ব্যারিস্টার চৌধুরী মৌসুমী ফাতেমা (কবিতা), সাইদুর রহমান জুয়েল (৪০), অলিউর, যুবলীগ নেতা জয়দেব নন্দী, মাইন উদ্দিন রানা, মশিউর রহমান সুমন, কামাল হোসেন, আসলাম রাইয়ান, অ্যাডভোকেট তরিকুল ও  অ্যাডভোকেট সোহাগ। এ ছাড়া মামলায় ৩০/৪০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

মামলার এজহারে বলা হয়, ‘আসামিরা ১নং আসামির নিদের্শে এবং প্রত্যক্ষ নেতৃত্বে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বার সমিতির নিচ তলার শহিদ শফিউর রহমান মিলনায়তনের রুমের দরজা খুলে অস্ত্র হাতে প্রবেশ করে। এসময় অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসগ নির্বাচন সাব-কমিটির অন্যান্য সদস্যদের গালিগালাজ করে। ১,২,৩,৪ ও ৫নং আসামি হাতে থাকা লোহার রড দিয়ে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথায় আঘাত করে। এতে আমি মারাত্মক জখম হই। অন্যান্য আসামিরা কাঠের লাঠি, কাঠের ও প্লাস্টিকের চেয়ার দিয়ে অতর্কিতভাবে এলোপাথারী মারপিট করে এবং পা দিয়ে আঘাত করে আমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে এবং আমার পরিহিত কাপড় ছিড়ে ফেলে। আসামিরা আমার সঙ্গীয় ব্যারিস্টার জাকারিয়া হাবিবকেও মারপিট করে আহত করে। একপর্যায়ে ৫নং আসামির হাতে থাকা কাঠের লাঠি দিয়ে ব্যারিষ্টার জাকারিয়া হাবিবকে আঘাত করা হলে তার ডান হাতের আঙ্গুল ভেঙে যায় এবং পরিহিত কাপড় ছিড়ে ফেলে। তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় হামলাকারীরা। ১নং আসামী এড, রিনা বেগমকে চরথাপ্পর ও হুমকি দেয় এবং ১১নং আসামি গলা চেপে শ্বাস রোধ করে হত্যার চেষ্টা করে। অন্যান্য অজ্ঞাত আসামিরা অডিটোরিয়ামের ভেতরে এলোপাথারী ভাংচুর ও অরাজকতা সৃষ্টি করে। ফলে নির্বাচনে দায়িত্বরত সদস্যদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয় এবং নির্বাচনী কার্যক্রম ভণ্ডুল হয়ে যায়। একপর্যায়ে সকল আসমিসহ ১নং আসামি নিজে অস্ত্রের মুখে নির্বাচন সাব-কমিটির প্রধান অ্যাড. আবুল খায়েরকে ভোট গণনা ছাড়াই সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত ঘোষণা করার জন্য বাধ্য করে। নির্বাচন সাব-কমিটির সকল সদস্য জীবন বাঁচাতে ভোট গণনার কাজ না করেই চলে যেতে বাধ্য হয়। আমার পরিহিত প্যান্টের ডান পকেটে থাকা ১৫ হাজার টাকা ১২ নং আসামী নিয়ে যায়। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবি সমিতির সি.সি টিভি ফুটেজে ঘটনার বিষয়ে সমস্ত ধারণ করা আছে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও সে ভিডিও ফুটেজ রয়েছে। অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ভোট গণনা এবং ফলাফল ঘোষণার কাজ আসামিরা সম্পন্ন হতে না দিয়ে ১নং আসামিকে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক হিসাবে নির্বাচিত ঘোষণা করার অবৈধ দাবিতে তার নেতৃত্বে উপরোক্ত ঘটনা ঘটিয়েছে।’ 

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০২৪-২৫ সালের নির্বাচনে দুইদিনে ৭ হাজার ৮৮৩ জন আইনজীবীর মধ্যে ৫ হাজার ৩১৯ আইনজীবী তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। 

আওয়ামী লীগ সমর্থিত সাদা প্যানেলের প্রার্থীরা হলেন- সভাপতি পদে আবু সাঈদ সাগর, সম্পাদক শাহ মঞ্জুরুল হক, দুই সহ-সভাপতি পদে রমজান আলী শিকদার ও দেওয়ান মোহাম্মদ আবু ওবায়েদ হোসেন সেতু, কোষাধ্যক্ষ পদে মোহাম্মদ নুরুল হুদা আনসারী, দুটি সহ-সম্পাদক পদে হুমায়ুন কবির ও হুমায়ুন কবির পল্লব। সাতটি সদস্য পদে সৌমিত্র সরদার রনী, মো. খালেকুজ্জামান ভূঁইয়া, রাশেদুল হক খোকন, মাহমুদা আফরোজ, বেলাল হোসেন শাহীন, খালেদ মোশাররফ রিপন, রায়হান রনী।

বিএনপি সমর্থিত নীল প্যানেল থেকে মনোনীত প্রার্থীরা হলেন- সভাপতি পদে এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, সম্পাদক পদে মো. রুহুল কুদ্দুস (কাজল), দুই সহ-সভাপতি পদে মো. হুমায়ুন কবির মঞ্জু ও সরকার তাহমিনা বেগম সন্ধ্যা, কোষাধ্যক্ষ পদে মো. রেজাউল করিম, দুটি সহ-সম্পাদক পদে মাহফুজুর রহমান মিলন ও মো. আব্দুল করিম। ৭টি সদস্য পদে ফাতিমা আক্তার, সৈয়দ ফজলে এলাহি অভি, মো. শফিকুল ইসলাম শফিক, মো. রাসেল আহমেদ, মো. আশিকুজ্জামান নজরুল, মহিউদ্দিন হানিফ ও মো. ইব্রাহিম খলিল। 

এই দুই প্যানেলের বাইরে সভাপতি পদে ইউনুছ আলী আকন্দ এবং সাবেক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এম কে রহমান নির্বাচন করছেন। 

আরো পড়ুন: ইউনিপের ৪২০ কোটি টাকা ফেরত পাবে গ্রাহক: আপিল বিভাগ

এছাড়া সম্পাদক পদে সাদা ও নীল প্যানেলের বাইরে অ্যাডভোকেট নাহিদ সুলতানা যুথি ও ফরহাদ উদ্দিন আহমেদ ভূইয়া প্রতিদ্বন্দিতা করছেন। কোষাধ্যক্ষ পদে অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করছেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App