প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, স্বাধীনতা হঠাৎ করে আসেনি। দীর্ঘদিনের পরিকল্পনার মধ্য দিয়ে এই স্বাধীনতা এসেছে। 

বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, এ পরিকল্পনার কথা বঙ্গবন্ধু কাউকে বলেননি। জনগণের অধিকার আদায়ের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে তিনি কাজ করে গেছেন।

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ৭০-এর নির্বাচনের আগে ৬৯ সালের অক্টোবর মাসে আমার বাবা (জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান) লন্ডনে গিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু মুক্তি পাওয়ার পরপর আমি আমার স্বামীর সঙ্গে ইতালিতে চলে যাই। ইতালি থেকে আমার স্বামী আবার লন্ডনে চাকরি পেয়েছিল, সেখানে চলে যাই। সেখানে বসে তিনি তার যে পরিকল্পনা ছিল- নির্বাচন হবে, নির্বাচনের রেজাল্ট আসবে, ওরা ক্ষমতা দেবে না, আমাদের যুদ্ধ করতে হবে ইত্যাদি জানান। যুদ্ধের প্রস্তুতি তার ছিল, তিনি পরিকল্পনা করেন তখন থেকে, আমি একজন সাক্ষী এখনো আছি। ভারতের দুজন প্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনা করেন। আমাদের গেরিলা যুদ্ধ হবে, সেখানে শরণার্থী গেলে কীভাবে আশ্রয় হবে, প্রবাসী বাঙালিরা কী কী কাজ করবে, সমস্ত পরিকল্পনা তিনি করে আসেন।

আরো পড়ুন: ৭ মার্চের ভাষণ মুক্তিযুদ্ধে বিজয় এনে দিয়েছে

পাকিস্তানিরা নাজমুল হক মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে মেজর পদে দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিলেন তার কাছে জিজ্ঞেস করেছে— ৭ মার্চের ভাষণে শেখ মুজিব কী কথা বলেছিল? সেটার ব্যাখ্যা চেয়েছিল। ৭ মার্চের ব্যাখ্যা খুঁজতে খুঁজতেই তাদের (পাকিস্তানি) সময় গেছে। তিনি (বঙ্গবন্ধু) কী বলে গেলেন? কী হয়ে গেল? বাংলাদেশের মানুষ অস্ত্র নিয়ে যুদ্ধ করল। এটাই ছিল তাদের (পাকিস্তানি) বক্তব্য। একজন নেতার ভাষণ মানুষকে শুধু উদ্বুদ্ধ করেনি, গেরিলা যুদ্ধের শুধু প্রস্তুতি দেয়নি, একটা যুদ্ধের বিজয় এনে দিয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, মার্শাল ল’য়ের মধ্যেও নির্বাচন দেয়ার ওয়াদা করেছিল ইয়াহিয়া খান। ওয়াদার মধ্যেও কিছু শর্ত ছিল। সেই শর্ত মেনেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। তার (বঙ্গবন্ধু) কথা ছিল, কে এদেশের নেতৃত্ব দেবে সেটা আগে জনগণ ঠিক করুক। যদিও আমাদের দেশের অনেক রাজনৈতিক দল ও নেতা এ নির্বাচনের বিরোধিতা করেছিল। 

সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালযয়ের প্রতিমন্ত্রী নাহিদ ইজহার খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন- মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী ও মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন।