×

জাতীয়

দেশীয় প্রযুক্তির বিমানের উদ্বোধন শীঘ্রই

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫ মার্চ ২০২৪, ০৭:০৭ পিএম

দেশীয় প্রযুক্তির বিমানের উদ্বোধন শীঘ্রই

বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল শেখ আব্দুল হান্নান বলেছেন, সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে বিমান তৈরি করা হয়েছে। পরীক্ষামূলক উড্ডয়নও সফল হয়েছে। দ্রুতই এটি উদ্বোধন করা হবে। বিমানটির ইঞ্জিন শুধু দেশের বাইরে থেকে আনা হয়েছে। ডিজাইনসহ অন্য সবকিছু বাংলাদেশে তৈরি। আমরা ধাপে ধাপে যুদ্ধ বিমানও তৈরি করতে চাই। এটা কঠিন কোনো বিষয় না। আমাদের সেই প্রযুক্তি ও জনবল রয়েছে। ৫ বা ১০ বছরের মধ্যে আমরা যুদ্ধ বিমান তৈরি করে দেশবাসীকে দেখিয়ে দিতে চাই, আমরাও পারি।

মঙ্গলবার (৫ মার্চ) ঢাকায় অবস্থিত বিমান বাহিনীর বঙ্গবন্ধু ঘাঁটিতে গিয়ে বাহিনীটির ৫ দিনব্যাপী বার্ষিক মহড়ার তৃতীয় দিনে সরজমিন পরিদর্শনে গিয়ে এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় বিমান বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে বিমান বাহিনী প্রধান সেখানে পৌঁছানোর পর শত্রুপক্ষ আকাশসীমা লঙ্ঘন করে হামলা করতে আসলে সেটি প্রতিহত করার কৌশল প্রদর্শন করে দেখান চৌকস পাইলটরা। শুরুতে আকাশসীমা লঙ্ঘনকারী বিমানের বহর র‌্যাডারের মাধ্যমে শনাক্ত হওয়ার পর উচ্চ শব্দে বেজে ওঠে হুইসেল। মুহূর্তের মধ্যে বাংলাদেশের যুদ্ধ বিমান ছুটে যায় ওই বিমান বহরের দিকে। কিছুক্ষণের মধ্যেই ধাওয়া করতে থাকে শত্রুপক্ষের বিমান বহরকে। প্রথম যুদ্ধ বিমান রওনা হওয়ার পরই আরো কয়েকটি বিমান ওই বহরের দিকে ছুটে যায়। ঘাঁটির চারিদিকে উড়তে থাকে কয়েকটি হেলিকপ্টারও। পরিস্থিতি বুঝে উড্ডয়নের প্রস্তুতি নিতে থাকে আরো কয়েকটি অত্যাধুনিক বিমান। সাময়িক সময়ের জন্য এটিকে যুদ্ধ ক্ষেত্র মনে হলেও এভাবেই বাংলার আকাশ নিরাপদ রাখতে প্রস্তুত থাকে বিমান বাহিনীর সদস্যরা।

মহড়া পরিদর্শন করে বিমানবাহিনী প্রধান বলেন, এবারের মহড়া সবচেয়ে বড় পরিসরে হচ্ছে এবং এবারের মহড়ার নতুনত্ব হচ্ছে- আমরা বেশ কিছু অত্যাধুনিক র‌্যাডার যুক্ত করেছি, সেগুলোর স্বক্ষমতা পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। মহড়ায় আমরা যে ফলাফল পাবো, তার উপর নির্ভর করে আগামীতে আরো কি সরঞ্জাম যুক্ত করা যেতে পারে তার ধারণা পাওয়া যাবে। পাশাপাশি এই মহড়ার মাধ্যমে নতুন যে ক্রুরা অপারেশনাল কার্যক্রমে যুক্ত হচ্ছে, তারা বুঝতে পারবে যুদ্ধ ক্ষেত্রের পরিস্থিতি কীভাবে সামাল দিতে হবে। আর এটিই আমাদের মূল কাজ। এয়ার চিফ মার্শাল শেখ আব্দুল হান্নান আরো বলেন, এই মহড়ার দেশের বিভিন্ন এলাকাকে গ্রিন ও রেড ল্যান্ড হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। রেড ল্যান্ড থেকে গ্রিন ল্যান্ডে আক্রমণ করা হয়। গ্রিন ল্যান্ড সেই আক্রমণ প্রতিহত করে। ফলে এই মহড়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে আমাদের দুর্বলতাগুলো চিহ্নিত করে আরো সমৃদ্ধ হওয়ার সুযোগ তৈরি হয়। তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন জায়গায় অত্যাধুনিক র‌্যাডার স্থাপন করা হয়েছে। এটি আমাদের স্বক্ষমতা বাড়িয়েছে।

আরো পড়ুন: রোজা-ঈদ ঘিরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একগুচ্ছ নির্দেশনা

বিমান বাহিনী সূত্র জানায়, বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ৫ দিন ব্যাপী বার্ষিক মহড়া-২০২৪ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মহড়ার উল্লেখযোগ্য অংশ হিসেবে বিমান বাহিনীর বৈমানিকাভ আকাশ যুদ্ধের বিভিন্ন প্রকার রণকৌশল অনুসরণ করে যুদ্ধ বিমানের মাধ্যমে আক্রমণ, ইন্টারসেপশন, আকাশ থেকে শত্রু কবলিত স্থান পর্যবেক্ষণ, রশদ সরবরাহ, সৈন্য ও যুদ্ধাস্ত্র স্থানান্তর, স্পেশাল অপারেশন, অনুসন্ধান ও উদ্ধারসহ সব ধরনের মিশন পরিচালনা করছে। আকাশ যুদ্ধ ছাড়াও ভূমিতে ঘাঁটি প্রতিরা ব্যবস্থা সংশ্লিষ্ট সব অনুশীলন করা হচ্ছে। 

মহড়াটি বিমান বাহিনীর সব ঘাঁটি, সিলেট, টাঙ্গাইল, লালমনিরহাট, শমশেরনগর, রসুলপুর ও সুধারামে অবস্থিত বিভিন্ন ইউনিট সমূহ থেকে সারা বাংলাদেশে গত রবিবার থেকে পরিচালিত হচ্ছে। এ মহড়ায় বিমান বাহিনীর সব প্রকার যুদ্ধ ও পরিবহণ বিমান, হেলিকপ্টার ও র‌্যাডার, মিসাইল ইউনিট এবং আনম্যান্ড এরিয়াল সিস্টেম ইউনিটসহ সব প্রকার যুদ্ধাস্ত্র ব্যবহার করা হচ্ছে। এই মহড়ায় বিমান বাহিনীর বিভিন্ন র‌্যাডার স্কোয়াড্রনের মাধ্যমে শত্রুদের আক্রমণকে চিহ্নিত করে নিজ বাহিনীর যুদ্ধ বিমান ও মিসাইল ইউনিটের সহায়তায় উক্ত আক্রমণকে প্রতিহত করার কৌশল অনুশীলন করা হচ্ছে। 

আকাশ যুদ্ধ ছাড়াও ভূমিতে ঘাঁটি প্রতিরা ব্যবস্থা সংশ্লিষ্ট সব কৌশল অনুশীলন করা হচ্ছে। অনুশীলনের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টার ও কমান্ডো দল কর্তৃক কোমব্যাট সার্চ এন্ড রেস্কিউ (সিএসএআর) মিশন, পরিবহণ বিমান দ্বারা জরুরি রসদ স্থানান্তর, বিমান বাহিনীর বম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের সহায়তায় বোমা অথবা বিস্ফোরক দ্রব্য শনাক্ত ও নিষ্ক্রিয়করণ এবং স্ত্র্যাম্বলের মাধ্যমে আকাশসীমায় অনুপ্রবেশকারী শত্রু বিমানকে প্রতিহত করার লক্ষ্যে এয়ার ডিফেন্স অ্যালার্ট (এডিএ)-এ কর্তব্যরত যুদ্ধ বিমানকে ব্যবহার করা, ড্রোনের মাধ্যমে নজরদারি, সময় সংবেদনশীল টার্গেটে আক্রমণ এবং ইত্যাদি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App