×

জাতীয়

আগামী বছর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বইমেলা হচ্ছে না!

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৪:০৭ পিএম

আগামী বছর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বইমেলা হচ্ছে না!

ছবি: সংগৃহীত

আগামী বছর বইমেলার জন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জায়গা আর বরাদ্দ দেবে না বলে প্রাথমিকভাবে জানিয়ে দিয়েছে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। গুঞ্জন রটেছে, বইমেলা বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ থেকে সরিয়ে পূর্বাচলে নিয়ে যাওয়া হবে। বইমেলার মাঠে, চায়ের আড্ডায় তেমন আলাপই নানা রকমের ডালপালা মেলেছে। মেলার আয়োজক প্রতিষ্ঠান বাংলা একাডেমি বা সরকারের পক্ষ থেকে এখনো চূড়ান্তকরে কোনকিছু জানানো হয়নি। তবুও দেখা দিয়েছে সংশয়!

মেলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বাংলা একাডেমির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বর্তমানে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রায় সাড়ে ১১ লাখ বর্গফুট জায়গায় বইমেলা হচ্ছে। কিন্তু সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ঘিরে সাংস্কৃতিক বলয় তৈরির অংশ হিসেবে মার্চ মাস থেকে কিছু প্রকল্পের কাজ শুরু করতে চাইছে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। আগামী বছর তারা বইমেলার জন্য উদ্যানের জায়গা বরাদ্দ দেবে না বলে প্রাথমিকভাবে জানিয়েও দিয়েছে। সে কারণেই প্রশ্ন উঠছে, বইমেলা কোথায় হবে।

এ নিয়ে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক সেলিনা হোসেন বলেন, ‘আগামী বছর যদি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের অনুমতি না পাওয়া যায়, তখন মেলার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা মিলে সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে ব্যক্তিগতভাবে চাইব, বইমেলা বাংলা একাডেমিতেই থাকুক। এই বইমেলার সঙ্গে একুশের চেতনা, শহীদ মিনার এবং বাংলা একাডেমি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তাই বইমেলার স্থানিক দূরত্ব কোনোভাবেই কাম্য নয়।’

লেখক-প্রকাশকসহ বইমেলা সংশ্লিষ্টরা চান বইমেলা বাংলা একাডেমি এবং সোহাওয়ার্দী উদ্যানেই হোক। পূর্বাচলে যদি বইমেলায় নেয়া হয়, তবে প্রকাশরা সেখানে যেতে আগ্রহী নন।

বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সহ-সভাপতি শ্যামল পাল বলেন, ‘বইমেলা বাংলা একাডেমি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই হতে হবে। পূর্বাচলে হলে আমাদের প্রকাশকদের কেউই অংশগ্রহণ করবে না। আর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বরাদ্দ দিতে সমস্যা তো হওয়ার কথা নয়।’

কবি শাহেদ কায়েস গণমাধ্যমকে বলেন, ‘চিত্তরঞ্জন সাহা একুশের চেতনাকে ধারণ করে কিন্তু বাংলা একাডেমিতে এই বইমেলা শুরু করেছিলেন। ফলে এখান থেকে মেলা সরিয়ে নেয়া কোনোভাবেই যৌক্তিক হবে না।’

বাংলাদেশের বই ও বইমেলা নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে’মন্তব্য করেছেন লেখক মাহবুব মোর্শেদ। তিনি বলেন, ‘বইমেলা আয়োজনের স্থান একুশের স্মৃতি বিজড়িত বাংলা একডেমি ও সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই রাখতে হবে। কোনো অজুহাতেই এটা স্থানান্তর বা বন্ধ করা যাবে না। একুশে বই মেলার জাতীয় চরিত্র ক্ষুণ্ণ করা যাবে না। বাংলাদেশে প্রকাশিত বই ছাড়া অন্য দেশে প্রকাশিত বই এ মেলায় বিক্রি ও প্রদর্শন করা যাবে না।’

১৯৭২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি ভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে বাংলা একাডেমির গেইটে চট বিছিয়ে বই বিক্রি শুরু করেন প্রকাশনা সংস্থা মুক্তধারার প্রতিষ্ঠাতা চিত্তরঞ্জন সাহা। ১৯৭৪ সালে বাংলা একাডেমির একুশের অনুষ্ঠানমালার সাথে সঙ্গতি রেখে একাডেমির ভেতরে ছোট একটি স্টল স্থাপন করে বই বেচে মুক্তধারা। ১৯৭৭ সালে মুক্তধারার সঙ্গে আরও অনেকে যোগ দেয়, সেই থেকে একুশে বইমেলার সূচনা। বিগত এক দশক ধরে বাংলা একাডেমি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই হচ্ছে বইমেলা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App