×

জাতীয়

পুলিশ হেফাজতে বডিবিল্ডারের মৃত্যুতে ব্যবস্থার নির্দেশ কমিশনের

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:৪৪ পিএম

পুলিশ হেফাজতে বডিবিল্ডারের মৃত্যুতে ব্যবস্থার নির্দেশ কমিশনের

পুলিশ হেফাজতে বডিবিল্ডার ফারুকের মৃত্যুর অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।

মানবাধিকার কমিশনের উপ-পরিচালক ফারহানা সাঈদ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ৮ ফেব্রুয়ারি বিভিন্ন গণমাধ্যমে ‘পুলিশ হেফাজতে বডিবিল্ডার ফারুকের মৃত্যু’  শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনের প্রতি জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে।

এ ব্যাপারে কমিশন চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, অভিযোগের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুতর ও ঘটনাটি সত্য হয়ে থাকলে তা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন মর্মে কমিশন মনে করে। হেফাজতে নির্যাতন বা মৃত্যুর ঘটনা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তসাপেক্ষে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করা আবশ্যক।

এ ঘটনার বিষয়ে জরুরি ভিত্তিতে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে কমিশনের নিকট প্রতিবেদন দাখিলের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিবকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

ফারুকের মৃত্যুর ঘটনায় স্ত্রীর মামলা

নিহত ফারুকের স্ত্রী ইমা আক্তার হ্যাপী দায়ের করা মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত ১২ জানুয়ারি রাত সাড়ে ৯টার দিকে ফারুক হোসেন খাজা দেওয়ান সিং লেন লালবাগের বাসা থেকে ব্যক্তিগত কাজে বের হন। এর এক ঘণ্টা পর ফারুক হোসেন স্ত্রী হ্যাপীকে ফোন দিয়ে জানান, তাকে সন্দেহজনকভাবে কায়েতটুলী ফাঁড়ির কয়েকজন পুলিশ সদস্য তাকে আটকে রেখে নির্যাতন করছেন। দুই বছর বয়সী সন্তানকে কোলে নিয়ে সেখানে ছুটে গিয়ে দেখেন, পুলিশের সদস্যরা ফারুককে মারধর করে আটকে রেখেছেন।

হ্যাপী তখন উপস্থিত (এসআই) ইমদাদুল হক, মাসুদ রানা, বুলবুল আহমেদসহ অন্যদের হাত-পা ধরে স্বামীকে ছেড়ে দেয়ার আকুতি জানান। তখন ইমদাদুল হক তাকে বলেন, ফারুক অনেক বড় ক্রিমিনাল, তাদের গালিগালাজ করেছেন। তাকে এমনিতে ছাড়া যাবে না। আর ছাড়তে হলে এক লাখ টাকা লাগবে।

তখন হ্যাপী জানান, তার স্বামী সিটি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শোয়েবের ব্যক্তিগত দেহরক্ষী। আগে বডিবিল্ডার ছিলেন, মিস্টার বাংলাদেশ হয়েছিলেন। তার ছোট তিন সন্তান রয়েছে। তার আয়েই সংসার চলে। তাকে ছেড়ে দিন। পরে তারা কমিয়ে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন এবং তাকে কুপ্রস্তাব দেন। রাজি না হওয়ায় ফারুককে আরও মারধর করেন।

আসামিরা দাবি করে জানান, ফারুক একজন মাদক ব্যবসায়ী। তারা কিছু করতে পারবেন না। এ বিষয়ে তাদের বড় স্যার জানেন। এর কিছুক্ষণ পর পুলিশের সদস্যরা ফারুককে মোটরসাইকেলে করে বংশাল থানার দিকে নিয়ে যান।

মামলায় আরও বলা হয়, থানায় গিয়ে হ্যাপী পরিদর্শক মাইনুল হোসেনের হাত-পা ধরে আকুতি-মিনতি করেন স্বামীকে ছেড়ে দিতে। তাতেও কাজ হয়নি। তারা হ্যাপীকে পরদিন সিএমএম আদালতে যোগাযোগ করতে বলেন।

পরদিন হ্যাপী আদালতে যান স্বামীর খবর নিতে। সেখানে স্বামীর সাক্ষাৎ পান। ফারুক স্ত্রীকে মারধরের কথা জানান এবং তার কিছু হলে আদালতে বিচার চাইতে বলেন। খোঁজ নিয়ে হ্যাপী জানতে পারেন, ফারুকের বিরুদ্ধে ১৫০ গ্রাম গাঁজার মামলা দেয়া হয়েছে। পরে সন্ধ্যা ৬টার দিকে তিনি বাসায় ফিরে যান।

১৫ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল থেকে এক ব্যক্তি হ্যাপীকে ফোন করে জানান, ফারুক মারা গেছেন। হাসপাতালের মর্গে গিয়ে স্বামীর লাশ দেখতে পান হ্যাপী। এ সময় তিনি ফারুকের গলায়, বুকে, পিঠে আঘাতের চিহ্ন দেখেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App