×

জাতীয়

প্রধানমন্ত্রী

একুশ আমাদের শিখিয়েছে মাথা নত না করার

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০২:২৯ পিএম

একুশ আমাদের শিখিয়েছে মাথা নত না করার

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কারো কাছে হাত পেতে নয়, আমাদেরকে আত্মমর্যাদা নিয়ে চলতে হবে। একুশ আমাদের শিখিয়েছে মাথা নত না করার। বিশ্ব দরবারে আত্মমর্যাদা নিয়ে আমরা মাথা উঁচু করে চলবো।

মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার ‘একুশে পদক’ তুলে দিয়ে সংক্ষিপ্ত ভাষণে এসব কথা বলেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন ১৫ আগস্টের পর বাঙালি, বাংলাদেশ, বাঙালি সংস্কৃতি সবই থমকে গিয়েছিল। ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস থেকেও বঙ্গবন্ধুর অবদানকে মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু পাকিস্তানি ইন্টেলিজেন্সের রিপোর্টেও উঠে এসেছিল সংগ্রাম পরিষদ গঠনে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের কথা। একুশে ফেব্রুয়ারি ধর্মঘট ডাকার নির্দেশনা দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। কিন্তু অনেকে বলে জেলে ছিলেন, কিন্তু জেলে ছিলেন কেন? ভাষা আন্দোলনের জন্যই তো ছিলেন। এদেশের প্রতিটি সংগ্রামে বঙ্গবন্ধুর অবদান রয়ে গেছে। আমাদের যা কিছু অর্জন, তা সব কিছুই সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে, বিজয় অর্জন করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের পর আমাদের ইতিহাস বিকৃত হওয়ার পালা শুরু হয়েছিল। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর বিকৃতি ইতিহাস থেকে মানুষকে মুক্ত করতে পেরেছি। আজকে আমাদের ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস যেমন জেনেছে মানুষ, তেমনি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসও জেনেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬ সালে যখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে, তখন কানাডায় প্রবাসী বাংলাদেশি সালাম ও রফিক নামে দুজন তারা, কয়েকটি দেশে যারা মাতৃভাষায় জন্য সংগ্রাম করছে, মাতৃভাষাকে মর্যাদা দেয়ার জন্য সংগ্রাম করছে তারা জাতিসংঘে একটা প্রস্তাব পাঠায় যে, ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস করতে। কিন্তু কোনো সংগঠন থেকে প্রস্তাব নেয় না জাতিসংঘ। সদস্য রাষ্ট্র থেকে প্রস্তাব যেতে হয় এ বিষয়ে। এ কথাটা শোনার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেয়া হয় এবং আমরা প্রস্তাব পাঠাই সেখানে। তারপর এটা গৃহীত হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে আমরা গর্বের সঙ্গে বলতে পারি যে, ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালন করতে পারছি, ইউনেস্কোর স্বীকৃত। এখন শুধু আমরা না, মাতৃভাষার জন্য রক্তদান করে আমাদের যারা ত্যাগ করে গেছেন নিজের জীবন,  মহান আত্মত্যাগ করে গেছেন। তাদের সেই মহান আত্মত্যাগের মাধ্যমে মহৎ আত্মত্যাগ করতে পেরেছি। আজকে ২১ ফেব্রুয়ারি সারা বিশ্বের কাছে সমাদৃত এবং সবাই আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা হিসেবে স্বীকার ও পালন করে।

শেখ হাসিনা বলেন, এবছর যারা একুশে পদক পেলেন আজ যাদের পুরস্কার দেয়া হয়েছে তাদেরকে আমি অভিনন্দন জানাই। আমরা সমাজের উন্নয়নের জন্য কাজ করি। এখানে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সমাজের জন্য অবদান রেখেছেন, তাদের সম্মাননা দিতে পেরে আমরা খুশি। তবে সবাইকে তো দেয়া সম্ভব না, তাই যতটুকু পারি সেটা দেয়া হচ্ছে। এ সময় দই বিক্রি করে স্কুল-পাঠাগার নির্মাণকারীর গল্প তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী তাকে আন্তরিক ধন্যবাদও জানান।  

শেখ হাসিনা বলেন, কারো কাছে হাত পেতে নয়, আত্মমর্যাদা নিয়ে চলতে হবে আমাদের। একুশ আমাদের শিখিয়েছে মাথা উঁচু করে চলতে। বিজয়ী জাতি হিসেবে চলতে চাই। এই কথাটা সবাইকে মনে রাখতে হবে। আজ আমরা এটুকু দাবি করতে পারি, বাঙালি এখন বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে চলতে পারে। সেই মর্যাদা আমরা ফিরিয়ে এনেছি। এই মর্যাদা সমুন্নত রেখে আগামী দিনে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে দেশকে। কারো কাছে হাত পেতে নয়, ভিক্ষা করে নয়, বিশ্ব দরবারে আত্মমর্যাদা নিয়ে মাথা উঁচু করে চলব আমরা। একুশ আমাদের শিখিয়েছে মাথা নত না করার।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App