×

জাতীয়

স্বাধীন তদন্ত কমিশনে জিয়ার বিচার চেয়েছে মায়ের কান্না

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৫:৪৩ পিএম

স্বাধীন তদন্ত কমিশনে জিয়ার বিচার চেয়েছে মায়ের কান্না

জাতীয় সংসদ ভবন এলাকা থেকে জিয়াউর রহমানের কবর অপসারণের পাশাপাশি তার মরণোত্তর বিচারে স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠনের দাবি জানিয়েছে মায়ের কান্না। সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক নুরে আলমের সঞ্চালনায় মায়ের কান্নার সভাপতি মো. কামরুজ্জামান মিঞা লেলিনের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে ১৯৭৭ সালের ২ অক্টোবর সেনা ও বিমানবাহিনীর কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ও চাকরিচ্যুত সদস্য এবং ফাঁসি দেয়া সদস্যদের পরিবারবর্গ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে তৎকালীন বিমানবাহিনীর কর্পোরাল লরেন্স রোজিও জেমস বলেন, বিনাবিচারে শত শত বিমানবাহিনী সদস্যকে এসময় হত্যা করা হয়েছে। প্রথমে ফাঁসি দেয়া হয়েছে, পরে তার রায় প্রকাশ করা হয়েছে। আইনকে তোয়াক্কা না করে জিয়াউর রহমান এ জঘন্যতম কাজ করেছেন। স্বাধীন দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যার পর লাশ পরিবারকে দেয়া হয়নি। দেড়-দুই হাজার মানুষকে গুম করা হয়েছে। ৭৭ বছরেও আমরা এর সুবিচার পেলাম না। তিনি জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচারের দাবি করেন।

১৯৭৭ সালের এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কর্পোরাল নূরুল ইসলাম বলেন, আমরা কয়েকজন বেঁচে আছি বাকিদের ফাঁসি হয়ে গেছে। আমাকে চোখ, হাত-পা বেধে অমানুষিক নির্যাতন করেছে। পরে ৪ বছর সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তিনিও জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচার দাবি করেন।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, মুক্তিযোদ্ধাদের তড়িঘড়ি করে ফাঁসি দেয়ার আগে আত্মপক্ষ সমর্থন কিংবা আইনজীবী নিয়োগের কোনো সুযোগ দেয়া হয়নি। অথচ এই মানুষগুলোর ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার ছিল। ১৯৭৭ সালের অক্টোবর মাসে দীর্ঘদিন পরিবারগুলোর কাছে এই তথ্য অজানা ছিল। জানা ছিল না কোথায় তাদের কবর। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ফাঁসি কার্যকর হওয়া ১২১ জনের তালিকা পাওয়া গেছে। কুমিল্লা কারাগারে ৭২ জনের নামের তালিকা পাওয়া গেছে। বগুড়া কারাগারে ১৬ জন, রংপুরে ৭ জনের নামের তালিকা পাওয়া গেছে। কিন্তু বিমানবাহিনী সদর দপ্তরের হিসাবে ১৯৭৭ সালের ২ অক্টোবর পরবর্তী সময়ে ৫৬১ জন সেনা নিখোঁজ হয়েছেন।

মায়ের কান্নার ৫ দফা দাবি :

১. ১৯৭৭ সালের ২ অক্টোবর তথাকথিত সামরিক বিদ্রোহ দমনের নামে যাদের অন্যায়ভাবে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে তাদের কোথায় সমাহিত করা হয়েছে রাষ্ট্রীয়ভাবে সেই স্থান চিহ্নিত করে দিতে হবে।

২. জিয়া কর্তৃক যেসব বীর মুক্তিযোদ্ধা সেনা ও বিমানবাহিনীর সদস্যদের অন্যায়ভাবে ফাঁসি দেয়া হয়েছে তাদের নামের তালিকা প্রকাশ এবং শহীদ হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে।

৩. অন্যায়ভাবে ফাঁসি দেওয়া, কারাদণ্ড এবং চাকরিচ্যুত সেনা ও বিমান বাহিনীর সদস্যদের, স্ব-স্ব পদে সর্বোচ্চ র‍্যাংকে পদোন্নতি দেখিয়ে বর্তমান স্কেলে বেতন-ভাতা, পেনশনসহ পরিবারের সদস্যদের পুনর্বাসন ও সব সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।

৪. জিয়ার মরণোত্তর বিচার করতে স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন করতে হবে।

৫. জিয়ার কবর জাতীয় সংসদ ভবন এলাকা থেকে অপসারণ করতে হবে। অন্যথায় মায়ের কান্না সংগঠনের সদস্যরা কবর অপসারণের প্রাথমিক কাজ শুরু করবেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App