×

জাতীয়

চাঁদাবাজি আর মজুতদারি বন্ধ করতে হবে

সমালোচকরা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারেনি : প্রধানমন্ত্রী

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:০৮ পিএম

সমালোচকরা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারেনি : প্রধানমন্ত্রী

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নির্বাচন যাতে প্রশ্নবিদ্ধ না হয়, তার জন্য নির্বাচন উন্মুক্ত করে দিয়েছিলাম। এই নির্বাচনকে কেউ প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারেনি। যারা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায়, তাদের কাছে প্রশ্ন, কী কী কারণে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি সেটা বলতে হবে।  

শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) গণভবনে আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় তিনি এ কথা বলেন। বর্ধিত সভায় সূচনা বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। 

আরো পড়ুন: ডলারের সংকট এখন ঠিক সেরকম নেই

প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনে নৌকা আর স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে প্রতিদ্বন্দিতা হয়েছে। নির্বাচন শেষ, এখন সেটা ভুলে যেতে হবে। সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে। যেখানে যেখানে সমস্যা হবে, আমাদের কেন্দ্রীয় কমিটি সেগুলো বসে সমাধান করবে। 

তিনি বলেন, একে অপরের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। আমি চাই এই গণভবনে বসে তা মিটিয়ে ফেলা হোক। তাহলে কেউ দূরভীসন্ধি নিয়ে আর দেশের ক্ষতি করতে পারবে না। আর যেন কারো মধ্যে কোন ক্ষোভ না থাকে। 

শেখ হাসিনা বলেন, সামনে উপজেলা নির্বাচন। এই নির্বাচনে কোন সংঘাত আমি চাই না। এই নির্বাচনে প্রমাণ হবে কারা জনগণের জন্য কতটুকু কাজ করেছে। যারা সংঘাত করবে, তাদেরকে কোন ছাড় দেয়া হবে না।

কৃষক যেন ন্যায্য মূল্য পায় তা নিশ্চিত করার কথা বলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মালামাল যেন চাঁদাবাজি এবং মজুদদারি করতে না পারে সেদিকে কঠোর দৃষ্টি দিতে হবে। মালামাল যেখানে রাখা হয় বা নামানো হয় সেখানে যেন কেউ চাঁদাবাজি করতে না পারে, সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। কারণ আপনারা জনপ্রতিনিধি, এই দায়িত্ব আপনাদেরকেই নিতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ যেন ক্ষমতায় আসতে না পারে সেজন্য বারবার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়েছিল। সরকার যে জনগণের সেটা একমাত্র আওয়ামীলীগই প্রমাণ করেছে। একটানা চারবার দেশ পরিচালনা করায়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৪, ২০১৮ সালে নির্বাচন যেন হতে পারে সেজন্য চক্রান্ত হয়েছিল। এবারের নির্বাচনও ঠেকাতে বহু চেষ্টা হয়েছিল। তিনি বলেন, এবারের নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়েছে। যারা বলেন নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হয়নি। তাদের কাছে আমার প্রশ্ন কীভাবে, কোথায় নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি, সেই প্রমাণ আপনাদের দিতে হবে। তিনি বলেন, বিশ্বের বহু বড় দেশে নির্বাচন গ্রহণযোগ্যতা পায়নি, এমনকি খুনোখুনির ঘটনাও ঘটেছে। আর আমাদের দেশে একটা শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়েছে। এর জন্য আমি জনপ্রশাসনসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করি বাহিনী সহ সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক চেতনার দেশ, এখানে সবাই নিজ নিজ ধর্ম পালন করবে। প্রত্যেকের অধিকার সুরক্ষিত করতে হবে। তিনি বলেন, আমাকে অনেকে এসে বলেন, আপনি ঘোষণা করে দেন যে কাদিয়ানীরা মুসলমান না। আমি তো সেটা করতে পারি না। সে ওহি তো আর আমার কাছে আসেনি। আমি তো সেটা করতে পারি না। বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক দেশ। এখানে যার যার ধর্ম সে তার তার ধর্ম পালন করবে। 

সরকারের ধারাবাহিকতা থাকলে দেশের উন্নয়ন হয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটা বিষয় প্রমাণ হয়েছে, যে একটা দেশের সরকার ধারাবাহিকভাবে থাকলে সে দেশের উন্নয়ন হয়। আমরা সেটা প্রমাণ করেছি। উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালে যখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে, তখন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ বলেছিলেন একটা দেশে একটা সরকার একটানা ১৫ থেকে ২০ বছর সরকারে থাকলে, সে দেশের উন্নয়ন হয়। তার কথাটি সঠিক। কারণ ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে আমরা যা যা উন্নয়ন করেছি, ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এসে তা ধ্বংস করে দিয়েছে। ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে একটানা সরকার পরিচালনা করে আসছি বলেই প্রকৃতপক্ষে দেশটার উন্নয়ন হয়েছে। এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে হবে।

জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনে জনগণকে যেসব ওয়াদা দিয়েছেন, সেগুলো অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে হবে। কোন যেন বদনাম না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে যে ক্ষমতা ভোগের নয়, ত্যাগের। কারণ ওই ধনসম্পদ কোন কাজে আসে না। মানুষের জন্য কাজ করে তাদের ভালোবাসা অর্জন করাটাই সবচেয়ে বড়। সেজন্য জনগণকে দেয়া ওয়াদা পালন করতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, এবার বিএনপি নেতারা আন্দোলনে গাড়ি-ঘোড়া পুড়িয়ে নিজেরা ছবি তুলেছে। সেই প্রমাণ রয়ে গেছে। ছবি তুলে তারা সেই লন্ডনে পাঠিয়ে দিত কারণ ছবি তুলে তারা সেই লন্ডনে পাঠিয়ে দিত। তো এদের বিরুদ্ধে যেন মামলা হয়। সেই মামলাগুলো দ্রুত শেষ করতে হবে। কেউ যেন ছাড় না পায়।

তিনি আরো বলেন, দুর্নীতি করে টাকা কামালে, সেই টাকা কোন কাজে আসে না। ছেলেমেয়েরা বিপথে যাবে। সেটা খেয়াল রাখতে হবে। 

এ সময় আওয়ামী লীগ সহ সহযোগী এবং ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোকে সাংগঠনিকভাবে আরো শক্তিশালী করার পরামর্শ দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, একে অপরের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। আমি চাই এই গণভবনে বসে ফেলা হোক। আর যেন কারো মধ্যে কোন খোপ না থাকে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App