×

জাতীয়

গালফ এয়ার পাইলটের মৃত্যু: পিবিআই তদন্তকারীকে হুমকি

Icon

কাগজ ডেস্ক

প্রকাশ: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৫:২৭ পিএম

গালফ এয়ার পাইলটের মৃত্যু: পিবিআই তদন্তকারীকে হুমকি

গালফ এয়ারের পাইলট ক্যাপ্টেন মোহান্নাদ আল হিন্দি ডিউটিরত এবং ইউনিফর্ম পরিহিত অবস্থায় হঠাৎ হার্ট অ্যাটাকের কারণে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর তাকে ইউনাইটেড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে ভুল পরীক্ষা ও চিকিৎসায় বিলম্বের কারণে ৮ ঘণ্টা পর তিনি মৃত্যুমুখে পতিত হন।  

প্রয়াত পাইলট মোহান্নাদ আল হিন্দির বোন তালা এলহেন্ডি এই ঘটনায় একটি একটি ফৌজদারি মামলা করেন। এরপর আদালত পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ও বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কলেজকে (বিএমডিসি) এ বিষয়ে এই মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলেন। 

পিবিআই গত ১৬ নভেম্বর ২০২৩ ঢাকার চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে তাদের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। পাইলট ক্যাপ্টেন মোহান্নাদ আল হিন্দির চিকিৎসায় ইউনাইটেড হাসপাতালের অবহেলা ও ইউনাইটেড হাসপাতাল এবং গালফ এয়ারের দেওয়া মিথ্যা বিবৃতির বিবরণ দিয়ে পিবিআই বিস্তারিত প্রতিবেদন জমা দেয়। তদন্তে বলা হয়, ক্যাপ্টেন মোহান্নাদ আল হিন্দিকে ভোর সাড়ে ৪টায় ইউনাইটেড হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। 

কিন্তু ইউনাইটেডের প্রতিবেদন ও গালফ এয়ারের কো-পাইলট খলিল এবং কান্ট্রি ম্যানেজার ইসা শাহ হাসপাতালে নিয়ে আসার সময়ের বিষয়ে মিথ্যা বিবৃতি দেয় পিবিআইকে। এমনকি, ইউনাইটেড হাসপাতাল পিবিআইকে তাদের বিবৃতিতে আসার সময় সম্পর্কে ভুল তথ্যও শেয়ার করেছে। ইউনাইটেডের ডাক্তাররা জানিয়েছেন, ক্যাপ্টেন আল হিন্দিকে সকাল সাড়ে ৫টায় হাসপাতালে আনা হয়, সত্যিকারের আগমনের সময়ের চেয়ে এক ঘণ্টা কম।  

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, ক্যাপ্টেনের কো-পাইলট এবং মূল সাক্ষী খলিলকে উপস্থাপন করতে গালফ এয়ারের অস্বীকৃতি এবং ক্যাপ্টেনের মেডিকেল ইতিহাস বা সনদপত্র সরবরাহ করতে কান্ট্রি ম্যানেজার ইসা শাহের অস্বীকৃতির কারণে একটি ন্যায্য প্রতিবেদন তৈরি করা যায়নি।

প্রতিবেদনে দেখা গেছে যে অভিযুক্ত ডা. ওমর ফারুকের বিরুদ্ধে অবহেলা প্রমাণ করা যায়নি কারণ ইউনাইটেডের জুনিয়র ডাক্তাররা হাসপাতালে না থাকায় তার নাম ব্যবহার করেছেন যার জন্য অসুস্থ ক্যাপ্টেনের পরিবার প্রতারণার মামলা করবে। এই প্রতারণার কারণে ওমর ফারুককে প্রাথমিকভাবে অভিযুক্ত করা হলেও তাকে খালাস দেওয়া হয়েছিল। 

প্রতিবেদনে জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা. তুনাগিনার অবহেলা এবং পরামর্শের জন্য একজন সিনিয়র কার্ডিওলজিস্টকে ডাকতে বা পিসিআই করতে তার অস্বীকৃতি তুলে ধরা হয়েছে। ক্যাপ্টেন মোহান্নাদ আলহিন্দির পরিবার ডা. তুনাগিনা এবং ডা. সালাহর বিরুদ্ধে অপরাধমূলক হত্যাকাণ্ড এবং ষড়যন্ত্রের জন্য ফৌজদারি মামলা দায়ের করবে, কারণ তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, তারা দুজনই ক্যাপ্টেনকে সকাল ৯টা পর্যন্ত বিনা চিকিৎসায় রেখেছিলেন। তার বোন তালা জোসেফানো আশা করেন, বিএমডিসির রিপোর্ট এই বিষয়গুলো পরিষ্কার করবে। 

তালা জোসেফানো আরো বলেছেন, পিবিআই-এর প্রধান তদন্তকারী তাকে বার্তা পাঠিয়েছিলেন এবং তাকে বলেছিলেন যে, কিভাবে তাকে হুমকি ও হয়রানি করা হয়েছিল এবং ক্যাপ্টেন মোহান্নাদ আলহিন্দি অবহেলার কারণে নিহত হয়েছেন–এ বিষয়ে তিনি রিপোর্টে সত্য লিখতে পারেননি। কারণ তাকে তার পরিবার নিয়ে হুমকি দেওয়া হয়েছিল এবং তিনি তার চাকরি করার চেষ্টা করার কারণে তাকে তার চাকরি থেকে বদলি করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন। 

“তদন্তকারী আমাকে বলেছিলেন যে আমি কখনোই আমার ভাইয়ের জন্য ন্যায়বিচার পাবো না কারণ ইউনাইটেড এবং গালফ এয়ার প্রচুর অর্থ ব্যয় করেছে এবং প্রভাব বিস্তার করেছে। তবে আমরা বিশ্বাস করি যে মামলাটি দাফন করতে এই অভিযোগগুলো তদন্তকারী, ইউনাইটেড হাসপাতাল এবং গালফ এয়ারের মধ্যে যোগসাজশ হয়েছিল। আমরা বিশ্বাস করি, বিচার ব্যবস্থা ন্যায্য এবং আমরা বিচারকের সিদ্ধান্তে ভরসা রাখি” বলেন তালা জোসেফানো। তদন্তকারী এবং তালার মধ্যে অডিও এবং টেক্সট বার্তায় তদন্তকারীকে হুমকি দেওয়া এবং দুর্নীতি সম্পর্কে বলার প্রমাণ রয়েছে। 

সংবাদ বিজ্ঞপ্তি

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App