×

জাতীয়

এবার নতুন সংকটে বিএনপি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:১১ পিএম

এবার নতুন সংকটে বিএনপি

সরকারবিরোধী আন্দোলনের সফলতা নিয়ে আশাবাদী হতে পারছে না বিএনপির তৃণমূলের নেতারা। কর্মসূচি সফলে কেন্দ্রীয় নেতাদের সমন্বয়ের অভাবও দেখছেন অনেকে। তাদের মতে, হাইকমান্ডের নাম ব্যবহার করে আন্দোলনকে সঠিক পথে নিতে দিচ্ছে না সংশ্লিষ্ট কয়েকজন নেতা। এছাড়া ভোটের আগে আত্মগোপনে যাওয়া অনেক নেতা এখনো কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছে না, যা নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন।

এমন পরিস্থিতিতে আবারো নতুন কর্মসূচি নিয়ে ভাবছে বিএনপি। বিশ্ব ইজতেমা, এসএসসি পরীক্ষা, রোজা ও ঈদকে সামনে রেখে কর্মসূচি নির্ধারণ করবে দলটি। একদফা দাবির পাশাপাশি জনসম্পৃক্ত ইস্যুতে শিগগিরই কর্মসূচি ঘোষণা দেয়ার কথা রয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে ।

দলটির একাধিক নেতা জানান, আন্দোলনের এই সময়ে আবার একটি ‘বিশেষ চক্র’ অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের কমিটি ভেঙে দেয়ার ষড়যন্ত্রে নেমেছে। এ ৩ সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের নামে নানা অপ্রচারও চালাচ্ছেন তারা। অথচ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটির মেয়াদ এখনো রয়েছে। নেতারা জানান, মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই কমিটি ভাঙলে তা হবে আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। কেননা চলমান আন্দোলনে মূল দল বিএনপির চেয়ে এসব অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সারা দেশে ভূমিকা ছিল চোখে পড়ার মতো। এখন কমিটি ভাঙলে তাদের ভূমিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হবে। এতে মনোবল হারাবে নেতাকর্মীরা। যার প্রভাব পড়তে পারে সামনের আন্দোলনে। বর্তমান পরিস্থিতিতে ওই বিশেষ চক্রটি কী উদ্দেশ্যে বা কাদের এজেন্ডা বাস্তবায়নে এসব করছেন তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূল নেতারা। এ নিয়ে অঙ্গ সংগঠনে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

এদিকে সতেরো বছর ক্ষমতার বাইরে বিএনপি। এক যুগেরও বেশি সময় ধরে আন্দোলন করছে দলটি। এরই মধ্যে তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন করে টানা চতুর্থবারের মতো ক্ষমতায় আওয়ামী লীগ। দীর্ঘ আন্দোলনেও নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি। এজন্য দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের দায়ী করছেন তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। যদিও আন্দোলনের অংশ হিসাবে ভোট বর্জনের ডাকে জনগণ সাড়া দিয়েছে দাবি করে বিএনপি নেতা বলছেন, এটি তাদের বড় সফলতা। তারা আন্দোলন করছেন গণতন্ত্র ও মানুষের মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার জন্য। এ দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা রাজপথেই থাকবেন।

তুণমূল নেতাকর্মীদের অভিযোগ, একদফার আন্দোলনে ধারাবাহিক কর্মসূচি ঘোষণা করেও মাঠে নামেনি কেন্দ্রীয় নেতারা। অধিকাংশ শীর্ষ নেতা ছিলেন আত্মগোপনে। কর্মসূচি বাস্তবায়নে ছিল না কোনো সমন্বয়। তাদের সঠিক সময় দেয়া হয়নি কোনো বার্তা। একের পর এক কর্মসূচি ঘোষণা করলেও দলীয় হাইকমান্ডের বরাত দিয়ে সক্রিয় নেতাদের গ্রেফতার এড়াতে আত্মগোপনের ‘ভিত্তিহীন’ বার্তা দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে এখন অনেকেই মুখ খুলেছেন। তাদের দাবি, কেন্দ্রীয় নেতারা আত্মগোপনে থেকে অনেক সময় তাদের বিভ্রান্তিমূলক তথ্য দিয়েছেন। যদিও সরকারবিরোধী আন্দোলনে ব্যর্থতার দায় দেখছেন না বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা। তারা বলছেন, দলীয় হাইকমান্ডের নির্দেশেই আত্মগোপনে ছিলেন। শীর্ষ ও কেন্দ্রীয় নেতারা গ্রেফতার হলে সরকারবিরোধী আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হতো না।

জানতে চাইলে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘একদফার আন্দোলনে তৃণমূলের সঙ্গে কেন্দ্রীয় নেতাদের কোনো সমন্বয় ছিল না, বিষয়টি সঠিক নয়। সরকার এমন একটি পরিস্থিতি তৈরি করেছে, তার মধ্যেও জুমে আমাদের শীর্ষ নেতারা নিয়মিত যোগাযোগ করেছেন। তৃণমূলের নেতাদের সঙ্গে সার্বিক বিষয়ে কথা বলেছেন। আমাকেও কর্মসূচি ঘোষণা করতে হয়েছে। প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও কর্মসূচি পালন করেছি।’

আরো পড়ুন: রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য অনুভূতিতে আঘাত করেছে -বিএনপি

তৃণমূলের নেতাদের অভিযোগ, ২৮ অক্টোবর নয়াপল্টনের মহাসমাবেশ পণ্ডের পর থেকেই কেন্দ্রীয় নেতারা আত্মগোপনে চলে যান। যেসব কেন্দ্রীয় নেতা জেলা ও মহানগরের দায়িত্বে ছিলেন তাদেরও এই সময়ে পাওয়া যায়নি। উলটো ধারাবাহিক হরতাল, অবরোধে কেন্দ্রীয় নেতারা মাঠের সক্রিয় নেতাদের গ্রেফতার এড়িয়ে থাকার নির্দেশনা দিয়েছেন। এতে অনেকেই আন্দোলনের মাঠ ছেড়ে আত্মাগোপনে গেছেন। এছাড়া তৃণমূলের সঙ্গে কোনো ধরনের সমন্বয় ছাড়া কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। একদফার আন্দোলনে যেসব কর্মসূচি ঘোষণা হয়েছে, বাস্তবে তা কতটুকু বাস্তবায়ন সম্ভব সে বিষয়গুলো দেখা হয়নি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App