×

জাতীয়

‘আমাদের খুশি করেন, আপনার স্বামীকে ছেড়ে দেব’

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১১:৫৯ এএম

‘আমাদের খুশি করেন, আপনার স্বামীকে ছেড়ে দেব’

পুলিশের নির্যাতনে বডিবিল্ডার ফারুক হোসেনের মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনায় রাজধানীর বংশাল থানার ওসি মাইনুল ইসলামসহ ৫ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বুধবার (৩১ জানুয়ারি) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. আসাদুজ্জামানের আদালতে এ মামলাটি করেন ফারুক হোসেনের স্ত্রী ইমা আক্তার হ্যাপী। 

বংশাল থানার ওসি মাইনুল ইসলাম ছাড়াও মামলার অপর আসামিরা হলেন, বংশাল থানার এসআই ইমদাদুল হক, আবু সালেহ, মাসুদ রানা ও বুলবুল আহমেদ।

ভুক্তভোগী ফারুকের স্ত্রী গণমাধ্যমকে জানান, কায়েতটুলি ফাঁড়ি থেকে আমার স্বামীকে ছেড়ে দিতে প্রথমে ১ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে, পরে বংশাল থানার এসআই ইমদাদুল হক ও মাসুদ রানা আমাকে কুপ্রস্তাব দেয়।

নিহতের স্ত্রী ইমা আক্তার বলেন, ওই দুজন (ইমদাদুল ও মাসুদ রানা) আমাকে কুপ্রস্তাব দিয়েছে। ওরা বলছে, ‘আমাদের দিকে একটু দেখেন, আমাদের খুশি করেন, আমরা আপনার স্বামীকে ছেড়ে দেব।’ 

নিহত ফারুকের স্ত্রী মামলায় অভিযোগ করেন, গত ১২ জানুয়ারি রাত সাড়ে ৯টার দিকে ফারুক হোসেন খাজা দেওয়ান সিং লেন লালবাগের বাসা থেকে ব্যক্তিগত কাজে বের হন। এর ঠিক ১ ঘণ্টা পরেই ফারুক হোসেন তার স্ত্রী হ্যাপীকে ফোন দিয়ে জানান, তাকে সন্দেহজনকভাবে কায়েতটুলী ফাঁড়ির কতিপয় পুলিশ গ্রেফতার করে আটকে রেখেছে এবং নির্যাতন করছে। পরে ২ বছরের সন্তানকে কোলে নিয়ে হ্যাপী পুলিশ ফাঁড়িতে ছুটে যান। দেখেন ফারুককে পুলিশ সদস্যরা মারধর করে আটকে রেখেছে। হ্যাপী সেখানে উপস্থিত এসআই ইমদাদুল হক, মাসুদ রানা, বুলবুল আহমেদসহ অন্যদের পা ধরে তার স্বামীকে ছেড়ে দেয়ার অনুরোধ করেন। 

এসময় ইমদাদুল হক তাকে বলেন, ফারুক অনেক বড় ক্রিমিনাল, তাদের গালিগালাজ করেছে। এমনিতে ছাড়া যাবে না। ওকে ছাড়তে হলে ১ লাখ টাকা লাগবে। পরে এক লাখ থেকে কমিয়ে তারা ৫০ হাজার টাকা দাবি করে এবং হ্যাপিকে কুপ্রস্তাব দেন। রাজি না হওয়ায় আসামিরা ফারুককে ব্যাপক মারধর করে। 

অভিযোগে হ্যাপি আরো উল্লেখ করেন, তিনি  মাইনুল হোসেনের হাত-পা ধরে আকুতি-মিনতি করে তার স্বামীকে ছেড়ে দিতে অনুরোধ করেন। কিন্তু তারা হ্যাপিকে পর দিন সিএমএম আদালতে যোগাযোগ করতে বলেন। পর দিন কোর্টে গেলে অনেক কষ্টে স্বামীর সাক্ষাৎ পান। এসময় ফারুক স্ত্রীকে মারধরের কথা জানান এবং তার কিছু হলে আদালতে বিচার চাইতে বলেন।

আরো পড়ুন: ৫ পুলিশের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ

পরে হ্যাপি জানতে পারেন, ফারুকের বিরুদ্ধে ১৫০ গ্রাম গাজার মামলা দেয়া হয়েছে। বিকেল ৫টা থেকে সন্ধ্যা ৬টার দিকে তিনি বাসায় ফিরে আসেন। ১৫ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে এক ব্যক্তি হ্যাপীকে জানান, ফারুক মারা গেছেন। পরে হাসপাতালের মর্গে গিয়ে তিনি স্বামীর মরদেহ দেখতে পান। ফারুকের গলায়, বুকে ও পিঠে আঘাতের চিহ্ন দেখতে পান তিনি।

আদালত অভিযোগটি তদন্তে করতে ডিবি পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে আগামী ২৮ মার্চ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। 

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App