×

জাতীয়

সিএনএনকে মেয়ে মনিকা ইউনুস

সরকার-ড. ইউনূস একসঙ্গে কাজ করার সময় এসেছে

Icon

কাগজ ডেস্ক

প্রকাশ: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০২:৩৪ এএম

শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে অভিহিত করেছেন তার কন্যা মনিকা ইউনুস। সেইসঙ্গে তিনি বলেছেন, ড. ইউনূস তো সরকারের সঙ্গেও কাজ করেছেন। আমার মনে হয়, এসব অভিযোগ-মামলায় সময় নষ্ট না করে আবারো সরকার ও ড. ইউনূসের একসঙ্গে কাজ করার সময় এসেছে। গত মঙ্গলবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের ক্রিশ্চিয়ান আমানপোরকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।

মনিকা বলেন, আমি যতদূর জানি কোনো এক সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ড. ইউনূস একসঙ্গে কাজ করেছেন। শুধু গ্রামীণ কিংবা সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানগুলোর ভালোর জন্যই নয়, যদি তারা আবারও একসঙ্গে কাজ করেন, তাহলে সেটা চমৎকার হবে।

ইউনূস কন্যা বলেন, অনেক আলোকিত ব্যক্তি (প্রায় ১৫০ জন নোবেল বিজয়ী এবং বিভিন্ন সেক্টরের বিশ্বনেতা গত বছর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে একটি খোলা চিঠি দিয়েছেন) তার সমর্থনে চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন। আমি মনে করি অনেকের মতো এই বিষয়ে কথা বলাটা আমার জন্য অপরিহার্য। ইউনূস ও তার সহকর্মীদের বিরুদ্ধে আনা এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং এর বিরুদ্ধে কথা বলাটা আমার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

অভিযোগগুলো সম্পর্কে জানতে চাইলে মনিকা ইউনূস বলেন, অভিযোগগুলো আসলেই সিভিল প্রকৃতির। এটা একটা কর্মসংস্থানের সমস্যা- যা সাধারণত দেওয়ানী আদালতে মোকাবিলা করা হবে, এটাকে অপরাধমূলক করা হয়েছে। তারা একেবারেই নির্বোধের মতো এটা করেছে। প্রকৃত অভিযোগে কারাদণ্ড হয় এবং এটাই সমস্যা।

দেওয়ানী অভিযোগের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, না, একেবারেই বৈধ নয়। তিনি এবং তার সহকর্মীরা শতভাগ নির্দোষ। এর জন্য আপনাকে তার মেয়ের কথা নিতে হবে না। আন্তর্জাতিক আইনজীবীরা আছেন, যারা এতে নজর রাখছেন। এটা একেবারে মিথ্যা।

বাংলাদেশ সরকারের কাছে তার প্রত্যাশা সম্পর্কে জানতে চাইলে মনিকা বলেন, আমার সবচেয়ে ভালো প্রত্যাশা হলো সমস্ত অভিযোগ প্রত্যাহার করা হোক। কেবল আমার বাবার নয়, বরং তার সহকর্মীদেরও। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং তিনি (শেখ হাসিনা) যে প্রস্তাবটি করেছিলেন আমার সেটা পছন্দ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেছেন, তিনি আন্তর্জাতিক আইনজীবী আনবেন এবং আন্তর্জাতিক আইনজীবী ও বিশেষজ্ঞদের উপস্থিতিতে পরিস্থিতির মূল্যায়নকে স্বাগত জানাবেন। আমার শতভাগ বিশ্বাস- যদি তাই করা হয়, তাহলে সব অভিযোগ একেবারে মুছে যাবে। কারণ সেখানে কোনো অপরাধই নেই।

তার বাবার রাজনীতিবিদ হওয়ার এবং নিজের দল গঠনের অভিযোগের বিষয়ে ইউনূস কন্যা বলেন, তিনি রাজনীতিবিদ নন। আমি মনে করি না, নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়ার পর এক মুহূর্তের জন্য তিনি এই সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা করেছিলেন। 

আমি মনে করি, তিনি একজনের একটি দল। তার কোনও রাজনৈতিক আকাংখা নেই। আমার মতে, যদি আবার একসঙ্গে কাজ করার সুযোগ দেয়া হয়, তাহলে সেটা চমৎকার হবে। বাংলাদেশের সুশীল সমাজে অনেক কিছু আছে, বাংলাদেশকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে- অর্থনৈতিক উন্নয়নের বাতিঘরে নেয়ার জন্য অনেক মানুষ কাজ করছেন। আর এসবের ওপর ফোকাস করা যেতে পারে। এসবের ওপর ফোকাস করা উচিত। আমি একজন আমেরিকান নাগরিক। কিন্তু আমার জন্ম বাংলাদেশে। আমি বাংলাদেশে গিয়েছি। সৃজনশীলতা, উদ্ভাবন, এই কারণেই লোকজন দেশে ফিরে যায়। কারণ তারা সেই সমস্ত উদ্ভাবনে মুগ্ধ হয়।

প্রসঙ্গত, গত ১ জানুয়ারি শ্রম আইন লঙ্ঘনের এক মামলায় ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চার আসামিকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন আদালত। রায় প্রদানকারী বিচারক শেখ মেরিনা সুলতানার স্বাক্ষরের পর ৮৪ পৃষ্ঠার এ রায় প্রকাশ করা হয়। তবে আপিল করার শর্তে ড. ইউনূসসহ আসামিদের ১ মাসের জামিন দেয়া হয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App