×

জাতীয়

প্রাণের মেলার দ্বার খুলবে আগামীকাল

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৩১ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০১ এএম

প্রাণের মেলার দ্বার খুলবে আগামীকাল
  • উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
  • ৬৫৩ প্রতিষ্ঠানের জন্য বরাদ্দ ৯৩৭ ইউনিট

‘পড়ো বই গড়ো দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’ প্রতিপাদ্যে মাসব্যাপী প্রাণের মেলার দ্বার খুলবে আগামীকাল। এতে ৬৩৫টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান বরাদ্দ পেয়েছে ৯৩৭টি ইউনিট। এবার প্রকাশনা সংস্থা বেড়েছে ৩৪টি। একাডেমি প্রাঙ্গণে ১২০টি প্রতিষ্ঠানকে ১৭৩টি ইউনিট এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৭৬৪টি ইউনিট বরাদ্দ পেয়েছে ৫১৫টি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠান। সবমিলিয়ে বরাবরের মতো এবারো বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে মেলার আয়োজন থাকছে। ভাষার মাসের প্রথমদিন  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত থেকে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৩টায় বইমেলা উদ্বোধন করবেন। 

মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) সকালে অমর একুশে বইমেলা-২০২৪ এর আয়োজক প্রতিষ্ঠান বাংলা একাডেমি আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। এতে বিস্তারিত তুলে ধরেন বইমেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য-সচিব কে এম মুজাহিদুল ইসলাম। বাংলা একাডেমির জনসংযোগ কর্মকর্তা কবি পিয়াস মজিদের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে এসময় উপস্থিত ছিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা, একাডেমির  সচিব মো. হাসান কবীর, জনসংযোগ-তথ্যপ্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ বিভাগের পরিচালক সমীর কুমার সরকার, বইমেলার সহযোগী প্রতিষ্ঠান বিকাশের সিএমও মীর নহবত আলী।

কে এম মুজাহিদুল ইসলাম জানান, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খলিল আহমদ। স্বাগত বক্তব্য দেবেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মুহম্মদ নূরুল হুদা। সভাপতিত্ব করবেন একাডেমির সভাপতি সেলিনা হোসেন। 

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলা একাডেমি প্রকাশিত ‘কালেক্টেড ওয়ার্কস অব শেখ মুজিবুর রহমান: ভলিউম-২’ বইসহ কয়েকটি নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই সঙ্গে ২০২৩ সালের বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার বিতরণ করবেন। 

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এবারের বইমেলা হবে বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রায় সাড়ে ১১ লাখ বর্গফুট জায়গায়। একাডেমি প্রাঙ্গণে একটি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৩৬টিসহ ৩৭টি প্যাভিলিয়ন থাকবে। গতবছর ৬০১ প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান বইমেলায় অংশ নিয়েছিল। সে হিসেবে এবার প্রকাশনা সংস্থা বেড়েছে ৩৪টি। এবারের বইমেলার বিন্যাস আগের মতোই থাকছে। তবে কিছু আঙ্গিকগত পরিবর্তন আনা হয়েছে। বিশেষত মেট্রোরেল স্টেশন থাকায় ‘বাহির পথ’ খানিকটা সরিয়ে নেয়া হয়েছে। তবে টিএসসি, দোয়েল চত্বর, ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্সটিটিউশন অংশ ও এমআরটি বেসিং প্লান্টসহ সবমিলে আটটি প্রবেশ ও প্রস্থান পথ রাখা হয়েছে।

এবারের খাবারের স্টলগুলো ইঞ্জিনিয়ারিং ইনিস্টিটিউশনের সীমানা-ঘেঁষে এমনভাবে বিন্যাস করা হয়েছে যাতে বইমেলায় আগত পাঠক ও ক্রেতাদের মনোযোগ বিঘ্নিত না হয়। এবারও মন্দির-গেটের ডান দিকে বড় পরিসরে শিশুচত্বর রাখা হয়েছে। লিটল ম্যাগাজিন চত্বর ১৭০টি স্টল বরাদ্দ নিয়ে স্থানান্তরিত হয়েছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের উন্মুক্ত মঞ্চের কাছে গাছতলায়। মেলায় থাকছে নামাজের স্থান, ওয়াশরুমসহ অন্যান্য পরিষেবা।

এবারের বইমেলার নিরাপত্তা বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মেলার সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে বাংলাদেশ পুলিশ, র‌্যাব, আনসার ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা। নিরাপত্তার জন্য মেলা এলাকায় তিন শতাধিক ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বইমেলা পলিথিন ও ধূমপানমুক্ত থাকবে। প্রবেশ ও প্রস্থানপথে পর্যাপ্ত সংখ্যক আর্চওয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মেলাপ্রাঙ্গণ ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় নিরাপত্তার স্বার্থে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা থাকবে। মেলার পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা এবং নিয়মিত ধূলা নিবারণের জন্য পানি ছিটানো এবং প্রতিদিন মশক নিধনের সার্বিক ব্যবস্থা থাকবে।

যথারীতি বইমেলা প্রতিদিন বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। শুধু ছুটির দিন বইমেলা চলবে বেলা ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। প্রতি শুক্র ও শনিবার বেলা ১১টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত ‘শিশুপ্রহর’ থাকবে। প্রতিদিন বিকেল ৪টায় বইমেলার মূল মঞ্চে সেমিনার হবে। সন্ধ্যায় থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। রাত সাড়ে ৮টার পর নতুন করে কেউ মেলা প্রাঙ্গণে ঢুকতে পারবেন না। নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা থাকবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান বই বিক্রি করবে ২৫% কমিশনে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে মেলা সকাল ৮ টায় শুরু হয়ে চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। বিশেষ দিবসটি উদযাপনে শিশুকিশোর চিত্রাঙ্কন, আবৃত্তি এবং সংগীত প্রতিযোগিতার আয়োজন থাকবে। এছাড়া অংশগ্রহণকারী প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের ২০২৩ সালে প্রকাশিত বইয়ের মধ্য থেকে গুণগতমান বিচারে সেরা বইয়ের জন্য ‘চিত্তরঞ্জন সাহা স্মৃতি পুরস্কার’ ও শৈল্পিক বিচারে সেরা বই প্রকাশের জন্য ৩টি প্রতিষ্ঠানকে ‘মুনীর চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার’ দেয়া হবে। সেই সঙ্গে শিশুতোষ গ্রন্থের মধ্য থেকে গুণগত মান বিচারে সর্বাধিক গ্রন্থের জন্য একটি প্রতিষ্ঠানকে ‘রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই স্মৃতি পুরস্কার’ এবং স্টলের নান্দনিক সাজসজ্জায় শ্রেষ্ঠ বিবেচিত প্রতিষ্ঠানকে ‘কাইয়ুম চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার’ দেয়া হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App