ফের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রটোকল অফিসার-২ হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন মো. আবু জাফর রাজু। শিক্ষানুরাগী, সমাজসেবক ও ক্রীড়া সংগঠক আবু জাফর রাজু ২০১৯ সাল থেকে এ পদে অত্যন্ত সততা, দক্ষ্যতা ও সুনামের সঙ্গে কর্মরত আছেন। রবিবার (২৮ জানুয়ারি) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে তাকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

 জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার পিতা আব্দুল জব্বারকে স্নেহ করতেন ও ভালবাসতেন। ভাষা সৈনিক,  মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জব্বার ১৯৬২ সালে ২১শে ফেব্রুয়ারিতে প্রভাতফেরী, প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন ও শোভাযাত্রা করার কারণে গ্রেপ্তার হন এবং কারাবরণ করেন। তিনি ১৯৬২-র শিক্ষা আন্দোলন, ’৬৬-এর ঐতিহাসিক ৬-দফা আন্দোলন,  ’৬৮-র আগরতলা যড়যন্ত্র মামলা, ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ’৭০-এর নির্বাচন, এবং ’৯০-র স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন-সংগ্রামে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখেন।

জাতির পিতাকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে সহপরিবারের নিমর্মভাবে হত্যার পর আব্দুল জব্বার ১৭ আগস্ট কুলাউড়া শহরে প্রতিবাদ সমাবেশ, বিক্ষোভ মিছিল ও গায়েবানা জানাজার আয়োজন করেন। এ জন্য তাঁকে বেশ কয়েকবার কারাবরণ ও অমানুষিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর অন্যতম খুনি মেজর নুর তাঁকে রাতভর কারাগারে অমানুষিক নির্যাতন করে এবং ভোরে ব্রাশ ফায়ার করতে উদ্ধত হলে মহান আল্লাহর অশেষ রহমতে তিনি প্রাণে বেচেঁ যান। মুক্তি পেয়ে পুনরায রাজনৈতিক কার্যক্রম শুরু করলে আবারও তিনি গ্রেপ্তার হন এবং কারাবরণ ও নির্যাতনের শিকার হন।

মোহাম্মদ আবু জাফর রাজু প্রধানমন্ত্রীর প্রটোকল অফিসার-২ পদে থাকাকালিন অবস্থায় কুলাউড়া সংসদীয় আসনের উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছেন। তিনি গত চার/পাঁচ বছরে প্রায় হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন করেছেন। এছাড়া আরো প্রায় হাজার কোটি টাকার উন্নয়নের জন্য বেশ কিছু প্রস্তাব প্রেরণ করেছে। তিনি বিভিন্ন স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসায় ভবন নির্মাণ, মেরামত ও সংস্কারে অর্থ বরাদ্দ, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভবণ নির্মাণ, সেতু-ব্রীজ-কালভার্ট, হাসপাতাল-স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স আসন সংখ্যা বৃদ্ধি ও ভবন নির্মাণ, মসজিদ, মাদ্রাসা, কবরস্থান, মন্দির, শ্মশান, গির্জা উন্নয়ন, রাস্তা পাকাকরণ, খেলাধুলা সামগ্রী বিতরণ ও খেলাধুলার মাঠ উন্নয়ন কুলাউড়া উপজেলায় স্ট্রীট লাইট স্থাপনসহ ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। 

এছাড়া মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট নির্মাণ, টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার (টিটিসি) নির্মাণ, শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন, শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ, উপজেলা যুব প্রশিক্ষণ ও বিনোদন কেন্দ্র নির্মাণ, টেক্সটাইল ইনন্জিনিয়ারিং কলেজ নির্মাণ, নিউরোসাইন্স ফাউন্ডেশন থেকে ৩৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা প্রদান, মহিলা ও শিশু দের জন্য মা শিশু হাসপাতাল নির্মাণের প্রস্তাব, ৫০টি সেলাইমেশিন বিতরণ ও ১৮৮ জনকে আর্থিক অনুদান প্রদান করেছেন তিনি। এছাড়াও অসহায় গরীব, দুস্থঃ ও প্রতিবন্ধী এবং কিডনী, লীভার, ক্যান্সার রোগীদের মাঝে আর্থিক অনুদান ও করোনা মহামারীতে খাদ্য সহায়তা ও শীত বস্ত্র বিতরণ সহ নানা সেবামূলক কাজে নিয়োজিত ছিলেন। 

তিনি ২০১৮ ও ২০২১ সালে পবিত্র ওমরা ও ২০২৩ সালে পবিত্র হজ্ব পালন এবং প্রধানমন্ত্রীর সফর সঙ্গী হিসেবে পবিত্র ওমরা পালন করেন। এছাড়া তিনি প্রধানমন্ত্রীর সফর সঙ্গী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান, ইটালি, স্পেন, আজারবাইজান, মালদ্বীপ, ভারত, সংযুক্ত আরব আমীরাত, সৌদি আরব, সুইজারল্যান্ড সহ আরো বিভিন্ন দেশ সফর করেছেন।