×

জাতীয়

সংসদের হুইপরা কী কাজ করেন, কী সুযোগ-সুবিধা পান

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৪ জানুয়ারি ২০২৪, ০৯:০৭ এএম

সংসদের হুইপরা কী কাজ করেন, কী সুযোগ-সুবিধা পান

দ্বাদশ জাতীয় সংসদের সরকারি দলের হুইপ হচ্ছেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও আওয়ামী লীগ দলীয় এমপি মাশরাফি বিন মুর্তজাসহ (নড়াইল-২) পাঁচ এমপি। মাশরাফিসহ অন্য চারজন হলেন- আবু সাঈদ স্বপন, ইকবালুর রহিম, নজরুল ইসলাম বাবু ও সাইমুম সরওয়ার কমল। তাদের মধ্যে আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন ও ইকবালুর রহিম বিগত একাদশ সংসদে হুইপের দায়িত্বে ছিলেন।

চিফ হুইপ ও হুইপের কাজ

চিফ হুইফ হলেন সংসদে সরকারি দলের মুখপাত্র। চিফ হুইপের সঙ্গে কয়েকজন হুইপ থাকেন। তারা সবাই সংসদ সদস্য। চিফ হুইপ ও হুইপের প্রধান কাজ সংসদে দলীয় শৃঙ্খলা রক্ষা করা। হুইপের দায়িত্বের মধ্যে আরো রয়েছে- নিজ দলের সদস্যদের পার্লামেন্ট বা আইনসভায় নিয়মিত হাজির করার ব্যবস্থা করা। সংসদে কোনো বিল উত্থাপিত হলে দলীয় সব সদস্যরা যেন দলের পক্ষে ভোট দেন তা নিশ্চিত করা ইত্যাদি। রাষ্ট্রীয় মর্যাদাক্রম অনুযায়ী, চিফ হুইপ পূর্ণ মন্ত্রীর পদমর্যাদা ভোগ করেন। আর হুইপ ভোগ করেন প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদা।

যেসব সুযোগ-সুবিধা পান তারা

একজন মন্ত্রীর মাসিক বেতন ১ লাখ ৫ হাজার টাকা। প্রতিমন্ত্রীর বেতন ৯২ হাজার এবং উপমন্ত্রীর ৮৬ হাজার ৫০০ টাকা। দায়িত্ব পাওয়ার পর একজন মন্ত্রী সরকারি ব্যয়ে একটি সুসজ্জিত বাসভবন পান বিনা ভাড়ায়। প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীও একই সুবিধা পেয়ে থাকেন। মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা গণপূর্ত থেকে আবাসন সুবিধা পেলেও চিফ হুইপ ও হুইপরা পান সংসদ সচিবালয় থেকে।

মন্ত্রী যদি সরকারি বাড়িতে না থেকে নিজ বাড়ি বা ভাড়া বাড়িতে থাকেন, তাহলে সরকার থেকে তিনি মাসিক ৮০ হাজার টাকা করে ভাড়া পাবেন। প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী পাবেন ৭০ হাজার টাকা করে। এছাড়া নিজ বাড়ি বা ভাড়া বাড়িতে বসবাস করলে সেটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বছরে তিন মাসের বাড়ি ভাড়ার সমপরিমাণ টাকা পাবেন তারা। চিফ হুইপ ও অন্য হুইপরাও এ সুবিধা নিতে পারেন। 

নিজ এলাকার মসজিদ, মন্দির উন্নয়নসহ এলাকার মানুষের দাতব্য কাজে একজন মন্ত্রীকে বছরে ১০ লাখ টাকা দেওয়া হয়। এ খাতে প্রতিমন্ত্রী পাবেন সাড়ে ৭ লাখ ও উপমন্ত্রী পাবেন ৫ লাখ টাকা করে। এ টাকার মধ্যে মন্ত্রী চাইলে একজন ব্যক্তিকে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা দিতে পারেন। প্রতিমন্ত্রী দিতে পারেন ৩৫ হাজার, আর উপমন্ত্রী ২৫ হাজার টাকা। এলাকার উন্নয়নে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের এই টাকার কোনও নিরীক্ষা হয় না। ফলে এ টাকা খরচে অনেকটা উদার থাকেন তারা।

মন্ত্রী হওয়ার পর তার দপ্তরে দেশি-বিদেশি অনেকে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে আসেন। নির্বাচনি এলাকার মানুষও দেখা করতে আসেন। তাদের আপ্যায়নের জন্য একজন মন্ত্রী মাসে ১০ হাজার টাকা করে পান। এ খাতে প্রতিমন্ত্রী সাড়ে ৭ হাজার টাকা আর উপমন্ত্রী ৫ হাজার টাকা পেয়ে থাকেন। বিমান ভ্রমণের ক্ষেত্রে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী বছরে বিমা সুবিধা পাবেন ১০ লাখ টাকা। মন্ত্রিসভার সদস্যরা অসুস্থ হলে তার পুরো চিকিৎসা খরচ সরকার বহন করে। এ ক্ষেত্রে বলা আছে, চিকিৎসা খরচ সীমাহীন। সরকার তার পুরো চিকিৎসার খরচ দেবে। তবে খরচের ভাউচার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে জমা দিতে হবে।

দায়িত্ব পাওয়ার পর মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী সরকারি খরচে একটি করে গাড়ি সুবিধা পাবেন। এই গাড়ি পরিবহন পুল সরবরাহ করে। তবে চিফ হুইপ ও হুইপদের গাড়ি সরবরাহ করে সংসদ সচিবালয়। এছাড়া সরকারি প্রয়োজনে ভ্রমণের সময় তারা মন্ত্রণালয়ের অধীনে যেকোনও সংস্থা বা দফতর থেকে একটি জিপ গাড়ি পাবেন। জ্বালানি বাবদ মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী দৈনিক ১৮ লিটার জ্বালানি তেলের সমপরিমাণ অর্থ পাবেন। একজন মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী দেশের ভেতরে কোথাও ভ্রমণে গেলে দৈনিক ভাতা পাবেন দুই হাজার টাকা করে। ফলে চিফ হুইপও এই সুবিধা পাবেন। সরকারি বাড়ি সাজসজ্জা করতে একজন মন্ত্রী প্রতিবছর পাবেন পাঁচ লাখ টাকা। প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীরা পাবেন চার লাখ টাকা করে। এছাড়া মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের বাসভবনে বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি ও টেলিফোন ব্যয় যা আসবে, সরকার পুরোটাই বহন করবে।

মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী উপসচিব পদমর্যাদার একজন একান্ত সচিব (পিএস) পাবেন। এর বাইরে একজন সহকারী একান্ত সচিব এবং সরকারি কর্মকর্তার বাইরে নিজের পছন্দের একজন সহকারী, একান্ত সচিব পেয়ে থাকেন। এছাড়া দুই জন ব্যক্তিগত কর্মকর্তা, একজন জমাদার, একজন আরদালি, দুই জন অফিস সহায়ক ও একজন পাচক পেয়ে থাকেন। প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী একজন একান্ত সচিব, একজন ব্যক্তিগত সহকারী, একজন জমাদার, একজন আরদালি ও একজন অফিস সহায়ক পেয়ে থাকেন। এছাড়া মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীরা একটি করে মুঠোফোন পাবেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App