×

জাতীয়

ঢাকা চেম্বার সভাপতি

সংকোচনমুখী মুদ্রানীতি মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখবে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ জানুয়ারি ২০২৪, ০৭:৫২ পিএম

সংকোচনমুখী মুদ্রানীতি মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখবে

ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’র সভাপতি আশরাফ আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ ব্যাংকের ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের জানুয়ারি-জুন ২০২৪ মাসের জন্য ঘোষিত মুদ্রানীতি সম্পর্কে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’র সভাপতি আশরাফ আহমেদ বলেন, এই মুদ্রানীতি দেশের আর্থিক খাতকে পুনরুজ্জীবিত এবং প্রবৃদ্ধির ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে সহায়তা করবে। সেই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট খাতসমূহে প্রয়োজনীয় অর্থপ্রবাহ নিশ্চিত করা ও মূল্যস্ফীতি সহনীয় রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গৃহীত কঠোর আর্থিক খাত নিয়ন্ত্রণের নীতিকে স্বাগত জানিয়েছে ঢাকা চেম্বার।

বাজারভিত্তিক বিনিময় হার ব্যবস্থা নিশ্চিত কল্পে মুদ্রানীতিতে ‘ক্রগিং পেগ’ পদ্ধতি অনুসরণের উদ্যোগকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে ডিসিসিআই। ঘোষিত মুদ্রানীতিতে নীতি সুদহার (করপোরেট) ২৫ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ৮ শতাংশ উন্নীত করে বাজারে মুদ্রা প্রবাহ হ্রাস করে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনার এ উদ্যোগ কার্যকর হবে বলে ঢাকা চেম্বার সভাপতি আশা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, আমাদের সামষ্টিক অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা আনায়নে এ নীতি সুনির্দিষ্ট প্রভাব রাখবে, তাছাড়া অন্যান্য প্রি-ফাইন্যান্সিং ও রি-ফ্যাইন্যান্সিং স্কিমের মাধ্যমে সিএমএসএমই খাতকে সহায়তার উদ্যোগকে স্বাগত জানান। 

সর্বশেষ ঘোষিত মুদ্রানীতিতে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ‘স্মার্ট’-এর উপর ভিত্তি করে ঋণের সুদ হার নির্ধারণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছিল, তবে সেটি খুব বেশি কার্যকর হয়েছে বলে পরিলক্ষিত হয়নি, কারণ গত ডিসেম্বরে মূল্যস্ফীতি ছিল ৯.৫ শতাংশ, যা সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা ৭.৫ শতাংশের চেয়ে বেশি। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও বিনিময় হারে স্থিতিশীলতা আনায়নে ঘোষিত মুদ্রানীতিতে গৃহীত উদ্যোগের সুফল পাওয়া যাবে বলে বিশ্বাস করেন, ঢাকা চেম্বার সভাপতি আশরাফ আহমেদ। জানুয়ারি-জুন ২০২৪ মেয়াদে সরকারি খাতে ঋণ প্রবাহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২৭.৮ শতাংশ, যদিও জুলাই-ডিসেম্বর ২০২৩ মেয়াদে ৩৭.৯ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও বাস্তবে অর্জিত হয়েছিল মাত্র ১৮শতাংশ। অপরদিকে জানুয়ারি-জুন ২০২৪ মেয়াদে বেসরকারিখাতে ঋণ প্রবাহের লক্ষ্যমাত্রা ১০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে, সেখানে জুলাই-ডিসেম্বর ২০২৩ মেয়াদে ১০.৯ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও বাস্তবে অর্জিত হয়েছিল মাত্র ১০.২ শতাংশ। এতে প্রতীয়মান হচ্ছে যে, ঘোষিত মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা, গত মেয়াদের অর্জিত মাত্রার চেয়ে কম নির্ধারণ করা হয়েছে, যদিও ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে দেশের বেসরকারি খাত ঋণ প্রবাহের এর লক্ষ্যমাত্রা আরো বেশি প্রত্যাশা করেছিল।

এমতাবস্থায়, ঢাকা চেম্বার সভাপতি আশা প্রকাশ করেন, যথাযথ আর্থিক ঋণ কৌশল গ্রহণের মাধ্যমে বেসরকারিখাতে অধিকহারে ঋণ প্রবাহ নিশ্চিতকল্পে বাংলাদেশ ব্যাংক উদ্যোগ গ্রহণ করবে। সরকারি খাতে ঋণ হ্রাসের পাশাপাশি বেসরকারি খাতে ঋণ বৃদ্ধিকল্পে সরকারি প্রকল্প বাস্তবায়নে দক্ষতা বৃদ্ধি, সুশাসন ও স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণ, সরকারি ব্যয়ে কৃচ্ছ্রসাধন এবং অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের উপর জোরারোপ করেন। 

মুদ্রা বিনিময় হারে স্থিতিশীলতা আনয়নে, ঢাকা চেম্বার সভাপতি মনে করেন যে, ‘ক্রগিং পেগ’ পদ্ধতি বাজারকে কিছুটা স্থিতিশীল রাখতে সক্ষম হবে, তবে এর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের কঠোর নজরদারি নিশ্চিত করা অপরিহার্য। উপরন্তু বৈদেশিক মুদ্রার উপর চাপ কমাতে রায়ার্স ক্রেডিট, ইউজেন্স এলসি, ডেফার্ড পেমেন্ট এবং এক্সপোর্ট ফ্যাক্টরিং প্রভৃতি বিষয়সমূহ বিকল্প উদ্যোগ হিসেবে বিবেচনার দাবি করছে ডিসিসিআই।  

দেশে বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে তারল্য বৃদ্ধিকল্পে ‘এক্সপোর্টার রিটেনশন কোটা (ইআরকিউ)’ হার পূর্বের ১৫ শতাংশ, ৬০ শতাংশ এবং ৭০ শতাংশের তুলনায় যথাক্রমে ৭.৫ শতাংশ, ৩০ শতাংশ এবং ৩৫ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে। এছাড়াও পেমেন্টের ক্ষেত্রে রেগুলেটরি ক্যাপিটালের ৪০ শতাংশ অফশোর ব্যাংকিং অপারেশনস হতে ধারের সুযোগ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ডিসিসিআই সভাপতি মনে করেন, এ উদ্যোগ বিদ্যমান বৈদেশিক মুদ্রার পরিস্থিতিতে স্থিতিশীল করবে, যদিও সীমিত হস্তক্ষেপ এবং সুসংগঠিত নীতিকাঠামোর আওতায় বৈদেশিক মুদ্রার বাজারকে পরিচালিত হওয়ার সুযোগ দেয়া প্রয়োজন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App