×

জাতীয়

দুই দেশের সম্পর্ক নিয়ে কূটনীতিকদের মতামত

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২০ আগস্ট ২০২০, ০৯:৩১ এএম

দুই দেশের সম্পর্ক নিয়ে কূটনীতিকদের মতামত

মোহাম্মদ জমির

দুই দেশের সম্পর্ক নিয়ে কূটনীতিকদের মতামত

তৌহিদ হোসেন

দুই দেশের সম্পর্ক নিয়ে কূটনীতিকদের মতামত
দুই দেশের সম্পর্ক নিয়ে কূটনীতিকদের মতামত

মোহাম্মদ জমির, সাবেক কূটনৈতিক।

দুই দেশের সম্পর্ক নিয়ে কূটনীতিকদের মতামত

তৌহিদ হোসেন, সাবেক পররাষ্ট্র সচিব।

দুই দেশের সম্পর্ক নিয়ে কূটনীতিকদের মতামত

দেলোয়ার হোসেন, অধ্যাপক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

দুই দেশের সম্পর্ক নিয়ে কূটনীতিকদের মতামত

তৌহিদ হোসেন, সাবেক পররাষ্ট্র সচিব।

দুই দেশের সম্পর্ক নিয়ে কূটনীতিকদের মতামত

মোহাম্মদ জমির, সাবেক কূটনৈতিক।

দুই দেশের সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার মধ্যেই ঝটিকা ঢাকা সফর করে গেলেন ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কোন্নয়নে কি বার্তা দিয়ে গেলেন শ্রিংলা? শ্রিংলার আকস্মিক সফর নিয়ে ভোরের কাগজের সঙ্গে কথা বলেছেন কূটনীতিকরা। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সিনিয়র রিপোর্টার ঝর্ণা মনি।

  • বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কোন্নয়নই উদ্দেশ্য

মোহাম্মদ জমির (সাবেক কূটনৈতিক) ঢাকায় চীনের উপস্থিতি নিয়েই বেশি উদ্বিগ্ন ভারত। বিশেষ করে তিস্তা প্রকল্পে চীনের ঋণ দেয়ার খবর, চীনা ভ্যাকসিনের তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা বাংলাদেশে চালানোর ছাড়পত্র দেয়ায় উদ্বেগের মাত্রা আরো বেড়েছে। তবে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন হলেও আমরা কখনোই ভারতকে অবজ্ঞা করি না। ভারতের সঙ্গে ঐতিহাসিক সম্পর্ক। এটি কেউ অস্বীকার করে না।

[caption id="attachment_238170" align="aligncenter" width="698"] মোহাম্মদ জমির, সাবেক কূটনৈতিক।[/caption]

এদিকে করোনা ভাইরাস মহামারির মধ্যেই হঠাৎ করে ঢাকা সফর করেছেন ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। আমি মনে করি, আলোচনা-বিবেচনা করে বাংলাদেশ-ভারত দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়ন করাই মুখ্য উদ্দেশ্য। এখনো দুই দেশের মধ্যে যেসব বিষয়ে সুরাহা হয়নি, সেসব বিষয় উন্নতি করার জন্যই এই ঝটিকা সফর। এছাড়া কোভিড-১৯ এর পর কিভাবে দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরো উন্নয়ন করা যায়, সেসব নিয়েও আলোচনা করা প্রয়োজন। তবে শুধু করোনা ভাইরাসের টিকা নিয়ে কথা বলতে অনির্ধারিত সূচিতে ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব বাংলাদেশ সফর করেছেন- বিষয়টি এত সরলীকরণ নয়। কারণ টিকা নিয়ে তো তারাই এখনো নিশ্চিত নয়। এছাড়া তাদের নিজেদের দেশে আক্রান্তের হার আমাদের দেশের চেয়ে অনেক বেশি। আমার মনে হয় না, শুধু টিকা নিয়ে আলোচনা করার জন্যই হর্ষবর্ধন শ্রিংলা ঢাকা সফর করেছেন।

উদ্দেশ্য, প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরো জোরদার করা। এমনিতেই ভারত-নেপালের মধ্যে টানাপড়েন চলছে। চীন-ভারতের সমস্যা তো রয়েছেই। রয়েছে ভারত-পাকিস্তানের সমস্যাও রয়েছে। বন্ধু বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরো গভীরে পৌঁছানো, দুই দেশের অমীমাংসিত বিষয়গুলোর সুরাহা করা জরুরি। সবমিলিয়েই ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিবের ঝটিকা ঢাকা সফর।

  • অমীমাংসিত ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়েছে

তৌহিদ হোসেন (সাবেক পররাষ্ট্র সচিব) ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা ঝটিকা ঢাকা সফরে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে বৈঠক ছাড়াও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে এক ঘণ্টা বৈঠক করেছেন। এটি অনেক কিছুর ইঙ্গিত দেয়। কারণ শুধু চারটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করার জন্য এক ঘণ্টা অনেক বেশি সময়। নিশ্চয়ই দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়ন, অমীমাংসিত ইস্যুসহ আরো অনেক বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। হর্ষবর্ধন শ্রিংলা গণমাধ্যমের কাছে উল্লেখ করেছেন, দুই দেশের বৈঠকে করোনা ভাইরাসের টিকা, রোহিঙ্গা ইস্যু, সীমান্ত হত্যা বন্ধ এবং বাংলাদেশ-ভারতের ঝুলে থাকা ইস্যুগুলো নিয়ে কথা বলার জন্যই তিনি এসেছেন এবং এসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

[caption id="attachment_238169" align="aligncenter" width="712"] তৌহিদ হোসেন, সাবেক পররাষ্ট্র সচিব।[/caption]

বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র সচিবও এ বিষয়ে একমত পোষণ করে গণমাধ্যমে কথা বলেছেন। কিন্তু একদিনের নোটিসে ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিবের এই সফর কূটনৈতিক মহলে নানা কৌতূহল, নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। বিষয়টি অস্বাভাবিক। অন্যদিকে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধুত্ব বাড়ছে- ভারতীয় গণমাধ্যমে এ নিয়ে বেশ হইচই হয়েছে। হয়তো হর্ষবর্ধন শ্রিংলার আকস্মিক সফরে এটিও আলোচনার অন্যতম বিষয়বস্তু ছিল। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির এ সংক্রান্ত কোনো ম্যাসেজ ছিল, যা তিনি আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পৌঁছে দিয়েছেন। যদিও এ বিষয়ে আমরা কিছুই জানি না, কোনো পক্ষই স্পষ্ট করে কিছুই জানায়নি। তবে হর্ষবর্ধন শ্রিংলা শুধু বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে বৈঠক করার জন্য হঠাৎ করেই ঢাকা সফর করবেন- এটি মনে করার কোনো কারণ নেই।

  • আঞ্চলিক সম্পর্ক উন্নয়নের লক্ষ্যে সফর

দেলোয়ার হোসেন (অধ্যাপক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় চীনের প্রভাব দিনদিন বাড়ছে- এ নিয়ে ভারত উদ্বিগ্ন। এসব দিক থেকে ভারতের কূটনৈতিক কৌশলের অংশ হিসেবে এ ধরনের সফর হচ্ছে। এছাড়া ভারতের সঙ্গে চীনের যে বৈরিতা শুরু হয়েছে, সীমান্ত সংঘাত হচ্ছে, এর পরিপ্রক্ষিতে এই অঞ্চলের দেশগুলোকে আরো কাছে পাওয়ার জন্য এ ধরনের যোগাযোগ বাড়িয়েছে দেশটি। দুই দেশের পররাষ্ট্র সচিবের এমন সফর হতে পারেই। কিন্তু হঠাৎ, কোনো নির্ধারিত সূচি ছাড়াই সফর এবং দৃশ্যত সফরে আমরা এমন কিছু দেখছি না, ফলে কিছু প্রশ্ন থেকে যায়।

[caption id="attachment_238168" align="aligncenter" width="712"] দেলোয়ার হোসেন, অধ্যাপক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।[/caption]

কারণ ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিবের ঢাকা সফরের পরিষ্কার কোনো উদ্দেশ্য আমরা জানি না। অন্যদিকে, যে সময়টাতে তিনি ঢাকা সফর করেছেন, যখন চীন-ভারত সম্পর্কে টানাপড়েন চলছে। বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নিয়েও নানান কথা হচ্ছে। সৌজন্য সাক্ষাতে হর্ষবর্ধন শ্রিংলা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির একটি চিঠি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে হস্তান্তর করেছেন। সৌজন্য চিঠি দেয়া হয়। এগুলো স্বাভাবিক রুটিন ওয়ার্ক। ক‚টনৈতিক কার্যক্রম। আমার ব্যক্তিগত অভিমত, ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিশেষ কোনো বার্তা নিয়েই পররাষ্ট্র সচিব এসেছিলেন। হয়তো চিঠিতে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ককে আরো শক্তিশালী করার বিষয়ে কথা আছে। এছাড়া ভারতের সঙ্গে আমাদের অনেক অমীমাংসিত বিষয় রয়েছে। তিস্তার পানি ইস্যুটি ঝুলে আছে। রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়েও আলোচনা প্রয়োজন। রয়েছে সীমান্ত হত্যা। ভারতের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে।

অন্যদিকে বাংলাদেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নে ভারত সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছিল, সেসব পুরোপুরি বাস্তবায়ন হচ্ছে না। এসব বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব হয়তো চিঠিতে রয়েছে। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরো কীভাবে জোরদার করা যায়, কী কী ইস্যু নিয়ে ভবিষ্যতে কাজ করা যায় প্রভৃতি বিষয় নিয়ে নিশ্চয়ই আলোচনা হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App