আকস্মিকভাবে অনির্ধারিত এক সফরে ঢাকায় আসছেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা। মঙ্গলবার (১৮ আগস্ট) দুপুরে তিনি ঢাকায় পৌঁছাবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। সোমবার (১৭ আগস্ট) ঢাকার কূটনৈতিক সূত্রগুলো হর্ষ বর্ধন শ্রিংলার সফরের বিষয়টি সংবাদ মাধ্যমকে নিশ্চিত করেছে।

প্রধানমন্ত্রীর পাশাপাশি পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলমের সঙ্গেও সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব। সংক্ষিপ্ত এ সফরকালে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে শ্রিংলার বৈঠক হবে।

ভারতের সাবেক হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা চলতি বছরের জানুয়ারিতে দেশটির পররাষ্ট্রসচিব হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এরপর মার্চে তিনি প্রথমবারের মতো ঢাকা সফরে আসন। দ্বিতীয় দফায় তিনি মঙ্গলবার আকস্মিক সংক্ষিপ্ত সফরে ঢাকায় আসছেন।

তবে করোনা সংক্রমণের মধ্যে হঠাৎ করেই এই অনির্ধারিত সফর নিয়ে নানা কৌতুহল দেখা দিয়েছে। যদিও এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন এবং নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের কোনো সূত্র।

কূটনৈতিক সূত্রমতে, গেল সপ্তায় মন্ত্রিসভার সদস্যদের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আলোচনা হয়। সেখানে প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে কথা বলেছেন। আলোচনায় নরেন্দ্র মোদি দুই নিকট প্রতিবেশী বাংলাদেশ ও নেপালের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বজায় রাখার ওপর জোর দেন।

সূত্রমতে, করোনা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের সঙ্গে চীন আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে কাছাকাছি সেছে। বাংলাদেশ-চীনের এই ঘনিষ্ঠতা ভারতের জন্য নতুন করে অস্বস্তি তৈরি করেছে। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে ভারত। বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে আরো জোরদার করার উদ্যোগ নিয়েছে ভারত।

এদিকে, টাইম অব ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে হর্ষ বর্ধন শ্রিংলার বাংলাদেশ সফরের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলা হয়েছে, করোনা মহামারির প্রাদুর্ভাবের মধ্যেই ভারতের পররাষ্ট্রসচিব উচ্চ পর্যায়ের সরকারি সফরে মঙ্গলবার (১৮ আগস্ট) বাংলাদেশে যাচ্ছেন। বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত শ্রিংলা আশা করছেন তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করবেন। এসময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ব্যক্তিগত বার্তা তিনি পৌছে দেবেন।

নরেন্দ্র মোদী সর্বশেষ গেল বছরে শেখ হাসিনার সঙ্গে তার ভারত সফরকালে সাক্ষাৎ করেছিলেন। সে সময় সিএএ এবং এনআরসিসহ বেশ কয়েকটি দ্বিপাক্ষিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছিলেন। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে একে আবদুল মোমেন সম্প্রতি ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ককে ‘অনড় সম্পর্ক’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

তবে করোনা মহামারির মধ্যে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ এসেছিল। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পেট্রাপোল-বেনাপোল সীমান্ত ট্র্যাফিকের জন্য বন্ধ করে দিয়েছিলেন। এছাড়া বাংলাদেশে আটকা পড়া প্রায় দুই সহস্রাধিক ভারতীয়কে প্রত্যাবাসনের বিষয়েও অস্বীকার করেন।