২০০৯ সালে নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় সনাতন ধর্ম থেকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন আয়েশা জান্নাত মোহনা ওরফে জান্নাতুত তাসনিম (২৫)। ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার আগে নাম ছিল প্রজ্ঞা দেবনাথ। অনলাইনে ধর্ম সংক্রান্ত পড়ালেখা করতে করতে নব্য জেএমবির নারী শাখার প্রধান আসমানী খাতুন ওরফে আসমার সঙ্গে তার পরিচয় হয়। এক পর্যায়ে তিনি জঙ্গি সংগঠনটির সদস্য হিসেবে কাজ শুরু করেন।

রাজধানীর সদরঘাট এলাকা থেকে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন নব্য জেএমবির এ নারী সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট। এর পরই উঠে আসে এসব তথ্য। শুক্রবার (১৭ জুলাই) রাজধানীর মতিঝিল থানায় দায়েরকৃত একটি মামলায় নব্য জেএমবির এই নারী সদস্যকে গ্রেফতারের বিষয়টি জানান সিটিটিসির সহকারী কমিশনার (এসি) ইমরান হোসেন।

জানা গেছে, গ্রেপ্তার আয়েশা জান্নাত ওরফে প্রজ্ঞা(২৫) ভারতীয় বংশোদ্ভূত নাগরিক। তার বাড়ি পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার ধনিয়াখালী থানার কেশবপুর গ্রামে। গ্রেপ্তারের সময় তার কাছ থেকে একটি ভারতীয় পাসপোর্ট, একটি বাংলাদেশি জন্ম নিবন্ধন সার্টিফিকেট, একটি বাংলাদেশি জাতীয় পরিচয়পত্র এবং দুটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।

তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে সিটিটিসি জানায়, ২০১৬ সাল থেকে তিনি বাংলাদেশ ও ভারতে আসা-যাওয়া করছেন। তার দায়িত্ব ছিলো বিভিন্ন দেশ ঘুরে সদস্যদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করা। পশ্চিমবঙ্গ থেকে সংগঠনের চাঁদা তুলেও বাংলাদেশ নিয়ে আসত সে। জাল জন্ম নিবন্ধন সনদ ও জাল জাতীয় পরিচয়পত্রের মাধ্যমে এ দেশের নাগরিক প্রমাণ করে তিনি বাংলাদেশে বিয়ে করেন। স্বামীর ইচ্ছা অনুযায়ী, গত বছরের ১০ আগস্ট থেকে তিনি বাংলাদেশে বসবাস শুরু করেন। এরপর থেকে বিভিন্ন মাদরাসায় শিক্ষকতার আড়ালে সংগঠনের সদস্য সংগ্রহ করতেন।

গত ৫ ফেব্রুয়ারি নব্য জেএমবির নারী শাখার প্রধান আসমানী খাতুনকে গ্রেপ্তার করে সিটিটিসি। তদন্তের ধারাবাহিকতায় প্রজ্ঞা দেবনাথকে গ্রেফতার করা হয়। আসমানী খাতুন গ্রেপ্তারের পর প্রজ্ঞা মাদরাসার চাকরি ছেড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সংগঠনের সদস্য সংগ্রহ শুরু করেন বলেও জানা গেছে।