উত্তরবঙ্গে শৈত্যপ্রবাহে জনজীবন স্থবির
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮ জানুয়ারি ২০১৮, ১০:৪৫ এএম
টানা শৈত্যপ্রবাহে স্থবির হয়ে পড়েছে সারা দেশ। আর উত্তরের জেলা হিসেবে কুড়িগ্রামে শীতের তীব্রতাও বেড়েছে বেশ ভালোভাবেই। সর্বশেষ রোববার বিকেলে আধুনিক সদর হাসপাতালে ঠান্ডায় একদিন বয়সী এক নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। তবে তার পরিচয় জানা যায়নি। এ নিয়ে ঠান্ডায় কুড়িগ্রামে মোট ৬ জনের মৃত্যু হলো।
এরমধ্যে রাজারহাট উপজেলায় মারা গেছেন ৩ জন। মৃতদের মধ্যে গত শুক্রবার সকালে নয়ন মনি ও বৃহস্পতিবার মীম সদর হাসপাতালে মারা যান। বাকি ৩ জনকে রাত ১০টা থেকে সাড়ে ১২টার মধ্যে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় বলে জানিয়েছেন কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মো. জাহাঙ্গির আলম।
রাজারহাট আবহাওয়া অফিস থেকে জানানো হয়েছে, আজ সোমবার কুড়িগ্রামে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রয়েছে ৩.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আপরদিকে সৈয়দপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। ঘন কুয়াশায় ঢাকা পড়েছে পুরো জনপদ।
তীব্র শীতে তিস্তা ও নদী অববাহিকার লোকজন শীতবস্ত্রের অভাবে দুর্ভোগে পড়েছে। সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ শুরু হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় সামান্য। ফলে লোকজন খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করছে।
নীলফামারীর সৈয়দপুর আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লোকমান হাকিম জানান, সৈয়দপুরে তাপমাত্রা ২ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। ডিমলা উপজেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে এসেছে।
এছাড়া নীলফামারীর ডোমার, জলঢাকা, কিশোরগঞ্জ ও সদর উপজেলার মানুষও কনকনে ঠাণ্ডায় কাহিল হয়ে পড়েছেন।
শৈত্যপ্রবাহের সঙ্গে উত্তরের হিমেল হাওয়ায় উত্তর বঙ্গের সকল জেলায় শীতের তীব্রতা বেড়েছে। রংপুর নওগাঁ,নাটোর,রজশাহী ,চাপাই নবাবগঞ্জসহ সকল জেলায় মানুষ শীতের তিব্রতায় জনজীবন বিপর্যস্ত বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া লোকজন ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। ফলে শহরে লোকজনের চলাচল কমে গেছে। কনকনে ঠাণ্ডার কারণে বেশিরভাগ ব্যবসায়ীরা দোকানপাট খুলছেন না।
সন্ধ্যার পর চারিদিক কুয়াশায় ঢাকা পড়ছে। বৃষ্টির মতো কুয়াশা ঝরছে। ফলে অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার যানবাহনগুলো হেডলাইট জ্বালিয়ে ধীরগতিতে চলাচল করছে। সড়কের বিভিন্ন মোড়ে জ্বালানো হয়েছে আগুনের কুণ্ডলি।
শীতজনিত রোগে হাসপাতালে রোগীদের সংখ্যা বাড়ছে। বিশেষ করে বৃদ্ধ ও শিশুরা সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়া নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে।
সকালে তীব্র ঠান্ডায় কাজে বের হতে পারছে না মানুষ। এছাড়াও বিকেল থেকেই তাপমাত্রা নিম্নগামী হওয়ায় সন্ধ্যার পরপরই ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে রাস্তা-ঘাট, হাট-বাজার ও দোকানপাট। খুব প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছে না মানুষ জন। গরম কাপড়ের অভাবে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছে হতদরিদ্র ও ছিন্নমূল মানুষ। কাজে বের হতে না পারায় পরিবার পরিজন নিয়ে বিপাকে পড়েছেন শ্রমজীবী মানুষ।