×

জাতীয়

৮০ লাখে চুরির মানত পূরণ, পাগলা মসজিদে ১ লাখ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ জুন ২০২০, ০৭:৫১ পিএম

৮০ লাখে চুরির মানত পূরণ, পাগলা মসজিদে ১ লাখ

ধরা পড়া ব্রিফকেস হান্নান ও তার সহযোগিরা

টানা পার্টি হিসেবে কাজ করলেও অনেকদিন ধরেই বড় ধরনের হাত মারার পরিকল্পনা ছিল হান্নান ওরফে ব্রিফকেস হান্নানের। তাই মানত করেছিলেন একটি বড় হাত মারতে পারলেই কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদে এক লাখ টাকা দান করবেন। গত ১৫ রমজান হান্নানের সেই ইচ্ছা পূরণ হয়।
গ্যাং লিডার ৪র্থ স্ত্রী
ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিডিটের ইসলামপুর শাখার সামনে গাড়ির ভিতর থেকে সহযোগীদের সহায়তায় ৮০ লাখ টাকা গত ১০ মে চুরি করতে সমর্থ হন। এর আগেও একটি ব্যাংক থেকে তিনি টাকা চুরি করেছিলেন। চুরির সেই অর্থ থেকে ২০ লাখ টাকা আগের মামলার উকিল ফি, ঋণ পরিশোধ, নেশা করা ও পাগলা মসজিদে মানত দিয়ে খরচ করে ফেলেছিলেন। পরে ব্রিফকেস হান্নানের স্ত্রী পারভিনের স্বীকারোক্তি মোতাবেক তার ধোলাইপাড়ের ভাড়া বাসা থেকে ৬০ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়। ব্যাংকের টাকা নিতে আসা সিকিউরিটি গার্ড ও গাড়ি চালকের অবহেলার কারণে এ টাকাটি চুরি হয়। রাজধানীর কোতোয়ালি থানার ইসলামপুরের ন্যাশনাল ব্যাংকের শাখার সামনে থেকে ৮০ লাখ টাকা চুরির ঘটনায় ৫ জনকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে ভোরের কাগজকে এসব তথ্য জানান ডিএমপি গোয়েন্দা দক্ষিণ বিভাগের কোতোয়ালি জোনাল টিমের অতিরিক্ত উপকমিশনার সাইফুর রহমান আজাদ। অভিযানের নেতৃত্বে থাকা এ পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ঘটনাস্থলের আশপাশের সকল সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করা হয়। পাশাপাশি প্রযুক্তির সহায়তা ও বিভিন্ন গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করে তা বিশ্লেষণ করে ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আসামিদেরও গ্রেপ্তারের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা হয়। এর ধারাবাহিকতায় গত পহেলা জুন কিশোরগঞ্জ ও শরীয়তপুর জেলাসহ রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ব্রিফকেস হান্নান ছাড়াও তার স্ত্রী পারভীন ও শ্যালক আলমগীর, সহযোগী মোস্তফা ও বাবুল মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। ৬০ লাখ টাকা ছাড়াও হান্নান ও মোস্তফার কাছ থেকে ২টি আগ্নেয়াস্ত্র গুলিসহ উদ্ধার করা হয়। সূত্রমতে, ব্রিফকেস হান্নান আর তার সহযোগিরা মূলত টানা পার্টির সদস্য। এর আগেও তারা এ ধরনের কাজ করেছেন। ঘটনার দিন দুপুরে ন্যাশনাল ব্যাংকের বিভিন্ন শাখা থেকে টাকা নিয়ে যখন ব্যাংকের একজন নির্বাহী কর্মকর্তা ও একজন সিকিউরিটি গার্ড ইসলামপুর শাখায় সাড়ে ৪ কোটি টাকা আনতে উপরে ওঠে, তখন একজন সিকিউরিটি গার্ড ও মাইক্রোবাসের চালক গাড়িতে ছিলেন। এ সুযোগে হান্নানসহ তার অপর সহযোগিরা সেখানে এসে সিকিউরিটি গার্ড ও মাইক্রোবাসের চালকের সঙ্গে ভাব জমিয়ে বিভিন্ন ধরণের কথা-বার্তা বলতে থাকেন। এদিকে, টাকা আনতে দেরি হচ্ছে দেখে তারা গাড়ির চালককে উপরে পাঠায়। উপরে উঠলেই সহযোগিরা সিকিউরিটি গার্ডকে বিভিন্ন কথা-বার্তায় অন্যমনস্ক রাখে। আর হান্নান গাড়ির দরজা খুলে টাকার বস্তা নিয়ে কোনোদিকে দৃষ্টিপাত না করে রিকশা নিয়ে আরমনি টোলায় একটি বাসায় চলে যান। পরবর্তী সময়ে তার সহযোগীদের ২৫ হাজার করে টাকা দিয়ে বাকি টাকা তিনি নিজের কাছে রেখে দেন ও বিভিন্নভাবে তা খরচ করতে থাকেন। অতিরিক্ত উপকমিশনার সাইফুর রহমান আজাদ বলেন, ব্রিফকেস হান্নানের ৪ বউ। সে ছোট বউ পারভীনের সঙ্গে থাকতো। ছোট বউই গ্যাং চালাতো। ব্রিফকেস হান্নানের বিরুদ্ধে ৫০টির মতো মামলা রয়েছে। যার মধ্যে নথিভুক্ত ৩০টির মতো মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে গেন্ডারিয়া ও যাত্রাবাড়ী থানায় আরো দুটি পৃথক মামলা হয়েছে। তাদের কাছে আরো অস্ত্র রয়েছে কিনা বিষয়টিও তদন্ত চলছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App