×

জাতীয়

পুরাতনকে বিদায় নতুনকে সম্ভাষণ

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭, ১২:১২ পিএম

২০১৭ সালটি শুরু হয়েছিল দেশের আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক বিবেচনায় ইতিবাচক সূচক নিয়ে। অর্থনীতির গতিধারা আগের বছরের মতোই ঊর্ধ্বমুখী ছিল। রাজনীতিতেও তেমন কোনো উত্তাপ ছিল না। রাজনীতিতে বিরোধী দল বিএনপি অভ্যন্তরীণ সমস্যা নিরসন করার উপায় খুঁজলেও তেমন কোনো সাফল্য তখনো দেখাতে পারেনি।
যথারীতি ২০১৭ সালটিও বিদায় নিতে বসেছে। জগতের চিরন্তন নিয়মে বছরটি আমাদের জীবন থেকে বিদায় নেবে, ইতিহাসে বসবাস করবে, নতুন বছরকেও একইভাবে গ্রহণ বা বরণ করে নিতে হবে, এক সময় নতুন বছরও বিদায় নেবে। এমন একটি নিয়মের মধ্যে আমরা পুরাতন বছরের সালতামামি টানি, নতুনের মধ্যে অপূর্ণতার পূর্ণায়নের স্বপ্ন দেখি, প্রত্যাশা ব্যক্ত করি। কতটা স্বপ্ন শেষ পর্যন্ত স্বপ্ন হিসেবেই থেকে যায়, বাস্তবে ধরা যায় না, ধরা দেয় না- সেটি এক মস্ত বড় প্রশ্ন। ব্যক্তি, সমাজ, রাষ্ট্র ও বিশ্ব পরিসরে নানা ঘটনা-দুর্ঘটনা, অর্জন-বিসর্জনের মধ্য দিয়ে এভাবেই চলে, কিছু কিছু প্রত্যাশা তো পূরণও হয়, নতুবা মানুষ এমন বছর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে সালতামামিও করত না, নতুন বছরের প্রত্যাশাও ব্যক্ত করত না। বস্তুত সবাই পেছনে ফেলে আসা বছরকে বিদায় জানাতে গিয়ে নতুনকে ঘিরে আরো ভালো থাকা বা ভালো করার ইচ্ছা ব্যক্ত করে, রাষ্ট্র ও সমাজ জীবনে অনেক শুভ কামনা করে থাকে, বিশ্ব পরিসরেও এর প্রতিফলন ঘটে। পৃথিবীজুড়ে যত মানুষ রয়েছে নতুন বছরের আগমনের প্রাক্কালে কমবেশি সবাই এমন একটি হিসাব-নিকাশ, প্রত্যাশা ও শুভ কামনার মুখোমুখি দাঁড়ায়। আর কোনো দ্বিতীয় দিবস নেই- যে দিন পৃথিবীব্যাপী মানুষ এমন সালতামামির বাস্তবতায় বসে, নতুনকে ঘিরে স্বপ্ন দেখে, প্রত্যাশা ব্যক্ত করে। সেদিক থেকে পুরাতন বছরকে একটু হিসাব-নিকাশের নিক্তিতে চড়িয়ে দেখার মধ্য দিয়ে বিদায় দেয়া, নতুন বছরে আরো সাফল্য ও অর্জনের আশাবাদ ব্যক্ত করার ধারা বেশ প্রভাব বিস্তারকারী বিষয় বলেই গুরুত্ব বহন করছে। ২০১৭ সালটি শুরু হয়েছিল দেশের আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক বিবেচনায় ইতিবাচক সূচক নিয়ে। অর্থনীতির গতিধারা আগের বছরের মতোই ঊর্ধ্বমুখী ছিল। রাজনীতিতেও তেমন কোনো উত্তাপ ছিল না। রাজনীতিতে বিরোধী দল বিএনপি অভ্যন্তরীণ সমস্যা নিরসন করার উপায় খুঁজলেও তেমন কোনো সাফল্য তখনো দেখাতে পারেনি। যদিও ২০১৭ সালের শুরুতে দলটির শীর্ষ পর্যায়ে আন্দোলন, নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের দাবি উত্থাপন করেছিল, কিন্তু গোটা বছরজুড়ে বিএনপি তাতে কোনো ধারণা যুক্ত করতে পারেনি, অধিকন্তু দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া লন্ডনে বড় ছেলে তারেক রহমানের পরিবারের সঙ্গে দীর্ঘ অবকাশ
বছরটি বিচারাঙ্গনের সঙ্গে সরকারের বেশ তিক্ত সম্পর্কে কেটেছে। একদিকে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলকে কেন্দ্র করে সরকারের সঙ্গে সাবেক প্রধান বিচারপতির বড় ধরনের দূরত্ব সৃষ্টি হয়।
কাটানোর বেশি কিছু দেখাতে পারেননি। যদিও বিএনপি থেকে দাবি করা হয়েছিল যে, তিনি লন্ডনে চিকিৎসা নিতে এবং দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে আলোচনার জন্য গেছেন, কিন্তু সেখানে তার তিন মাসের মতো অবস্থান শেষে দেশে ফিরে কোনো বার্তা এ পর্যন্ত দিতে পারেনি বিএনপি। বিএনপির এমন অবস্থান দলের নেতাকর্মীদের হতাশাকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের মধ্যেও দলকে জনগণের কাছে নিয়ে যাওয়ার তেমন কোনো উদ্যোগ পরিলক্ষিত হয়নি। মাঠে শক্ত কোনো বিরোধী দলীয় আন্দোলন না থাকায় আওয়ামী লীগের তেমন কিছু করার যেন ছিল না। ২০১৭ সালটি ভালোয় ভালোয় শুরু হলেও এপ্রিল মাস থেকেই অতিবৃষ্টির লক্ষণ বাড়তে থাকে, রাঙ্গামাটি, কক্সবাজার ও চট্টগ্রামে অতিবৃষ্টিতে পাহাড় ধস ঘটে, বেশ কিছু সংখ্যক সাধারণ মানুষের প্রাণহানি ঘটে। বছরটি অতিবৃষ্টিপাতের বছর হিসেবেই পরিচিত হতে থাকে। হাওর বিল অঞ্চলে ঢল নেমে মাঠের সব ফসল তলিয়ে দেয়। এর পরপরই উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে বন্যা, প্লাবন, ভারত থেকে নেমে আসা বানে ব্যাপক ফসলহানি ঘটে, বাড়িঘর, রাস্তাঘাট, বাঁধ ভেঙে এক অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এতে খাদ্যপণ্যের মূল্য ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়। বাজারে তরিতরকারির সরবরাহ কমে যাওয়ায় প্রয়োজনীয় শাকসবজির মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যেতে থাকে। বাংলাদেশ ২০০৭-০৮ এর পর খাদ্য এবং কৃষিপণ্য উৎপাদনে একটি শ্লাঘার স্থান অর্জন করার বিষয়টি ২০১৭ সালে বড় ধরনের ধাক্কা খায়। ব্যাপকভাবে খাদ্য এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বাংলাদেশকে আমদানি করতে হয়েছে। সাধারণ মানুষের সঞ্চয়ে বাড়তি এই ব্যয় বড় ধরনের চাপ সৃষ্টি করে। কৃষকরা বারবার চেষ্টা করেও বন্যা, বর্ষা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি, বরং বারবারই মার খেয়েছে। এদিক থেকে স্বীকার করতে হবে, ২০১৭ সালে প্রাকৃতিকভাবে আমাদের স্বস্তি ছিল না, বারবার হোঁচট খেতে হয়েছে সাধারণ উৎপাদকদের। গত নভেম্বর মাস পর্যন্ত বৈরী প্রকৃতি বাংলাদেশকে স্বস্তিতে থাকতে দেয়নি। নিকট অতীতে এমন ধারাবাহিক প্রাকৃতিক বিপর্যয় খুব একটা ঘটতে দেখা যায়নি। এর ফলে কৃষিনির্ভর গ্রামীণ অর্থনীতি ২০১৭ সালে উৎপাদন সংকটে কেটেছে, চালের মূল্যবৃদ্ধি নিম্ন আয়ের মানুষের জীবনে নতুন করে টান দিয়েছে। অতিবৃষ্টির ফলে দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার ওপর বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। দেশের কাঁচা ও পাকা রাস্তার বেশির ভাগই নষ্ট হয়ে গেছে, যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে, বাঁধের অবস্থাও সংকটাপন্ন। ফলে নতুন বছরের শুরুতে সড়ক পুনঃনির্মাণে বাড়তি অর্থ বরাদ্দ গুনতে হচ্ছে, বর্ষা শুরুর আগেই সেগুলো সম্পন্ন করার দায়িত্ব এলজিআরডি, সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়কে নিতে হবে। বছরটি বিচারাঙ্গনের সঙ্গে সরকারের বেশ তিক্ত সম্পর্কে কেটেছে। একদিকে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলকে কেন্দ্র করে সরকারের সঙ্গে সাবেক প্রধান বিচারপতির বড় ধরনের দূরত্ব সৃষ্টি হয়। রাজনৈতিক অঙ্গন যেখানে অপেক্ষাকৃত শান্ত থাকলেও ছিল বিচারাঙ্গনে আইনজীবীদের একটি অংশ ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়কে কেন্দ্র করে বেশ সোচ্চার হয়ে ওঠে। তারা বিষয়টিকে আদালত বনাম সরকারকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে। বিষয়টিকে নিয়ে সরকারবিরোধী উত্তেজনা বেশ তুঙ্গে তোলা হয়েছিল। সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার দেয়া পর্যবেক্ষণ, তার ব্যক্তিগত বেশ কিছু বিষয় নিয়ে মিডিয়ায় সমালোচনা ওঠায় যুক্তি খোঁজার চাইতে রাজনৈতিক সংকট তৈরির একটা চেষ্টা তখন করা হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত এস কে সিনহা দেশ ছেড়েছেন, পদত্যাগ করেছেন। বিচারাঙ্গনে মুহ‚র্তে শান্ত। বছরের আলোচিত ঘটনা ছিল রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া। আগের ৪ লাখ মিলিয়ে এখন প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। বাংলাদেশ এত বড় জনস্রোতের চাপ সহ্য করেছে- যা ভাবতেই অবাক হতে হয়। বিশ্ব পরিসরে বাংলাদেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরি হয়েছে। শেখ হাসিনা সরকারপ্রধান হিসেবে এমন সমস্যার সমাধানে যে প্রজ্ঞার পরিচয় দিয়েছেন- তা প্রশংসা কুড়িয়েছে। মিয়ানমার তার নাগরিকদের প্রতি যে সহিংস, অমানবিক আচরণ করেছে তার নজির খুঁজে পাওয়া ভার। তবে বাংলাদেশ এবং শেখ হাসিনার সরকার রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিশ্ব পরাশক্তিগুলোর চরিত্র উন্মোচন করতে পেরেছেন। বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে নিতে বাধ্য করতে সফল ক‚টনৈতিক উদ্যোগ নিয়েছে। আমরা আশা করব ২০১৮ সালে রোহিঙ্গারা নিজ দেশে ফিরে যাবে, বাংলাদেশ এমন জটিল, কঠিন এবং অনাকাক্সিক্ষত বোঝা বহন থেকে মুক্তি পাবে। এ বছরও বাংলাদেশ জঙ্গিদের দমনে সাফল্যের ধারা অব্যাহত রাখতে পেরেছে, সর্বত্র জঙ্গিদের আস্তানা নির্মূলে সাফল্য অর্জন করেছে। এই বছর মুফতি হান্নানের মতো জঙ্গির ফাঁসির রায়ও কার্যকর করা সম্ভব হয়েছে। বছরের আলোচিত ঘটনা ছিল কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন এবং রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন। দুই নির্বাচনেই আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী পরাজিত হয়েছেন। কিন্তু নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু এবং গ্রহণযোগ্য হয়েছে। আওয়ামী লীগ দুই শহরেই মেয়র প্রার্থী মনোনয়ন দানে বাস্তবতাকে বিবেচনায় নেয়নি। নিয়ে নির্বাচন করলে দুই শহরেই হয়তো জিতে আসতে পারত। অন্যদিকে সর্বশেষ রসিক নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী বিপুল ভোটে জয়ের কারণ জাতীয় পার্টির জনপ্রিয়তা বাড়ার কোনো ইঙ্গিত দেয় না, দিলে কাউন্সিলর পদে তার প্রতিফলন ঘটত। এখানেও আওয়ামী লীগের প্রার্থী মনোনয়নে ভুল ছিল। এতে কোনো সন্দেহ নেই। ফলে বড় সংখ্যক ভোটার অপেক্ষাকৃত জনপ্রিয় প্রার্থী হওয়ায় মুস্তাফিজুর রহমানকে ভোট দিয়েছেন। বিএনপির প্রার্থীর ভোট প্রাপ্তি থেকে দলটির অনেক হিসাব-নিকাশই ঠিক নয়- এমন ইঙ্গিত পাওয়া যায়। নতুন ২০১৮ সালটি নানা কারণেই বেশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। প্রথমত, দ্রব্যমূল্য সরকার কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করে- তা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। দ্বিতীয়ত, ভাঙাচোরা রাস্তাঘাট শুকনো মৌসুমের মধ্যেই মেরামত করতে সরকার পারছে কি না- তা বছর শুরু থেকে সবাই লক্ষ্য করবে। তৃতীয়ত, এই বছরটি হবে আওয়ামী লীগ সরকারের এই মেয়দের শেষ বছর। বেশ কটি সিটি করপোরেশন নির্বাচন এবং ডিসেম্বরে একাদশতম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। প্রধান বিরোধী দল বিএনপি এই নির্বাচনে অংশ নেয়ার যে সব পূর্বশর্ত দিচ্ছে- তা শেষ পর্যন্ত আদৌ পূরণ হবে কি না, কোনো আন্দোলন ছাড়া এসব দাবি পূরণ হবে কি না তা রাজনীতির বিশ্লেষকরা ভালো করেই জানেন। কিন্তু অবস্থা দৃশ্যে মনে হচ্ছে সে রকম কোনো আন্দোলন দাঁড় করানোর মতো পরিস্থিতি বিএনপি সৃষ্টি করতে পারবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ আছে। তাহলে সংবিধান মোতাবেক নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার কোনো বিকল্প নেই। নির্বাচন কমিশন সেভাবেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে বাধ্য। তবে বিএনপি ২০১২-১৩ সালের মতো রাস্তায় জ্বালাও-পোড়াও কোনো কর্মসূচি নামাতে পারবে বলেও মনে হয় না। কেননা, তেমন আক্রমণাত্মক কর্মসূচি দিয়ে পরিবেশ নিয়ন্ত্রণ করা দাবি আদায় করা, উন্নত দুনিয়ার সমর্থন লাভ করা মোটের ওপর অসম্ভব ব্যাপার। সে ক্ষেত্রে বিএনপি কোন পথে অগ্রসর হবে- তা এই বছর দেখার বিষয় হয়ে থাকবে। শিগগিরই ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের উপনির্বাচন। এ ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ আর একজন আনিসুল হককে খুঁজে পেলে হয়তো উতরে যেতেও পারে। কেননা ঢাকায় নির্বাচনটি সরকারের জন্য খুব সহজ হবে না। ৫টি সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে কী হবে- তাও এ বছরই দেখা যাবে। তবে ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বছরটি কতটা টানটান উত্তেজনায় যাবে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসীর হাতে রাষ্ট্রক্ষমতা থাকবে কিনা ইত্যাদি বছর শেষেই দেখা যাবে, নির্ধারিতও হবে। সে কারণে ২০১৮ সালটি বাংলাদেশের জন্য অনেক বেশি প্রতীক্ষা ও প্রত্যাশার বছর হয়ে দেখা দিয়েছে। সবাই আশা করছে আগামী বছরটি ভালোভাবে কাটানো, ভালো নির্বাচন শেষে একটি উন্নত সমৃদ্ধ দেশ পরিচালনার নেতৃত্বকে জাতি নির্বাচিত করবে।  

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App