×

জাতীয়

তিন মাসেও গ্রেপ্তার করা যায়নি মূল অভিযুক্তকে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১০:৫২ এএম

তিন মাসেও গ্রেপ্তার করা যায়নি মূল অভিযুক্তকে

আজিজ মোহাম্মদ ভাই: ফাইল ছবি

শুদ্ধি অভিযানের সময় নানা কর্মকাণ্ডে আলোচিত আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের গুলশানের বাড়িতে বিপুল পরিমাণ মাদক ও ক্যাসিনো চালানোর আলামত মেলার ঘটনায় হওয়া মামলার তিন মাস পেরুলেও তেমন অগ্রগতি নেই। এখনো গ্রেপ্তার করা যায়নি মূলহোতা ওই বাড়িতে অবৈধ ক্যাসিনো ও মাদক কারবারের নিয়ন্ত্রক, আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের ভাতিজাকে। গত ২৭ অক্টোবর গুলশানের ৫৭ নাম্বার সড়কের ১১/এ হোল্ডিংয়ের দুটি ছয়তলা ভবনে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান চালিয়ে ৩৯০ বোতল মদ, চার কেজি সিসা, দুই গ্রাম গাঁজা, একটি ক্যাসিনো কার্ড, এএমবি লেখা ১ হাজার ৬০০ ক্যাসিনো কয়েন জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় আজিজের ভাতিজা ওমর মোহাম্মদ, গ্রেপ্তারকৃত কর্মচারী নবীন ও পারভেজকে আসামি করে দুটি মামলা করা হয়। অভিযানের সময় ফায়ার এক্সিট দিয়ে পালিয়ে যান ওমর মোহাম্মদ। এ মামলা দুটির এজাহারে অভিযোগ করা হয়, গুলশানের ৫৭ নাম্বার সড়কের ১১/এ হোল্ডিংয়ের ছয়তলা বাড়ির তৃতীয় তলায় ওমর মোহাম্মদ তার ডুপ্লেক্স ফ্ল্যাটে ও ছাদে মাদকদ্রব্য মজুদের জন্য তৈরি করেছিলেন বিশেষ কারুকার্যকর ঘর। এ ছাড়া ছয়তলা বাড়ির চতুর্থ তলার উত্তর-পশ্চিম পাশের ফ্ল্যাটে বিপুল পরিমাণে মদ রেখে বিক্রি করছিলেন নবীন মণ্ডল ও পারভেজ। এদিকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি) সূত্র বলছে, প্রাথমিক তদন্তেই আজিজ মোহাম্মদের ভাতিজা ওমর মোহাম্মদ ভাই বাড়িতে অবৈধ কারবার চালাতেন বলে তথ্য মিললেও পলাতক থাকায় তাকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। আদালতের নির্দেশে বাড়ির দুই কেয়ারটেকার নবীন মণ্ডল ও পারভেজকে দুই দফায় রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা তারা স্বীকার করা ছাড়া তেমন কোনো তথ্য মেলেনি। এখন কারাগারে রয়েছেন তারা। ডিএনসিসি ও একাধিক সূত্রে জানা গেছে, এএমবি হচ্ছে আজিজ মোহাম্মদ ভাই বা তার ভাতিজা আহাদ মোহাম্মদ ভাইয়ের নামের সংক্ষিপ্ত রূপ। আজিজের ভাই রাজা মোহাম্মদের ছেলে আহাদ বাড়িতে ক্যাসিনোর আসর বসাতেন। সেখানে ডলারে জুয়া খেলা হতো। আর কর্মচারীদের দিয়ে মদ বিক্রি করতেন আহাদের ভাই ওমর মোহাম্মদ। তাদের বাড়িতে যেতেন আজিজ মোহাম্মদের ঘনিষ্ঠ বিত্তবান অনেক ব্যক্তি। চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী ও সালমান শাহের মৃত্যুসহ মাদক কারবারে অভিযোগেও সমালোচিত হন অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজের মালিক আজিজ। অর্ধশত চলচ্চিত্রের প্রযোজক এ ব্যক্তি বাজার থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়ার মামলায় পলাতক হলেও অনেক বছর থাইল্যান্ডে আছেন। বর্তমানে অগ্রগতির ব্যাপারে জানতে চাইলে মামলা দুটির তদন্ত কর্মকর্তা ডিএনসিসি উত্তর জোনের ইন্সপেক্টর কামরুজ্জামান ও দক্ষিণ জোনের ইন্সপেক্টর ইব্রাহিম খান ভোরের কাগজকে জানান, কেয়ারটেকার নবীন ও পারভেজকে দুই দফায় মোট ৪ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে এসব কাজে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করা ছাড়াও তেমন আর কোনো তথ্য দেয়নি তারা। পরে ১০ নভেম্বর দ্বিতীয় দফা রিমান্ড শেষে আদালতের নির্দেশ মোতাবেক তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। তবে আসামিরা আদালতে জবানবন্দি দেয়নি এখনো। ওই দুই কর্মকর্তা আরো জানান, অভিযুক্ত ওমর মোহাম্মদ পলাতক থাকায় এখনো গ্রেপ্তার করা যায়নি। তার দেশত্যাগ বন্ধ করতে ইমিগ্রেশনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে চিঠিও দেয়া হয়েছে। এ ছাড়াও ওই বাড়ির বিষয়ে বিস্তারিত জানতে সিটি করপোরেশনের কাছে চিঠি দেয়া হয়েছে। উত্তর পেলেই পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App