×

জাতীয়

গতি বাড়ছে মেগা প্রকল্পে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪ জানুয়ারি ২০২০, ০৯:৪৬ এএম

গতি বাড়ছে মেগা প্রকল্পে
মাত্র কয়েক দশক আগেও বিশ্বে বাংলাদেশের পরিচয় ছিল ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি, দারিদ্র্যের হার কমানো, শিক্ষা-স্বাস্থ্য-যোগাযোগ খাতে অভূতপূর্ব সাফল্যের কারণে দরিদ্র দেশের বদনাম ঘুচিয়ে সারা বিশ্বে অনন্য উদাহরণ আজ বাংলাদেশ। স্বাধীনতার পর মাত্র কয়েক কোটি টাকার বাজেট নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল যে ছোট্ট দেশটি, সেই দেশের বাজেট আজ পাঁচ লাখ কোটিকেও ছাড়িয়ে গেছে। দারিদ্র্যপীড়িত অর্থনীতির দেশটি আজ পরিচিতি পেয়েছে এশিয়ার ‘টাইগার ইকোনমি’ হিসেবে। রাজধানী থেকে প্রত্যন্ত গ্রাম সর্বত্র উন্নয়নের জোয়ার। দ্রুতগতিতে বাস্তবায়িত হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ অগ্রাধিকার প্রকল্পগুলো। সংশ্লিষ্টদের মতে, মুজিববর্ষে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সঞ্চারিত হয়েছে নতুন প্রাণ। ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের আগেই মেগা প্রকল্পগুলোর অধিকাংশই বাস্তবায়িত হবে বলে আশা প্রকাশ করছেন তারা। সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত ফাস্ট ট্র্যাকভুক্ত মেগা প্রকল্পগুলো হচ্ছে পদ্মা সেতু, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র, মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্র, মেট্রোরেল প্রকল্প, এলএনজি টার্মিনাল ও গ্যাস পাইপলাইন প্রকল্প, পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর, পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগ, দোহাজারী-রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু-মিয়ানমারের কাছে ঘুমধুম পর্যন্ত সিঙ্গেল লাইন ডুয়েলগেজ ট্র্যাক নির্মাণ প্রকল্প। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্যে প্রতিটি প্রকল্পে বাড়তি তদারকি করছেন সংশ্লিষ্টরা। সদ্য বিদায়ী বছরের শেষ দিনে পদ্মা সেতুতে বসানো হয়েছে ২০তম স্প্যান। ওই দিন সেতুর ১৮ ও ১৯ নম্বর পিলারের ওপর সফলভাবে বসানো হয় ‘৩-এফ’ নামের স্প্যানটি। আর এর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হলো সেতুর প্রায় অর্ধেক তিন কিলোমিটার। স্বপ্নের এই সেতুতে আরো ২১টি স্প্যান বসানো বাকি রয়েছে। চলতি বছরের জুনের মধ্যে পদ্মা সেতুর কাজ শেষ হবে জানিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, পদ্মা সেতুর বাস্তব কাজের অগ্রগতি ৮৪ শতাংশ। সেতুর আর্থিক অগ্রগতি ৭৫ দশমিক ৮৪ শতাংশ এবং প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৭৪ শতাংশ। এদিকে যানজটের রাজধানীতে দ্রুত যাতায়াতের স্বপ্ন পূরণের সারথি মেট্রোরেলের খুঁটির ওপর বসে যাচ্ছে রেলপাত বসানোর ভায়াডাক্ট। ইতোমধ্যে উত্তরা থেকে মিরপুর অংশের প্রায় ছয় কিলোমিটারের বেশি জায়গায় কাজ শেষ হয়েছে। এ অংশের নির্মাণকাজের প্রায় ৫০ শতাংশ কাজ শেষ। এ ছাড়া উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত অগ্রগতি ৫৫ শতাংশ এবং দ্বিতীয় পর্যায়ের আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশের অগ্রগতি ২৪ দশমিক ৭৪ শতাংশ। গোটা প্রকল্পের কাজে অগ্রগতি হয়েছে প্রায় ৩৫ শতাংশ। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে ২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বর মেট্রোরেল প্রকল্পের পুরো অংশ চালু করা হবে। অন্যদিকে চট্টগ্রামে পুরোদমে এগিয়ে চলছে সরকারের অন্যতম মেগা প্রকল্প কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু টানেল নির্মাণ কাজ। মাটি খনন করে রিং বসানোর পাশাপাশি নদীর উভয় পাশে দ্রুতগতিতে চলছে সংযোগ সড়ক নির্মাণকাজও। টানেলের ৩ দশমিক ৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে মধ্যে ৩৬০ মিটার অংশের খনন কাজ শেষ হয়েছে। মোট ১৮০টি রিং বসানো হয়েছে। সার্বিকভাবে প্রকল্পের ৪৮ শতাংশ ভৌত অগ্রগতি সম্পন্ন হয়েছে। সব ঠিক থাকলে ২০২২ সালের মধ্যে এর নির্মাণ কাজ শেষ হবে বলে আশাব্যক্ত করেছেন সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর দ্রুত বাস্তবায়নে বারবার তাগিদ দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মুজিববর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী বছরেই কাজ শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক ভোরের কাগজকে বলেন, সরকার গত এক দশকে দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছে। অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি বাড়িয়েছে। পাশাপাশি বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্র চিহ্নিত করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে। প্রধানমন্ত্রী নিজেই এসব কাজের তদারকি করছেন। এ ব্যাপারে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান ভোরের কাগজকে বলেন, উন্নয়নের জন্য আমরা ডেল্টাপ্ল্যান করেছি। দেশের অবহেলিত অঞ্চলসহ প্রতিটি অঞ্চলে নিজস্ব প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য বজায় রেখে উন্নয়ন কর্মপরিকল্পনা হাতে নিয়েছি। হাওরাঞ্চল, পাহাড়ি অঞ্চল, উপক‚লীয় অঞ্চলের জন্য সরকারের পৃথক পৃথক উন্নয়ন পরিকল্পনা রয়েছে। মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের পাশাপাশি ডেল্টা প্রকল্পের কাজও শুরু করতে যাচ্ছি আমরা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App