×

জাতীয়

অনৈতিক কর্মকাণ্ডের জেরেই জোড়া খুন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৭:৩১ পিএম

অনৈতিক কাজের টাকার ভাগবাটোয়ারা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে রাজধানীর মিরপুর-২ নম্বর সেকশনের ভাড়া বাড়িতে খুন হয়েছেন গৃহকর্ত্রী রহিমা বেগম (৬০) ও তার গৃহকর্মী সুমি আক্তার (২০)। এ জোড়া খুনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে রমজান (২২) ও ইউসুফ (২৩) নামে দুইজনকে গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য জানতে পেরেছে পুলিশ।

পুলিশ জানায়, ভাড়া বাড়িতে অনৈতিক ব্যবসা করে আসছিলেন গৃহকর্ত্রী রহিমা বেগম। তার এ কাজে সহযোগিতা করতেন রমজান ও ইউসুফ নামে দুই দালাল। টাকার ভাগবাটোয়ারা নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে দুই দালালের সঙ্গে দ্বন্দ্ব চলছিল রহিমা বেগমের। তাদের চাহিদা মতো টাকা দিতে না পারায় মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) এ নিয়ে ঝগড়ার এক পর্যায়ে প্রথমে গৃহকর্মী সুমিকে শ্বাসরোধে হত্যা করে রমজান ও ইউসুফ। পরে একই কায়দায় রহিমা বেগমকেও হত্যা করে পালিয়ে যায় তারা।

বুধবার (৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় লঞ্চে বরিশালে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে রাজধানীর সদরঘাট এলাকা থেকে রমজান ও ইউসুফকে গ্রেপ্তার করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি পশ্চিম) একটি দল।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি-পশ্চিম) পল্লবী জোনের সিনিয়র এসি শাহাদাত হোসেন সুমন ভোরের কাগজকে বলেন, অনেকদিন ধরেই মিরপুরেই ওই বাসায় অনৈতিক ব্যবসা চালিয়ে আসছিলেন নিহত রহিমা। তার এ কাজে খদ্দের সংগ্রহসহ বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করতেন দালাল রমজান ও ইউসুফ। সম্প্রতি টাকার ভাগাভাগি নিয়েই দ্বন্দ্বের জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে বলে জানিয়েছে গ্রেপ্তারকৃতরা। তাদের আরো জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড চেয়ে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) আদালতে পাঠানো হবে। রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে হত্যাকাণ্ডের অন্য কোনো কারণ আছে কিনা সে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে।

এদিকে বুধবার (৪ ডিসেম্বর) নিহতদের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। শ্বাসরোধ করেই তাদের হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন শহিদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসক কেএম মাইনুদ্দিন। এ জোড়া খুনের ঘটনায় গত মঙ্গলবার রাতেই মিরপুর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহত রহিমা বেগমের মেয়ে রাশিদা বেগম মঙ্গলবার রাতে অজ্ঞাতদের আসামি করে হত্যা মামলাটি দায়ের করেন।

মিরপুর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সৈয়দ আকতার হোসেন জানান, প্রাথমিক তদন্তে ঘটনাটি হত্যাকাণ্ড মনে হওয়ায় মামলাটি নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, রহিমা বেগম মারা যাওয়ার খবরটি তার পালক পুত্র সোহেলই প্রথম ফোন করে রহিমা বেগমের মেয়ে রাশিদাকে জানান। মঙ্গলবার রাতেই সোহেলকে পুলিশি হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। কিন্তু সোহেলকে হেফাজতে নিলেও সংশ্লিষ্টতা না থাকায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়নি।

উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার রাতে মিরপুর ২ নম্বর সেকশনের ‘এ’ ব্লকের ২ নম্বর সড়কের ৯ নম্বর বাড়ির চতুর্থতলা থেকে রহিমা বেগম ও তার গৃহকর্মী সুমি আক্তারের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। হত্যাকা-ের ঘটনায় সিআইডির ক্রাইমসিন ইউনিটের সদস্যরা ঘটনাস্থল ও বাড়ি থেকে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করে। তারা এ ঘটনার পৃথকভাবে তদন্ত করছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App