×

জাতীয়

ঢাবিতে ৫১তম সমাবর্তন আজ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৬ অক্টোবর ২০১৮, ১১:৪৫ এএম

ঢাবিতে ৫১তম সমাবর্তন আজ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ৫১তম সমাবর্তন আজ শনিবার (৬ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১১টায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে এই সমাবর্তনে সভাপতিত্ব করবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর ও রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এবারের সমাবর্তনে ২১ হাজার ১১১ জন রেজিস্ট্রেশন করেছেন, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি। অনুষ্ঠানে কৃতী শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ৯৬টি স্বর্ণপদক, ৮১ জনকে পিএইচডি ও ২৭ জনকে এমফিল ডিগ্রি দেওয়া হবে। এবারের সমাবর্তনে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখবেন জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান। ঢাবি অধিভুক্ত সাত কলেজের স্নাতকসহ ঢাকা কলেজ ও ইডেন মহিলা কলেজ ভেন্যু থেকে ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে সরাসরি সমাবর্তন অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন। শিক্ষার্থীদের জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই দিনটিতে শিক্ষা সমাপনীর সনদ ও কৃতী শিক্ষার্থীদের মধ্যে পদক বিতরণ করা হয়। শিক্ষা জীবন সমাপ্তির আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতির এই দিনটিতে তাই শনিবার সকাল থেকেই ঢাবি ক্যাম্পাসে সাজ সাজ রব। সকাল থেকেই সমাবর্তনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠতে শুরু করে ঢাবি ক্যাম্পাস। চিরাচরিত গাউন আর মাথায় সমাবর্তন ক্যাপ পরে শিক্ষার্থীরা জড়ো হতে শুরু করেন কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে। বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে হৈ হুল্লোড় আর ফটোসেশন চলছে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে। একইসঙ্গে কর্মজীবনে প্রবেশ, মানসম্মতত চাকরি পাওয়ার মতো বিষয়গুলোকে ঘিরে অজানা আশঙ্কা ও ভীতিও কাজ করছে তাদের মধ্যে। সমাবর্তনের জন্য চার দিন আগেই সমার্বতনের গাউন, ক্যাপ ও অন্যান্য সরঞ্জাম সরবরাহ করা হয়েছে নিবন্ধিত শিক্ষার্থীদের মধ্যে। গাউন পাওয়ার পর সেদিন থেকেই শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণে সহপাঠীদের নিয়ে, কেউ বাবা-মা বা পরিবারের সদস্যদের নিয়ে স্মৃতি ধরে রাখতে আনন্দময় সময় পার করেছেন। সমাবর্তনের উচ্ছ্বাস নিয়ে ঢাবি আকাউন্টিং বিভাগের শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, চার-পাঁচ বছর পড়ালেখার পর সমাবর্তনের মাধ্যমে যখন ডিগ্রি পাওয়া খুবই আনন্দের ব্যাপার। যখন সমাবর্তনের গাউন পরে ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপলোড করি, তখন পরিবারের সদস্যসহ আমার গ্রামের প্রতিবেশীরাও গর্ব অনুভব করে। শেষ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষা জীবন শেষ করার আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি পাচ্ছি, এটা নিজের কাছেও গর্বের। সবকিছু মিলিয়ে অন্য রকম এক অনুভূতি সমাবর্তনে যোগ দিতে আসা একজন শিক্ষার্থী বললেন, শিক্ষা জীবন শেষ করার পর তো পরিবারের প্রত্যাশাও থাকে। দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়ালেখা শেষ করে ভালো একটা চাকরি মিলবে— এটা তো প্রত্যাশা করেনই। কিন্তু চাকরির বাজারের বাস্তবতাটা সবাই সবসময় বুঝতে পারেন না। নৃবিজ্ঞান বিভাগ থেকে সমাবর্তনে যোগ দেওয়া সাদিকুর নয়ন বলেন, স্নাতক শেষ করা একজন শিক্ষার্থীর মনে চাকরির চিন্তা থাকা স্বাভাবিক। বেসরকারি খাতে নিশ্চয়তা নেই। সে তুলনায় সরকারি চাকরি সবার পছন্দ। এ ক্ষেত্রে আবার প্রতিযোগিতা বেশি থাকায় চাকরি পেতেও সময় লাগে অনেকের। তখন অনেকের হতাশা কাজ করে। বেসরকারি খাতেও চাকরির নিরাপত্তা নিশ্চিত হলে অনেকেই হয়তো পছন্দের সেক্টরে চাকরি করতে আগ্রহী হতেন। ঢাবি গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে গ্র্যাজুয়েশন শেষ করা তারেক হাসান নির্ঝর বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবছর হাজার হাজার গ্র্যাজুয়েট তৈরি করছে। কিন্তু তাদের অনেককেও পড়ালেখা শেষ করার পর কয়েক বছর বেকার থাকতে হচ্ছে। এর মূল কারণ আমাদের দেশে চাকরির বাজার অতটা বড় না। সবাই সরকারি চাকরির পেছনে ছোটে। শিক্ষার্থীরা যে পড়ালেখা শেষ করেই উদ্যোক্তা হবে, সেই পরিবেশটা বা সেই মানসিকতা এখানে তৈরি হয়নি। এ কারণে জাঁকজমকপূর্ণ সমাবর্তনের দিনেও কারও কারও মধ্যে হতাশা বা শঙ্কা থাকা অস্বাভাবিক নয়। মাহমুদ হাসান নামের আরেকজন ঢাবি শিক্ষার্থী বললেন, একজন শিক্ষার্থীর কাছে সমাবর্তন অনেক আবেগের ব্যাপার, পুরো চার বছরের উদ্দীপনা কাজ করে। পাশাপাশি যখন সমাবর্তনের জন্য কিংবা সমাবর্তনের পোশাক গায়ে জড়ানো হয়, তখন কিন্তু কর্মজীবনের বাস্তবতার আশঙ্কাও কাজ করে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App