×

জাতীয়

নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করতে নানা কৌশল বিএনপির

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৯ জুলাই ২০১৮, ০৪:৪৩ পিএম

রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) নির্বাচনের বাকি আর মাত্র ১২ দিন। ভোটারদের মন জয় করতে প্রার্থীরা কাকডাকা ভোর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। আবার কেউ কেউ নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করতে নীরবে বিভিন্ন অপকৌশল অবলম্বন করছেন। ভোটারদের ভয়ভীতি দেখানো, প্রার্থীদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার, নির্বাচনী পথসভায় হামলার ঘটনাও ঘটছে। এতে ভোটারদের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটারদের মাঝে কৌশলে ভয়ঙ্কর ত্রাস সৃষ্টির পাঁয়তারা করছেন মহানগর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মামুন-অর-রশিদ। ওয়ার্ডে জামায়াতের কাউন্সিলর প্রার্থীর সঙ্গে গোপনে আঁতাত করে আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে প্রকাশ্য সমর্থন দিয়ে ভোটারদের মাঝে তিনি ও তার বাহিনী আতঙ্ক সৃষ্টি করছেন। মামুন-আর-রশিদ বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকলেও এলাকায় ‘লাদেন মামুন’ নামে পরিচিত। নগরীর প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সঙ্গে সখ্যের সুযোগে তিনি আসন্ন সিটি নির্বাচনে ১৩ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জামায়াতের কাউন্সিলর প্রার্থী আজিজুল ইসলাম ওরফে জঙ্গিকে (ঘুড়ি প্রতীক) গোপনে সমর্থন দিয়ে ক‚টচাল ছাড়ছেন। অপরদিকে আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী আব্দুল মোমিনকে প্রকাশ্য সমর্থন দিয়ে তিনি এলাকায় আলোচনার ঝড় তুলেছেন। প্রকাশ্যে দুজনকে সমর্থন জানিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে এক ধরনের নির্বাচনী হাঙ্গামা সৃষ্টি করে তিনি ওই এলাকায় নির্বাচনী পরিবেশ অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা করছেন বলে এলাকার ভোটারদের অভিযোগ। এতে ওই এলাকার ভোটারদের মধ্যেও চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। ১৩নং ওয়ার্ডের আব্দুল ওয়াহাব নামে এক ভোটার জানান, মামুন এর আগের সিটি নির্বাচনে একইভাবে নির্বাচনী হাঙ্গামা সৃষ্টি করে এলাকায় অশান্তি সৃষ্টি করেছিল। তার এই দ্বিমুখী নীতির কারণে আমরা সব সময় আতঙ্কে থাকি। ওয়ার্ডবাসীর দাবিÑ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য এই মামুন ও তার বাহিনীকে নিয়ন্ত্রণ করা অত্যাবশ্যক। তা না হলে নির্বাচনের আগে বিশেষ করে নির্বাচনের দিন তার কারণেই শুধু পুরো এলাকা উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে। অপরদিকে, গতকাল বুধবার আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থীর বিরুদ্ধে অপপ্রচার করায় জামায়াতের চার নারী কর্মীকে আটক করে পুলিশে দিয়েছেন স্থানীয়রা। আটককৃতরা হলোÑ হড়গ্রাম পূর্বপাড়ার ওয়াশেফ আলীর স্ত্রী মোসা. আসমা আজিজ (৫২), হড়গ্রাম কলেজপাড়ার শহিদুল ইসলাম পিন্টুর স্ত্রী সেলিনা বেগম (৪০), হড়গ্রাম রানীদীঘি এলাকার এশারুল হকের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম (৪৫) ও পূর্ব মোল্লাপাড়ার মশিউর রহমান মিঠুর স্ত্রী ময়না বেগম (২৫)। নগরীর হড়গ্রাম কোর্ট স্টেশন এলাকায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে তারা আওয়ামী লীগ ও মেয়রপ্রার্থী খায়রুজ্জামান লিটনের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছিল বলে অভিযোগ করেছেন কাশিয়াডাঙ্গা থানার ওসি রবিউল ইসলাম। তিনি জানান, তারা জামায়াতের এক কাউন্সিলর প্রার্থীর পক্ষে প্রচার চালানোর নামে বাড়ি বাড়ি গিয়ে আওয়ামী লীগ ও দলটির মেয়রপ্রার্থী খায়রুজ্জামান লিটনের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছিল। এ সময় স্থানীয় লোকজনের রোষানলে পড়ে তারা। এক পর্যায়ে স্থানীয়রা তাদের আটকে রেখে পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ গিয়ে তাদের আটক করে থানায় নিয়ে যায়। নির্বাচনী বিধি অনুয়ায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ছাড়া নির্বাচনী বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে গত মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের বিএনপি মনোনীত মেয়রপ্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেনের ১০ কর্মীর বিরুদ্ধে বোয়ালিয়া থানার এসআই শামীম বাদী হয়ে মামলা দায়েক করেছেন। এ ঘটনায় নগরীতে এখনো আতঙ্ক বিরাজ করছে। মহানগর পুলিশের মুখপাত্র ও সিনিয়র সহকারী কমিশনার ইফতেখার আলমের কাছে বিএনপি নেতা মামুন-আর-রশিদের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। এমনটা হলে সিটিএসবিকে বলব সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডে খোঁজখবর নিতে। নির্বাচনে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের ক্ষেত্রে কেউ বিঘœ ঘটানোর চেষ্টা করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত মামুন-অর-রশিদের মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App