×

জাতীয়

নির্বাচনে নারী ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৭:০৬ পিএম

নির্বাচনে নারী ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি

নির্বাচনে নারী ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানান নারীপক্ষ। ছবি: ভোরের কাগজ

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে দেশের বিভিন্ন স্থানের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করে সেখানকার নারী ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ নির্বাচনে সম্পৃক্ত প্রশাসন, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও এলাকাবাসীর যৌথ উদ্যোগে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়াসহ পাঁচ দফা দাবি বাস্তবায়নের জোর দাবি জানিয়েছে নারীপক্ষ।

শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে পাঁচটায় রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে "নির্বাচনকে ঘিরে সহিংসতা থেকে নারী ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সুরক্ষা নিশ্চিত করুন"- প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে 'আলোর স্মরণে কাটুক আঁধার' অনুষ্ঠানে এই দাবি জানানো হয়।

নারীপক্ষের সদস্য ফেরদৌসি আখতারের আহ্বানে ছায়ানটের জান্নাত-এ-ফেরদৌসি ও নারায়ণ চন্দ্র শীলের 'আগুনের পরশমণি' গানের পাশাপাশি মোমবাতি জ্বালানো হয়। এতে স্মৃতিচারণ করেন ৭ নম্বর সেক্টরের বীর মুক্তিযোদ্ধা মোকাররম হোসেন ও ২ নম্বর সেক্টরের বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউদ্দীন আহমেদ। অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন নারীপক্ষের সদস্য রাশিদা হোসেন।

নারীপক্ষের সদস্য রেহানী সামদানীর সঞ্চালনায় এতে জান্নাত-এ-ফেরদৌসি ও নারায়ণ চন্দ্র শীলের পরিবেশনায় 'মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি', 'আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম' গান দুটি গাওয়া হয়। এছাড়াও এনএসএম মইনুল হাসানের সজলে কবিতা 'সংখ্যালঘু' আবৃত্তি করেন ইকবাল আহামেদ।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, দেশের স্বাধীনতার জন্য ধর্ম, বর্ণ, জাতি, গোষ্ঠী, নারী, পুরুষ নির্বিশেষে যুদ্ধ করেছে, ত্যাগ স্বীকার করেছে। অনেক কিছু হারিয়েছে। কিন্তু স্বাধীনতার ৫২ বছরেও বাংলাদেশটা সেই সকল মানুষের দেশ হয়ে উঠতে পারেনি। বিশেষ করে নারী ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের সুরক্ষা এবং জানমালের কোন নিরাপত্তা বিধান আজও হয়নি।

নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নারী ও সংখ্যালঘুদের ওপর নিপীড়ন নির্যাতন করা হয় উল্লেখ করে বক্তারা আরো বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে প্রায় প্রতিটি জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক ও সাম্প্রদায়িক সহিংসতা, বিশেষ করে নারী ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর সহিংসতা অব্যাহত আছে। অনেক সময় স্থানীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করেও নারী এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর সহিংসতা হয়েছে।

এসময় সকল অসমতা দূর করে একটি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের প্রত্যাশা ব্যক্ত করে আসন্ন দ্বাদশ নির্বাচনকে ঘিরেও যেন আর কোনো নারী বা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের উপর হত্যা, ধর্ষণ, ধর্ষণচেষ্টা বা তাদের বাড়ি-ঘর, উপাসনালয় জ্বালাও-পোড়াও, ভাঙচুর না হয় এবং তাদের জানমালের নিরাপত্তা বিধানে সরকার, পুলিশ প্রশাসন, রাজনৈতিক দল এবং সুশীল সমাজকে সতর্ক থাকা ও বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করার আহ্বান জানানো হয়।

এসময় অনুষ্ঠানে পাঁচ দফা দাবি পেশ করা হয়। পাঁচটি দফা হলো- ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করে নির্বাচনের আগে, নির্বাচনের সময়ে এবং নির্বাচন পরবর্তী সময়ে সেখানকার নারী ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ নির্বাচনে সম্পৃক্ত প্রতিটি প্রশাসন, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহ ও এলাকাবাসীর যৌথ উদ্যোগে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া; নির্বাচন কমিশন কর্তৃক সংশ্লিষ্ট সকল সরকারি প্রতিষ্ঠানকে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা প্রদান এবং তা বাস্তবায়ন তদারকি করা; সরকারি জরুরী সেবাসমূহকে অধিক সক্রিয় ও কার্যকর রাখা; সহিংসতাকারী ও তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দানকারীর বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসন কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ; ধর্ষণ ও যৌননির্যাতনসহ যেকোনো ধরনের সহিংসতা প্রতিরোধে স্থানীয়ভাবে জনপ্রতিরোধ গড়ে তোলা।

উল্লেখ্য, মুক্তিযুদ্ধে হারিয়ে যাওয়া স্বজনদের স্মরণে নারীপক্ষ ১৯৮৮ সাল থেকে প্রতিবছর বিজয় দিবসকে কেন্দ্র করে একেকটি প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে 'আলোর স্মরণে কাটুক আঁধার' অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে আসছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App