×

জাতীয়

আশা জাগিয়েও হলোনা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২২ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৯:০৬ এএম

আশা জাগিয়েও হলোনা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন

এবছর ডিসেম্বরেই পাইলট প্রকল্পের আওতায় কিছু সংখ্যক রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন করার লক্ষ্য ছিল সরকারের। মিয়ানমারের দিক থেকেও ইতিবাচক সাড়া ছিল। প্রত্যাবাসনে গতি আনতে বন্ধু রাষ্ট্র চীনের দূতিয়ালিও ছিল চোখের পড়ার মতো। তবে, মিয়ানমারের বর্তমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতি এবং আন্তর্জাতিক কিছু প্রতিষ্ঠানের কারণে সেই সম্ভাবনা হোঁচট খেয়েছে।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, প্রত্যাবাসন শুরু করতে সব ধরনের প্রস্তুতি রেখেছে সরকার। সুযোগ পেলে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করা হবে। তবে, কবে নাগাদ এটি শুরু হতে পারে সে বিষয়ে কোনো ধারণা দিতে পারছেন না তারা। কেননা, মিয়ানমারে চলমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতির মধ্যে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন করাতে গেলে তা টেকসই হবে না।

ঢাকার এক কূটনীতিক বলেন, নির্বাচনের আগে প্রথম ধাপে কিছু সংখ্যক রোহিঙ্গাকে প্রত্যাবাসন করার লক্ষ্য ছিল। সেই লক্ষ্যে বাংলাদেশ-মিয়ানমার কাজও করছিল। প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে এখনও কাজ চলমান। তবে, এক মাসের বেশি সময় ধরে মিয়ানমারে অস্থিতিশীলতা চলছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কিছু লোক পাঠিয়ে দিলাম, দেখা গেল আবার ওখানকার পরিস্থিতির কারণে ফেরত চলে এলো। তাহলে তো লক্ষ্য অর্জন হলো না। হিসেব-নিকেশ করেই আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তবে, প্রত্যাবাসন শুরুর বিষয়ে আমরা আশাবাদী।

ঢাকা ও ইয়াঙ্গুনের কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের শুরুতে নেপিদোতে বাংলাদেশ-মিয়ানমারের মহাপরিচালকপর্যায়ে হওয়া বৈঠকে পাইলট প্রকল্পের আওতায় শুরুতে প্রায় তিন হাজারের কিছু বেশি রোহিঙ্গা দিয়ে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করতে রাজি হয় মিয়ানমার। পরে যাচাই-বাছাই করে ধাপে ধাপে রোহিঙ্গাদের নিতেও রাজি হয় নেপিদো।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, পাইলট প্রকল্পের আওতায় শুরুর ধাপে দুই হাজার আটশোর বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীকে ঠিক করা হয়েছে। এ সংখ্যার সঙ্গে তাদের পরিবারের কিছু সদস্য যুক্ত হতে পারে। অর্থাৎ তিন হাজারের বেশি সংখ্যক রোহিঙ্গাকে প্রথমে প্রত্যাবাসন করাতে চায় বাংলাদেশ। যদি প্রথম ধাপে সফলতা আসে তাহলে যাচাই-বাছাইয়ের আওতায় থাকা রোহিঙ্গাদের পরবর্তী ধাপে প্রত্যাবাসন করানোর লক্ষ্য সরকারের।

প্রত্যাবাসনের শুরুতে রোহিঙ্গাদের মনোবল বাড়াতে চলতি বছরের নভেম্বর পর্যন্ত দুই দফায় কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেন মিয়ানমারের প্রতিনিধিদল। প্রতিনিধিরা কথা বলেন রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সঙ্গে। আগ্রহী রোহিঙ্গারা দেশে ফিরতে রাজি আছেন বলে বার্তা দেন প্রতিনিধিদের।

চীনের মধ্যস্থতায় প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের চলমান কর্মযজ্ঞের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো থেকে বারবারই বলা হচ্ছে যে, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে অনুকূল পরিবেশ এখনও হয়নি।

চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ে বাংলাদেশ সফর করেন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি আফরিন আখতার। তৃতীয় দফায় বাংলাদেশ সফরে তিনি এবারই কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে যান। সে সময় কক্সবাজারে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে আফরিন বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন শুরু করার মতো প্রতিকূল পরিবেশ এখনো মিয়ানমারে নেই।’

এ প্রসঙ্গে ঢাকার এক কূটনীতিক নাম প্রকাশ না করে বলেন, পশ্চিমারা তো সবসময় একই কথা বলে আসছে। তারা যা-ই বলুক, যদি স্বেচ্ছায় রোহিঙ্গারা যায় তাদের কিছু বলার থাকবে না।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App