×

জাতীয়

নির্বাচন বর্জনে সকলকে রাস্তায় নামার ডাক গণতন্ত্র মঞ্চের

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২১ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৫:৩২ পিএম

নির্বাচন বর্জনে সকলকে রাস্তায় নামার ডাক গণতন্ত্র মঞ্চের

জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গণতন্ত্র মঞ্চের সমাবেশে গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়কারী গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। ছবি: ভোরের কাগজ

৭ ডিসেম্বরের নির্বাচন বর্জনে সকলকে রাস্তায় নামার ডাক দিয়েছে গণতন্ত্র মঞ্চ।

বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক সমাবেশে গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়কারী গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি এই আহ্বান জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ এক ভয়ংকর পরিস্থিতিতে আছে। এই দেশ রক্ষা করতে হলে আজকে সমস্ত জনগণকে রাজপথে নামতে হবে, সমস্ত জনগণকে বৃহত্তর ঐক্যে আসতে হবে। আমরা গণতন্ত্র মঞ্চ বলেছি, আসুন যুগপৎধারায় যার যার অবস্থান থেকে মাঠে নামি, মাঠে জনগণের বৃহত্তর ঐক্য গড়ে উঠবে এবং এই ঐক্য গড়ে উঠলে এই যে তখতে-তাউস, এই যে অত্যাচারী শাসন সেটা উড়ে যাবে।

জনগণকে বলি এই দেশ আমার-আপনার সবার। দেশরক্ষার ডাক এসেছে। কাজেই আপনার আর বসে থাকার সময় নাই। গুলি ওরা (সরকার) করতে পারে, ভয় ওরা দেখাতে পারে কিন্তু গুলি করে সব মানুষকে তারা মারতে পারবে না। পাকিস্তানি সেনা বাহিনী পারে নাই। কাজেই এই আওয়ামী লীগের সরকার যাদের পায়ের তলায় মাটি নেই… চুরি-দুর্নীতি-লুটপাট করে যারা দেশটাকে ফোকলা বানিয়েছে, প্রতিদিন যারা আমার-আপনার পকেট থেকে হাজার লক্ষ কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে দ্রব্যমূল্য বাড়িয়ে, সিন্ডিকেট করে, ব্যাংক লোপাট করে এই সরকারের এই ক্ষমতা নেই। ৭ তারিখের যে তামাশা সেটা বর্জন করতে হবে, বয়কট করতে হবে।

সাকি বলেন,৭ তারিখের তামাশার নির্বাচনে, ভোটাধিকার হরণ করার নির্বাচনে বাংলাদেশের কোনো দেশপ্রেমিক মানুষ তারা ভোট দিতে পারে না। বাংলাদেশের বর্তমান ও ভবিষ্যতের প্রতি, দেশের নাগরিকদের প্রতি, বর্তমান প্রজন্মের প্রতি যদি সামান্য অঙ্গীকার আমাদের থাকে তাহলে আমরা কেউ এই ভোটকে সহযোগিতা করতে পারি না, এই ভোটকে জায়েজ করতে পারি না। কাজেই আজকে যেভাবে একটা তামাশার নির্বাচন, এভাবে একটা প্রহসনের নির্বাচন, জনগণের ভোটাধিকার হরণ করার নির্বাচন যারা আয়োজন করছে এই অবৈধ সরকারকে বাংলাদেশের মানুষকে বলি … আপনারা এই অবৈধ সরকারকে অসহযোগিতা করুন। আমাদের গণসংযোগ চলবে, গণমিছিল চলবে। সামনে আরো বৃহত্তর কর্মসূচি আমরা ঘোষণা করব।

‘একতরফা’ ভোট বয়কটের দাবিতে গণতন্ত্র মঞ্চের উদ্যোগে এই সমাবেশ হয়। সমাবেশের পর তারা মতিঝিল অভিমুখে মিছিল করে। ‘আসন ভিক্ষা নিয়ে বিরোধী দল’-

সাকি বলেন, সরকার জাতীয় পার্টিকে বিরোধী দল বানাতে চায়। জাতীয় পার্টির যে চেয়ারম্যান জিএম কাদের সাহেব তার এক-দুই বছরের বক্তৃতায় মনে হয়েছে উনি বোধহয় জাতীয় পার্টিকে নিয়ে ঘুরে দাঁড়াবেন। মানুষ একটু নতুনভাবে এই দলটিকে দেখা শুরু করেছিলো। কিন্তু তিনি পারলেন না। আমরা শুনেছি, পুলিশ ঘেরাও করে, গোয়েন্দা সংস্থা ঘেরাও করে তাকে চারিদিক থেকে ঘিরে রেখেছে… দেশি-বিদেশী চাপে নির্বাচনে গিয়েছেন। তারপরে বলেছেন, ভিক্ষার সিট নিয়ে উনি (জিএম কাদের) রাজনীতি করবেন না। অনেকে ভেবেছিলেন, চাপের মুখে উনি হয়ত বেরিয়ে আসতে পারে… কিন্তু উনি পারলেন না। ২৬টি আসন নিয়ে সরকারি দলের সাথে সমঝোতা করলেন। এই হচ্ছে বাংলাদেশের বিরোধী দল। এটা কিসের? আপনার কথা অনুযায়ী এটা কি ভিক্ষার আসন। ফলে ভিক্ষার সিট নিয়ে বাংলাদেশে বিরোধী দল তৈরি করে। বাংলাদেশে এরকম একটা তামাশার নির্বাচন করতে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, তারা (সরকার) বিএনপি, গণতন্ত্র মঞ্চ, সব বিরোধী দল, ৬৩টি দল যারা নির্বাচন বয়কট করেছে তারাও জাতীয় পার্টি আর উনাদের খুদ-খোর মিত্ররা তারা যেভাবে এক-একেকটি করে আসন ভিক্ষা নিয়েছে সেরকমভাবে নাকি আমরা আসন ভিক্ষা নিয়ে উনাদের অধীনে নির্বাচন করব। এটা বাংলাদেশে হতে দেয়া হবে না। এদেশের নাগরিকের মর্যাদা এই সরকার কেড়ে নিতে চায়.. বাংলাদেশের জনগণ বেঁচে থাকতে এরকম জিনিস হতে দেবে না। এই সিট ভাগাভাগি, ভিক্ষার সিট বণ্টন এই নির্বাচনে মানুষ অংশ নেবে না… এটা তারাও বুঝে গেছেন। যার ফলে এখন নির্বাচন কমিশনের ঘাড়ে বন্দুক রেখে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে দিয়ে চিঠি দিয়েছে… সেই চিঠি ব্যবহার করে সভা-সমাবেশের ওপরে তারা নানারকম নিষেধাজ্ঞা জারি করছেন। এই নিষেধাজ্ঞা জনগণ মানেনি, মানবে না। বিরোধী দল দমনপীড়নে এখন সরকার এখন ট্রেন-বাসে নাশকতা করে মানুষ হত্যা করে সেই ঘটনার দায় বিরোধী দলের ওপর চাপানোর কৌশল নিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন সাকি। তিনি বলেন, সরকারকে বলি, এসব নাশকতা তো আগে করেছেন। এখন এগুলো আর মানুষ বিশ্বাস করে না। নাশকতা করে বিরোধী দলের ওপর দায় চাপিয়ে আপনারা সবাইকে গ্রেফতার করবেন, ক্র্যাক ডাউন করবেন, মানুষ সেটা বিশ্বাস করে না। জনগণ আপনাদের চাল ধরে ফেলেছে। কাজে তারা আপনাদের আসল উদ্দেশ্য বিরোধী দল-পীড়ন সেটা তারা বুঝে গেছেন… বুঝে গেছে বলেই এই সমস্ত নাশকতা যে সরকারি মদদে হচ্ছে, এই সমস্ত নাশকতা যে নানানভাবে সংস্থার লোকদের দিয়ে করানো হচ্ছে এটা আজকে পরিষ্কার। ট্রেনে কারা আগুন দিয়েছে… এই ট্রেন থেকে লাফ দিয়ে একজন বেঁচে গেছেন সেই যাত্রী পরিষ্কার করে বলে দিয়েছেন যে, পোষাক পরা লোকেরা এই কাজটা করেছেন। জনগণও বুঝে গেছে খেলা কি? সাকির সভাপতিত্বে সমাবেশে নাগরিক ঐক্যের শহীদুল্লাহ কায়সার, জেএসডির শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, ভাসানী অনুসারী পরিষদের হাবিবুর রহমান রিজু, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির আকবর খান, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের ইমরান ইমন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App