×

জাতীয়

ভোট বর্জন করা দল ও উগ্র গোষ্ঠী চরম বিশৃঙ্খলা ঘটাতে পারে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২১ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৪:০৮ পিএম

ভোট বর্জন করা দল ও উগ্র গোষ্ঠী চরম বিশৃঙ্খলা ঘটাতে পারে

প্রতীকী ছবি

দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে ও ভোটগ্রহণের দিনে ভোট বর্জন করা দল ও উগ্র গোষ্ঠী ‘চরম বিশৃঙ্খলা’ ঘটাতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারী ১১টি সংগঠনের মোর্চা ‘ইলেকশন অবজারভার অ্যালায়েন্স (ইওএ)’।

বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে মোর্চা নেতারা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, নির্বাচন বর্জন করা রাজনৈতিক দলগুলো এবং ঘাপটি মেরে থাকা ধর্মান্ধ উগ্র গোষ্ঠী প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান সমাজ উন্নয়ন প্রয়াসের উপদেষ্টা ও ইলেকশন অবজারভার অ্যালায়েন্সের নির্বাহী পরিচালক জাহানারা ফারুক মলি।

তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর বিভিন্ন নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে বিশৃঙ্খলা, ভোটারদের কেন্দ্রে আসতে বাধা দেওয়া, কেন্দ্র দখল, আইনশৃঙ্খলার অবনতি লক্ষ্য করা গেছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমরা ভিন্ন রকম সহিংসতার আশঙ্কা করছি।

জাহানারা ফারুক মলি বলেন, নির্বাচনের পূর্বে, নির্বাচনের দিন এবং পরে আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপদ ভোটকেন্দ্র নিশ্চিত করতে প্রশাসনকে কার্যকর পদক্ষেপ ও সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। এরই মধ্যে আমরা আরও লক্ষ্য করেছি, দেশের কিছু সুশীল সমাজ নির্বাচন নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পরোক্ষ প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। এ বিষয়ে সাইবার ক্রাইম বিভাগসহ নির্বাচন কমিশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও প্রশাসনের পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি বলে আমরা মনে করি।

নির্বাচন কমিশনে (ইসি) পর্যবেক্ষক সংস্থা হিসেবে নিবন্ধিত ১১টি সংগঠনের মোর্চা ‘ইলেকশন অবজারভার অ্যালায়েন্স’। মোর্চার আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম বিষয়ে সংবাদমাধ্যমকে অবহিত করতেই এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

তাদের উদ্দেশ্য আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে একটি নিরপেক্ষ প্রতিবেদন তৈরি করে দেশ ও জাতির সামনে উপস্থাপন করা। পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনকে সুপারিশ করা। গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় প্রতিটি নাগরিকের প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে ইলেকশন অবজারভার অ্যালায়েন্স কার্যক্রম চালিয়ে যাবে। দেশি ও আন্তর্জাতিক সংবাদকর্মী, স্থানীয় ও বিদেশি পর্যবেক্ষক নিরপেক্ষভাবে নির্বাচনের সঠিক চিত্র জাতির সামনে উপস্থাপন করলে নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা ও নিরপেক্ষতা বিষয়ে সাধারণ মানুষের আস্থার জায়গা সম্প্রসারিত হবে।

তিনি বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিন হাজার ৮৯৬ জন পর্যবেক্ষক নির্বাচন পর্যবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করবেন। ইলেকশন অবজারভার অ্যালায়েন্স মনে করে, জাতীয় নির্বাচনে সাধারণ জনগণের অংশগ্রহণ হবে অর্থবহ। অন্যথায় বৃহৎ রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার প্রভাব সাধারণ ভোটারদের মাঝে পড়েছে বলে আমরা ধরে নেবো।

ইসির কার্যক্রম ইতিবাচক উল্লেখ করে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণার পর প্রশাসন রদবদল, প্রভাবশালী প্রার্থীদের বিভিন্ন আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে তলব এবং শুনানির মাধ্যমে পুনরায় প্রার্থিতা ফিরে পাওয়াসহ কমিশনের কার্যক্রমগুলো ইতিবাচক বলে আমরা মনে করি। তবে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বহু ভোটকেন্দ্র রয়েছে, যেখানে এক শ্রেণির ভোটার ভোট দিতে আগ্রহী হন না। এক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনকে ভোটকেন্দ্রের পরিবেশ, নিরাপত্তা, শৃঙ্খলা, দ্রুত সময়ে ভোট প্রদান সম্পন্ন করা, সব প্রার্থীর প্রতিনিধি কেন্দ্রে উপস্থিতির সময় নিরাপত্তা দেয়া, কোনো প্রার্থীর প্রচারণায় বাধা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ নিশ্চিত করতে পারলে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে। এর ব্যত্যয় ঘটলে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হবে।

জাহানারা ফারুক মলি আরও বলেন, জাল ভোট প্রদান, ব্যালট বাক্স ও ব্যালট পেপার ছিনতাই, কেন্দ্রে আসা ও ভোটদানে বাধা প্রদান ভোটের আগে অবৈধ অর্থের লেনদেনসহ বিভিন্ন অনিয়ম বন্ধের ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে। সরকারি দলের অঙ্গসংগঠনগুলোর অতি উৎসাহী কর্মীদের যে কোনো প্রকার উচ্ছৃঙ্খল কর্মসূচি থেকে বিরত রাখতে সরকারদলীয় কেন্দ্রীয় নেতাদের কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- হিউম্যান রাইটস ভয়েসের উপদেষ্টা ও ইলেকশন অবজারভার অ্যালায়েন্সের চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন, সমাজ উন্নয়ন প্রয়াসের সভাপতি আইনুন্নাহার, হিউম্যান রাইটস ভয়েসের নির্বাহী প্রধান নুরুল আমিন, হাফেজ্জী চ্যারিটেবল সোসাইটি অব বাংলাদেশের পরিচালক মো. রাজ, নারী উন্নয়ন সংস্থার পরিচালক পুলিন বিহারী দাশ, সবার তরে আমরা ফাউন্ডেশনের (এসটিএএফ) নির্বাহী প্রধান মনিরা বেগম, বিয়ান মনি সোসাইটির চেয়ারম্যান নাজনীন ইসলাম, অগ্রগতি সেবা সংস্থা (অসেস) নির্বাহী পরিচালক জামাল হোসেন, আল-কোরআন প্রচার সংস্থার (আকপস) মহাসচিব আবদুল মতিন, রাজারহাট স্বাবলম্বী সংস্থার সাধারণ সম্পাদক শরিফা বেগম, প্রকাশ গণ কেন্দ্রের (পিজিকে) নির্বাহী পরিচালক এস এম আমানুল হোসেন তাইমুর ও কেরানীগঞ্জ হিউম্যান রিসোর্চেস ডেভেলপমেন্ট সোসাইটির প্রধান নির্বাহী শামিমা সুলতানা প্রমুখ।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App