×

জাতীয়

ভারত অন্য দেশে গণতন্ত্র রপ্তানি করছে না: পঙ্কজ শরণ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০:০০ পিএম

ভারত অন্য দেশে গণতন্ত্র রপ্তানি করছে না: পঙ্কজ শরণ

বাংলাদেশে নিযুক্ত সাবেক ভারতীয় হাই-কমিশনার পঙ্কজ শরণ, দৈনিক ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত এবং বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত তারিক করিম। ছবি: ভোরের কাগজ

ভারত অন্য দেশে গণতন্ত্র রপ্তানি করছে না: পঙ্কজ শরণ
ভারত অন্য দেশে গণতন্ত্র রপ্তানি করছে না: পঙ্কজ শরণ
ভারত অন্য দেশে গণতন্ত্র রপ্তানি করছে না: পঙ্কজ শরণ
ভারত অন্য দেশে গণতন্ত্র রপ্তানি করছে না: পঙ্কজ শরণ

নির্বাচন কিভাবে হবে ঠিক করবে জনগণ ভবিষ্যতের জন্য দুই দেশের একসঙ্গে কাজ করতে হবে

বাংলাদেশে নিযুক্ত সাবেক ভারতীয় হাই-কমিশনার পঙ্কজ শরণ বলেছেন, নির্বাচন কীভাবে হবে তা সিদ্ধান্ত নেবে বাংলাদেশের জনগণ এবং এর প্রতিষ্ঠানগুলো। নির্বাচন কীভাবে হবে সে বিষয়ে কারও বলার বা রায় দেয়ার অধিকার নেই। ভারত বড় গণতান্ত্রিক দেশ হলেও অন্য দেশে গণতন্ত্র রপ্তানি করছে না। সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) দৈনিক ভোরের কাগজ আয়োজিত ঢাকার একটি হোটেলে ‘বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক: সম্পর্কের রোল মডেল’ বিষয়ক জহুর হোসেন চৌধুরী স্মারক বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্তের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন সাবেক রাষ্ট্রদূত তারিক এ করিম। এতে ভোরের কাগজের প্রকাশক সাবের হোসেন চৌধুরীসহ গুণীজনরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান শেষে দুই দেশের দুই কূটনীতিককে সাবের হোসেন চৌধুরী সম্মান স্মারক তুলে দেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই সঞ্চালক শ্যামল দত্ত এই সময়ে এসে ‘বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক: সম্পর্কের রোল মডেল’ বিষয়ক জহুর হোসেন চৌধুরী স্মারক বক্তৃতা কেন আয়োজন হয়েছে তার ব্যাখা দিয়ে বলেন, জহুর হোসেন চৌধুরী এই দেশের একজন বরেণ্য সাংবাদিক। ১৯২২ সালে জন্ম নিয়ে ১৯৮০ সালে মৃত্যুবরণ করা জহুর হোসেন চৌধুরী একটানা সাংবাদিকতা করেছেন। তার স্মরণে ভোরের কাগজ এ পর্যন্ত ৫টি স্মারক বক্তৃতার আয়োজন করেছে। ২০১০ সাল থেকে শুরু হওয়া স্মারক বক্তৃতায় করোনাকালে ছেদ পড়ে। গতবছর থেকে এটি আবার নিয়মিত অনুষ্ঠানে পরিণত হচ্ছে। এবার ভিন্ন এক পরিস্থিতিতে দুই দেশের দুই কূটনীতিক ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্কের বিস্তারিত বলন। মূলত ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্কে নতুন মাত্রা পায় ২০০৮ সাল থেকে। গত কয়েকবছরে সমুদ্রসীমা নির্ধারণ, স্থলসীমান্ত সমাধান হয়েছে। অথচ এসব বিষয় অত্যন্ত কঠিন ছিল। কিন্তু বন্ধুত্বের কারণে কঠিন বিষয়ও সহজ হয়েছে। দুই দেশের মধ্যে এগুলোও ঐতিহাসিক ঘটনা।

প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের নির্বাচনের সময় বাংলাদেশে ভারতীয় হাইকমিশনারের দায়িত্ব পালন করে যাওয়া পঙ্কজ শরণ এবার এমন সময়ে ঢাকায় আসলেন, যখন ২০দিন পরে বাংলাদেশে আরেকটি সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তৃতার পরে সঞ্চালক শ্যামল দত্তের এমন প্রশ্নের জবাবে পঙ্কজ শরণ বলেন, প্রত্যেক দেশের জন্যই নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিটি দেশেরই নিজস্ব পদ্ধতি ও প্রতিষ্ঠান আছে। আপনার কাছে সবকিছু আছে। তারমতে, নির্বাচন একটি ইস্যু এবং এটি দেশটির জনগণের নেয়া সিদ্ধান্ত। অন্যথায়, স্বাধীনতার অর্থ বা ধারণা কি? নির্বাচনে কাকে নির্বাচিত করবে তা জনগণেরই সিদ্ধান্ত।

পঙ্কজ বলেন, তারা চান নির্বাচন প্রক্রিয়া জনগণের ইচ্ছা অনুযায়ী হয় এবং শান্তিপূর্ণভাবে হয়। তিনি বলেন, ভারতও একটি বড় গণতান্ত্রিক দেশ, কিন্তু অন্য দেশে গণতন্ত্র রপ্তানি করছে না। গত ১৫ বছরে দুই দেশ একসঙ্গে যে সাফল্য অর্জন করেছে তা তুলে ধরে পঙ্কজ শরণ বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্কসহ যেকোনো সম্পর্কের ক্ষেত্রে সবসময়ই অসমাপ্ত এজেন্ডা থাকবে। তবে অভ্যন্তরীণ রাজনীতির কাছে ঢাকা ও দিল্লির সম্পর্ক যেন জিম্মি না হয় সে বিষয়ে সতর্ক করেছেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতে সরকার পরিবর্তন হওয়ার পরে যদি সম্পর্ক পরিবর্তন হয়, তবে বুঝতে হবে ওই সম্পর্কটি অত্যন্ত ভঙ্গুর। দুই দেশের সম্পর্ক দৃঢ় করার জন্য মৌলিক কিছু উপাদান দরকার জানিয়ে তিনি বলেন, এর জন্য দরকার বিভিন্ন অংশীজন তৈরি করা। এরা মিডিয়া, ব্যবসায়ী বা শিক্ষাবিদ বা অন্য কেউ হতে পারে। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করার মতো অনেক লোক আছে দুই দেশে এবং তাদের উপেক্ষা করে সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সহজ নয় বলে জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণ এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে এবং এখানকার কর্তৃপক্ষ ঠিক করবে কীভাবে নির্বাচন হবে। আমরা চাই সবকিছু যেন নিয়মমাফিক হয় এবং এখানে যেন অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি না হয়।

বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত তারিক করিম বলেন, বাংলাদেশের কিছু হলে ভারতের ক্ষতি হবে এবং এর উল্টোটাও ঠিক। ভবিষ্যৎ নিরাপদ করার জন্য আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে। ২০০৯ সালে ভারতে রাষ্ট্রদূত হিসাবে নিয়োগপ্রাপ্ত তারিক করিম বলেন, আমরা একটি নেতিবাচক দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে ইতিবাচক সম্পর্কে এবং এরপরে এটিকে রোল মডেল হিসেবে উপস্থাপন করতে পেরেছি। দুই দেশের সম্পর্ক কেন রোল মডেল এ বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতা ছাড়াই স্থলসীমান্ত ও সুমদ্র সীমানা নির্ধারণ করেছি যা সারা পৃথিবীতে বিরল।

দুই দেশের মধ্যে সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে অন্যজনের চোখ দিয়ে বিষয়টিকে দেখার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, এটি সহজ নয়। কিন্তু এর মাধ্যমে পূর্ণ সমাধান না হলেও একটি সমঝোতা করা সম্ভব। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ৫৪টি অভিন্ন নদী রয়েছে এবং এগুলোর পূর্ণ ব্যবহারের জন্য অববাহিকাভিত্তিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, নদী সমস্যার সমাধান হলে দুই দেশের মানুষ উপকৃত হবে। আমি আশা করি আমরা যেভাবে সীমানা সমস্যা সমাধান করেছি, একইভাবে পানির সমস্যাও সমাধান করা যাবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App